ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ৩০ হাজার মানুষের পারাপার

ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ৩০ হাজার মানুষের পারাপার

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর

নাটোরের সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়নের বকতারপুর এলাকায় পানাউল্লাহ খালের উপর ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন দুপাশের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। দুই বছর আগে এখানে ভ্যান উল্টে মারা গিয়েছিল এক জেএসসি পরীক্ষার্থী। তাছাড়া বিভিন্ন সময় এখানে দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২০ থেকে ১৫ জন।

এলাকাবাসী জানান, ভাঙা সেতুটির কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হন শিক্ষার্থী, কৃষক এবং রোগীরা।

সেতুটি আংশিকভাবে ভাঙা ছিল প্রায় পাঁচ বছর ধরে। ২০১৮ সালে বন্যায় সেতুটি প্রায় পুরোপুরি ধসে পড়ে। বন্যার পর সেখানেই একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে স্থানীয় প্রশাসন। কিছুদিন পর সাঁকোটিও ভেঙে পড়ে।
এখন ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি পারাপার করতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিংড়া উপজেলার গোবিন্দনগর ডাকমন্ডপ, বারইহাটি, হামিরঘোষ, সোনাইডাঙ্গা, নাটোরের গোপালঘাট এবং খয়েরেগ্রাম, নলডাঙ্গার পাটুল, নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার বিশা ও সোমসপাড়া গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই সেতুটি দিয়ে মালামাল, খাদ্যসামগ্রী ও কৃষিপণ্য পারাপার করেন।

অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, রিকশা ও ভ্যানসহ প্রায় তিন শতাধিক যানবাহন প্রতিদিন সেতুটি পারাপার করে।

সালমা বেগম নামে এক গর্ভবতী মা বলেন, বাচ্চাদের সঙ্গে আমরাও সেতুটি পার হতে সমস্যার মুখোমুখি হই।

সেতুসংলগ্ন তেলিগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা নুরজাহান বেগম বলেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতুটি ব্যবহার করা ছাড়া আমাদের কোনও বিকল্পও নেই।

পাটুল হাপানিয়া ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মো. আক্তার উজ জামান বলেন, সেতুটির জন্য হাজার হাজার মানুষ বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে স্থানীয় প্রশাসন সেখানে নতুন করে সেতু তৈরির জন্য উদ্যোগ নিচ্ছে না।

সিংড়া উপজেলার লালোর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, সেতুর দুপাশে ডাকমন্ডপ প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডাকমন্ডপ উচ্চ বিদ্যালয়, বারইহাটি মাদ্রাসা, বারইহাটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপিন্দনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ডাঙ্গাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছে।

সিংড়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. হাসান আলী জানান, সেতুটি নির্মাণের জন্য তিনি প্রায় আড়াই কোটি টাকার প্রস্তাব প্রস্তুত করেছেন। তবে প্রস্তাবটি অনুমোদিত হতে এক বছরের মতো সময় লাগবে। এ কারণে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা অনুযায়ী সেতুটি নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। চলতি বছরেই সেতুটি নির্মাণ সম্পন্ন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর