আমরা কোথায় যাব? কার কাছে যাব!

আমরা কোথায় যাব? কার কাছে যাব!

মেহের আফরোজ শাওন

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, 

আমার সালাম নিবেন। আপনি কেমন আছেন এই প্রশ্ন আমি করব না। কারণ আমরা জানি আপনি ভালো নেই। সারা বিশ্বজুড়ে কোভিড- ১৯ বা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের যে ভয়াবহ তাণ্ডব তা আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতেও প্রবেশ করেছে।

দেশের মানুষ এক অজানা শক্তির আক্রমণের আতঙ্কে দিন পার করছে। প্রিয় দেশবাসীর এমন বিভীষিকাময় দিনযাপনে আপনার মন কতখানি বিচলিত তা আমরা কিছুটা অনুভব করতে পারি।
 
আপনি নিশ্চয় সব বিষয়েই অবগত তারপরও বলছি মিরপুর টোলারবাগ এলাকায় যে দুজন বয়োজ্যেষ্ঠ ভদ্রলোক করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের কোনো সদস্যই কিন্তু সম্প্রতি বিদেশ ভ্রমণ করেননি! তাদের একজন স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন। আর দ্বিতীয়জন সেই মসজিদ কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন।
ধারণা করা যাচ্ছে যে ওই মসজিদে করোনা আক্রান্ত কারো উপস্থিতির কারণে অন্যদের শরীরে তা ছড়িয়েছে! মিরপুর টোলারবাগে মৃত প্রথম মানুষটিকে সেবা দানকারী ৩০/৩২ বছর বয়েসী ডাক্তারটিও এখন করোনা পজিটিভ!

তার মানে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়ে গেছে! এখন আর ফিরে আসা প্রবাসীদের কেবল করোনা ভাইরাসের বাহক ভাবলে চলবে না। আমাদের আশেপাশে চলাফেরা করা সাধারণ যে কেউই হতে পারে ভয়ংকর এই ভাইরাসের সম্ভাব্য বাহক!

আগামী এক-দুই সপ্তাহে অবস্থা কি রকম ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে তা অন্য অনেকের চেয়ে নিশ্চয় আপনি ভালো বুঝতে পারেন। পরিস্থিতি হাতের নাগালের বাইরে যাবার আগেই দেশের সর্বস্তরের জনগণকে আপনি গৃহবন্দী থাকবার কড়া নির্দেশ দিতে পারেন কি? ৩ থেকে ৪ সপ্তাহ গৃহবন্দী থাকবার আদেশ দিলে প্রথম ২ সপ্তাহের মধ্যেই করোনা সংক্রমিত মানুষগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তৃতীয় সপ্তাহ থেকে শুধুমাত্র সংক্রমিত রোগীদের আলাদা করে ফেলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জানি ৪ সপ্তাহ অফিস, কলকারখানা বন্ধ করে গৃহবন্দী থাকলে দেশের অর্থনীতির চাকা কিছুটা থেমে যাবে। নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর ৩ বেলার খাবার যোগানোই অসম্ভব হয়ে পড়বে। এ-ও জানি যে মানুষ বাঁচলে তবেই না দেশ বাঁচবে, বাঁচবে অর্থনীতি। দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী মহলের সহযোগীতায় নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর একমাসের খাবার যোগান দেওয়া কঠিন হলেও অসম্ভব কিছু না।  

দেশের এই ক্রান্তিকালে একমাত্র আপনিই পারেন আমাদের ভরসা দিতে। আপনি শক্তভাবে হাল ধরলে মনুষ্যসৃষ্ট কোনো অপশক্তিই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে পরাজিত করতে পারবে না।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর