এ কেমন বর্বরতা!

এ কেমন বর্বরতা!

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর প্রতিনিধি

অভাবে পড়ে গত বর্ষা মৌসুমে দাদনের ১৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন ইটভাটার শ্রমিক রাম বসাক (৩৫)। ৪ মাস ইট ভাটায় শ্রম বিক্রি করে সেই টাকা পরিশোধও করেন তিনি। কিন্তু শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম ইটভাটা মালিকের কাছ থেকে নেওয়া দাদনের টাকা পরিশোধ না করায় তিনদিন ধরে শিকলে বেঁধে নির্যাতন করা হয় শ্রমিক রাম বসাককে।

পরে অভিযোগ পেয়ে ইটভাটার ম্যানেজার স্বপন ও কর্মচারী আবু সামাকে আটক করেছে পুলিশ।

ঘটনাটি ঘটেছে নাটোরের গুরুদাসপুরের শাহাপুরের মেসার্স এএসবি ব্রিক্স নামের একটি ইটভাটায়। নির্যাতনের শিকার রাম বসাক পার্শ্ববর্তী রাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ছুটু বসাকের ছেলে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহারুল ইসলাম ও ভুক্তভোগীর বাবা জানান, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার
কৃষ্ণপুর গ্রামের শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম গুরুদাসপুরের শাহাপুরের মেসার্স এএসবি ব্রিক্স নামের ইটভাটার মালিক আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম মোল্লার কাছ থেকে দাদনের ১৫ লাখ টাকা নেন। গত বর্ষা মৌসুমে সেখান থেকে দাদনের ১৫ হাজার টাকা নেন রাম বসাক।

গত ৪ মাস শ্রম বিক্রি করে দাদনের সেই টাকা পরিশোধও করেন রাম।

অন্যদিকে শ্রমিক সর্দার সিরাজুল ইসলাম ১৫ লাখ টাকার মধ্যে শ্রম বিক্রির মাধ্যমে ৯ লাখ টাকা পরিশোধ করে পালিয়ে যান।

এদিকে সিরাজুলকে না পেয়ে মালিক আব্দুর রহিম মোল্লার ছেলে আলমগীর মোল্লা ও তার ভাতিজা ছাবলু ওই ইটভাটার একটি কক্ষে রাম বসাককে গত ৩ দিন ধরে শিকলে বেঁধে আটকে রেখে নির্যাতন করে বলে অভিযোগ করা হয়।

অন্যদিকে বাকী টাকা আদায়ে সিরাজুলকে আটক করতেই রামকে আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন ইট ভাটার মালিক রহিম মোল্লা।

পরে শনিবার সকাল ১০ টার দিকে ভুক্তভোগীর বাবা ছুটু বসাক গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ করলে দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রামকে উদ্ধার করে এবং ইটভাটার ম্যানেজার স্বপন ও কর্মচারী আবু সামাকে আটক করে পুলিশ।

ভুক্তভোগীর বাবা ছুটু বসাক জানান, সেই টাকা পরিশোধ হলেও ছেলেকে তিন দিন ধরে শিকলে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয়েছে।

গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাহারুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রাম বসাককে উদ্ধার করা
হয়েছে। এ ঘটনায় ভাটার ম্যানেজা ও এক কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর