ম্যাট্রিকে ফেল করলেই ‌বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ!

ম্যাট্রিকে ফেল করলেই ‌বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ!

অনলাইন ডেস্ক

ম্যাট্রিকে ফেল করলেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হবে। আর পাস করলে সুযোগ হাতছাড়া। শুধু বর্তমান যুগ নয়, অতীতের যে কোনো সময়ের সাথেই বিষয়টা বেশ বেমানান। তবে অবাক হওয়ার বিষয় হলেও এমনই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ভারতে।

আর আশ্চর্যের বিষয় হলো ম্যাট্রিকে ফেল করা সেই শিক্ষার্থীরা দক্ষতা আর আবিষ্কারে ছাড়িয়ে গেছে বিশ্বের অনেক নামি-দামি বিশ্ববিদ্যালয়কেও।

এবার বিস্তারিত আলোচনা করা যাক। বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা থ্রি ইডিয়টসে আমির খানের আসল নাম থাকে ফুংসুখ ওয়াংরু। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই চরিত্রটি বাস্তবেই আছে এবং লাদাখে এরকম একটা বিশ্ববিদ্যালয়ও আছে; যেখানে কোনো বই-পুস্তক পড়ানো হয় না।

সব কিছুই শেখানো হয় হাতে-কলমে। SECMOL এডুকেশন মুভমেন্টের প্রতিষ্ঠাতার নাম সোনাম ওয়াংচুক। থ্রি ইডিয়টস ছবিটি তার জীবন থেকেই বানানো হয়েছে।  


সবচেয়ে বড় মজার ব্যাপারটি হলো, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হলে অবশ্যই ম্যাট্রিকে ফেল করতে হবে। এ কারণে অনেকেই বলে থাকেন ‘University of Failures’. এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আশ্চর্য রকমের সব আবিষ্কার দেখা যায়। তারা মাটি দিয়ে এমনভাবে স্কুল বানিয়েছে বাইরে যখন মাইনাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াম তাপমাত্রা তখন ভেতরে প্লাস ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকবে।  
আগে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের অন্তর্গত ছিল লাদাখ। কিন্তু বর্তমানে উত্তরে কুনলুন পর্বতশ্রেণী ও দক্ষিণে হিমালয় দ্বারা বেষ্টিত এই অঞ্চলটি এখন ভারতের একটি কেন্দ্রশাসিত এলাকা। সেখানকার বিরান ধূ ধূ মরুভূমি অঞ্চলে গ্রীষ্মে পানি পাওয়া খুব মুশকিল। গরমে পানি পাওয়ার জন্য সাধারণ পাইপ দিয়ে ‘আইস স্টুপা’ তৈরি করেছেন সোনাম ওয়াংচুক। দেখতে বরফের টিলার মতো, যা দিয়ে সহজে গ্রিন হাউজ ইফেক্ট দূর করা যায়।  

তিন-চারবার ফেল করা ছাত্ররা কেউ আজ বিশ্বসেরা সাংবাদিক, ফিল্মমেকার, স্বনামধন্য উদ্যোক্তা। এমনকি লাদাখের শিক্ষামন্ত্রী, যিনি কিনা ম্যাট্রিকে পাঁচবার ফেল করে পরে ‘The Himalayan Institute of Alternatives’- এ ভর্তি হয়েছিলেন।  

সাধারণত আমরা আশায় থাকি কবে ছুটি হবে আর এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় সাজা হলো এক সপ্তাহর ছুটি! বিশ্ববিদ্যালয়টা একটা দেশের মতো। ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে নেতৃত্ব তৈরি করে, রেডিও স্টেশন সম্প্রচার করে, নিউজপেপার ছাপায় এমনকি নিজেদের খাবার নিজেরাই চাষ করে উৎপন্ন করে। সেগুলো বাজারে বিক্রি করে অর্থ যোগায় আবার বছর শেষে ঘুরতেও যায়।  

এর মাধ্যমে ওদের অর্থনীতি, ভূগোল, জীববিজ্ঞান শিখা হয়। শিক্ষা নিয়ে রেভুল্যুশন করে সফল হওয়া এই ইঞ্জিনিয়ারের স্বপ্ন একটি ইউনিভার্সিটি করা। সেই ভার্সিটির নাম হবে ‘Doers University’, যেখানে কাজ করা হবে আবিষ্কার হবে কোনো পড়ালেখা হবে না। সোনাম ওয়াংচুক এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছে ম্যাট্রিকে ফেলা করা শিক্ষার্থীদের কাছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর