৬ বছর পর আ.লীগের সম্মেলন, সংঘর্ষের আশঙ্কা

৬ বছর পর আ.লীগের সম্মেলন, সংঘর্ষের আশঙ্কা

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

রাত পোহালেই কাল রোববার চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। ৬ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনকে ঘিরে একদিকে যেমন আনন্দ উল্লাস, অপরদিকে কোন্দল নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কাও। আর সংঘর্ষের আশঙ্কায় সম্মেলন স্থান শিবগঞ্জ উপজেলা সদরে না করে পার্শ্ববর্তী নয়লাভাঙ্গা ইউনিয়নের রানীহাটিতে করা হয়েছে। আর এই সম্মেলন নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় শিবগঞ্জ থানা-পুলিশ বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।

জানা গেছে, ৬ বছর আগে সম্মেলনের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবার পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে ব্যর্থ হয় আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব। আর এ ব্যর্থতা নিয়েই অবশেষে কেন্দ্রের নির্দেশে কোন্দলে জর্জরিত শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামীকাল ২ ফেব্রুয়ারি রোববার।

এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে তৃণমূলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হলেও কোন্দলের কারষে সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

এরই মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের স্থান নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বির্তকের।

একটি পক্ষ এ সম্মেলন বানচালের পাঁয়তারা করছে বলেও আওয়ামী লীগের একটি অংশ সংশয় প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমেও চলছে বিতর্ক। জেলার ৩ টি সংসদীয় আসনের একটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ- ১ (শিবগঞ্জ)। এ শিবগঞ্জ উপজেলায় ১৫ টি ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত যেখানে গত সংসদ নির্বাচনে ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী
লীগের জয় হয়। সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সাংসদ ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল ও উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলামের অনুসারীদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি হয়। পরে শো-ডাউন, হামলা পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে কোন্দল আরও তীব্র আকার ধারণ করে।

উভয়ের কোন্দলের জেরে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দরের বাণিজ্যে নেমে আসে স্থবিরতা। আসন্ন এ ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে
সভাপতি পদে বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল সমর্থিত সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর ভাই ও আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক, চেয়ারম্যান পক্ষের হয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা শাহদাৎ হোসেন খুররম এবং একই পক্ষের হয়ে দুর্লভপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবু আহম্মেদ নাজমুল কবীর মুক্তা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাংসদের অনুগত বর্তমান শিবগঞ্জ উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আতাউর রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা তৌহিদুল ইসলাম টিয়া, শিবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও
বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আসাদুল আলম আসাদ ছাড়াও চেয়ারম্যানের অনুগত শিবগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি 

আতিকুল ইসলাম টুটুল খানও লড়বেন। তবে একটি সূত্র জনায়, শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে চেয়ারম্যান পক্ষের খররম-টুটুল এবং সংসদ সদস্য পক্ষের নাজমুল-আতাউর প্যানেল।

এ ব্যাপারে ডা. শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল বলেন, শিবগঞ্জ ষ্টেডিয়ামের সামনের কলেজে পরীক্ষার জন্য সেখানে সম্মেলন আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। দলের সকলের মতামতের ভিত্তিতেই রাণীহাটিতে সম্মেলন স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও দলকে বিভক্তি করার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি আরও বলেন, উপজেলার সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে নিয়ে দলীয় কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এদিকে, রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ২৩ তারিখের কাউন্সিল সুষ্ঠভাবে করার জন্য থানা ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তারা প্রতিটি
ওয়ার্ড কমিটি সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান কাউন্সিলর হবেন, এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ ১০ জনকে কাউন্সিলর করার জন্য বলা হয়েছে। আর সেখানে ত্যাগী প্রবীণ নেতারা স্থান পাবেন। আর এ বিষয়টি
দেখবেন স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, থানা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ।  

সম্মেলনের নিরাপত্তার বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শামসুল আলম শাহ জানান, আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিকী সম্মেলন নিয়ে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)