বোলিংয়ের দাপট ব্যাটিংয়ে উধাও

সংগৃহীত ছবি

বোলিংয়ের দাপট ব্যাটিংয়ে উধাও

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

মিরপুর টেস্টের প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার প্রথম ইনিংসে টাইগারদের বোলিং দাপটে শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে গেছে মাত্র ২২২ রানে। শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের বাতাসে উড়ছিল যেন বাংলাদেশের সুখের রেণু। তবে ব্যাটিংয়ে নামতেই পাল্টে গেল হাওয়া। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় দিন শেষে সেই আনন্দে ভাটা পড়েছে।

 এদিন ৪ উইকেট খুইয়ে টাইগারদের ব্যাটে রান এসেছে মাত্র ৫৬।

উইকেটে বল ঘুরেছে প্রথম ওভার থেকেই। বাউন্সও কিছুটা অসমান। চন্দিকা হাথুরুসিংহে বাংলাদেশের কোচ থাকার সময় এ রকম উইকেটে বেছে নেওয়া হতো দ্রুত রান তোলার কৌশল।

হাথুরুসিংহের কোচিংয়ে এদিন শ্রীলঙ্কাও বেছে নেয় একই পথ। নিয়মিত উইকেট হারালেও দ্রুত রান তুলতে পারায় লঙ্কানদের রান হয়ে যায় সম্ভবত বাংলাদেশের চাওয়ার চেয়ে ২০-৩০ বেশি।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কাজও সহজ হবে না, অনুমিতই ছিল। তবে কাজটা কঠিন করে তুলেছে ব্যাটসম্যানরা নিজেরাই।

ইনিংসের দ্বিতীয় বলে দারুণ ড্রাইভে বাউন্ডারির পর তামিম ইকবাল পরের বলে লাকমলকে দিলেন ফিরতি ক্যাচ। গত টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির নায়ক মুমিনুল হকের বিদায় আরও হতাশাজনকভাবে। সিঙ্গেল নিতে গিয়ে আলসেমি করে হলেন রান আউট।

মুশফিকুর রহিম একবার বাঁচলেন সহজতম ক্যাচের সুযোগ দিয়ে, আরেকবার রিভিউয়ে। তবু টিকতে পারলেন না। লাকমলের ভেতরে ঢোকা বল ছেড়ে দিয়ে হলেন বোল্ড। ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে তখন বিপর্যস্ত বাংলাদেশ। ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস চেষ্টা করেছিলেন জুটি গড়ে প্রতিরোধের। কিন্তু দিনের শেষ ভাগে আউট ইমরুলও।  

অথচ দিনের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য ছিল আনন্দদায়ী। আব্দুর রাজ্জকের হাত ধরে প্রথম উইকেট মিলেছিল দ্রুতই। টেস্ট ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার, ম্যাচের প্রথম ইনিংসে দুই পাশেই স্পিন দিয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। মিরাজ না পারলেও রাজ্জাক দলকে উইকেট এনে দেন নিজের তৃতীয় ওভারেই। ৪৭ রানের জুটি ভাঙে তাইজুলের দারুণ এক ডেলিভারিতে। আগের টেস্টে ১৭৩ রান করা ধনঞ্জয়া এবার ২ চার ও ১ ছক্কায় করেছেন ১৯। টার্ন ও বাউন্সে ক্যাচ দিয়েছেন স্লিপে। মেন্ডিস আর গুনাথিলাকার ব্যাটে শ্রীলঙ্কা গুছিয়ে উঠছিল আবারও। এই সময়ই রাজ্জাকের দ্বিতীয় ছোবল। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে পরপর দুই বলেই উইকেট। গুনাথিলাকা ফিরলেন বাজে শটে। অসাধারণ এক ডেলিভারিতে দিনেশ চান্দিমাল আউট প্রথম বলেই।

লাঞ্চের আগেই বাংলাদেশ করে ফেলে ৩১ ওভার। শ্রীলঙ্কার রান তখন ৪ উইকেটে ১০৫।

লাঞ্চের পর আবারও রাজ্জাকের সৌজন্যে বাংলাদেশের উচ্ছ্বাস। দারুণ খেলতে থাকা কুসল মেন্ডিস বোল্ড আরেকটি অসাধারণ ডেলিভারিতে। দলের ১০৯ রানে মেন্ডিসের একারই রান তখন ১০ চার ও ১ ছক্কায় ৬৮। পরের ওভারে নিরোশান ডিকভেলাকেও বোল্ড করে দেন রাজ্জাক। এরপরও শ্রীলঙ্কার যথারীতি চেষ্টা ছিল দ্রুত রান বাড়ানোর। তবে ৫৬ রানে রোশেনের বিদায়েই শেষ পর্যন্ত শেষ হয়েছে লঙ্কান ইনিংস। রান ওঠে ২২২।

চার বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে রাজ্জাক নিয়েছেন ক্যারিয়ার সেরা চার উইকেট। সমান উইকেট তাইজুলেরও। তবে দলের সেরা বোলার ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। দারণ বোলিংয়ে ভুগিয়েছেন লঙ্কানদের। রান আটকেছেন, পাশাপাশি নিয়েছেন দুটি উইকেটও।

বাংলাদেশের বিপক্ষে আগের সর্বনিম্ন ২৯৩ থেকে অনেক কমে এবার ২২২ রানে আটকে গেছে শ্রীলঙ্কা।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৬৫.৩ ওভারে ২২২ (মেন্ডিস ৬৮, করুনারত্নে ৩, ধনঞ্জয়া ১৯, গুনাথিলাকা ১৩, চান্দিমাল ০, রোশেন ৫৬, ডিকভেলা ১, পেরেরা ৩১, দনঞ্জয়া ২০, হেরাথ ২, লাকমল ৪*; মিরাজ ০/৫৪, রাজ্জাক ৪/৬৩, তাইজুল ৪/৮৩, মুস্তাফিজ ২/১৭)।

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ২২ ওভারে ৫৬/৪ (তামিম ৪, ইমরুল ১৯, মুমিনুল ০, মুশফিক ১, লিটন ২৪*, মিরাজ ৫*; লাকমল ২/১৫, পেরেরা ১/২৫, দনঞ্জয়া ০/৪, হেরাথ ০/১১)।

সম্পর্কিত খবর