জ্বর নিয়ে আনসার সদস্যের মৃত্যু, বিসিসিতে উদ্বেগ

জ্বর নিয়ে আনসার সদস্যের মৃত্যু, বিসিসিতে উদ্বেগ

অনলাইন ডেস্ক

সর্দি, কাশি আর জ্বরের উপসর্গ নিয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) এক নিরাপত্তা কর্মীর মৃত্যুর পর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় সংস্থার বাকী আনসার সদস্যদেরও স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে গত রোববার বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে একটি চিঠি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, সর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ছুটি নিয়ে রংপুরের বাড়িতে যাবার পর গত ১১ই মার্চ ওই আনসার সদস্যের মৃত্যু হয়।

এদিকে তার মৃত্যুর পরদিন ১২ই মার্চ আরেক আনসার সদস্য একই উপসর্গের কারণে ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যান।

চিঠিটি ঢাকার জেলা প্রশাসক; সিরাজগঞ্জ ও রংপুরের সিভিল সার্জন এবং আইইডিসিআর'র পরিচালকে পাঠানো হয় বলে উল্লেখ আছে।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়, আইসিটি টাওয়ারের ওই কাউন্সিল কার্যালয়ে প্রায়ই যাতায়াত করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় ছেলে সজীব ওয়াজেদ এই পদে দায়িত্ব পালন করেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবং সচিবও তাদের দাপ্তরিক কার্যক্রম এখান থেকেই পরিচালনা করেন।

এছাড়া বিভিন্ন সংস্থা ও প্রকল্পের প্রায় ৩০টি অফিস এই টাওয়ারে অবস্থিত। যার কারণে প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার মানুষ সেখানে যাতায়াত করে।

যেহেতু করোনা ভাইরাস বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারণ করেছে, সেহেতু বিসিসি-তে কর্মরত আনসার সদস্যদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয় ওই চিঠিতে।

এ ব্যাপারে জুনাইদ আহমেদ বলেছেন, আনসার সদস্যের মৃত্যু এবং তার উপসর্গের কথা জানতে পেরে তিনি নিজেই এ চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দেন।

ওই আনসার সদস্যের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেহেতু তার সঙ্গীরা বলেছেন, তার সর্দি-কাশি ছিল। করোনা ভাইরাস যেহেতু চলছে তাই তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এটা লুকানোর কিছু নয়, ভয়ের কিছু নয়, এটাকে প্রতিরোধ ও মোকাবেলা করতে প্রস্তুত হওয়ার জন্যই সতর্কতার অংশ হিসেবে এই নির্দেশ দিয়েছিলাম।

এছাড়া আইসিটি বিভাগের যাদের মধ্যে তাপমাত্রাসহ অন্যান্য উপসর্গ রয়েছে তাদের সবাইকেও পরীক্ষা করানোর বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিসিসি ভবনে প্রবেশের আগে হাত ধোয়া এবং তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য থার্মাল স্ক্যানার বসানোর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী।

উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া তিনজনের কথা জানায় আইইডিসিআর। আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী ছিলেন। তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালি থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছিলেন। তাঁদের কাছে থেকে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রথম আক্রান্ত হওয়া এই তিনজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন বলে জানায় আইইডিসিআর।

পরে ১৪ মার্চ রাতে আইইডিসিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে আরও দুজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই দুজনের মধ্যে একজন ইতালি থেকে এবং অন্যজন জার্মানি থেকে সম্প্রতি দেশে এসেছেন। এরপর গতকাল সোমবার দেশে তিনজনের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানানো হয়। আজ মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও দুইজন।

গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে করোনার প্রাদুর্ভাব হয়। পরে তা চীনসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ৭৭৬।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর