করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বে যা হচ্ছে

করোনা ভাইরাস নিয়ে বিশ্বে যা হচ্ছে

অনলাইন ডেস্ক

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ সামাল দিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কারফিউ জারির মতো সিদ্ধান্তে গেছে। কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর। শঙ্কা দেখা দিয়েছে জাপানে আসন্ন অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে। সৌদি আরবে জারি করা হয়েছে কারফিউ।

আর যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। এছাড়াও কোয়ারেন্টিনে গেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর। সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপে 

রয়েছে সিঙ্গাপুর।

সৌদিতে কারফিউ:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি সামাল দিতে সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষ তিন সপ্তাহের জন্য রাত্রিকালীন কারফিউ ঘোষণা করেছে।

কারফিউ ঘোষণা করেছে কুয়েত ও বাহরাইনও।

যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের সুপ্রিম লিডার।

টেলিভিশনে বক্তৃতায় আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি বলেছেন যে আমেরিকা ইরানের "সবচেয়ে বড় শত্রু" এবং এই মহামারির পেছনে আমেরিকাকে দায়ী করছেন তিনি।

ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

"আমি জানি না যে এই অভিযোগ কতটা বাস্তব, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিকে কারা সরল মনে বিশ্বাস করবে যে আপনাদের থেকে ওষুধ নেয়া নিরাপদ? হয়তো আপনাদের ওষুধের মাধ্যমেই ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। "যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইরানের সুপ্রিম লিডার।

টেলিভিশনে বক্তৃতায় আয়াতুল্লাহ আলী খোমেনি বলেছেন যে আমেরিকা ইরানের "সবচেয়ে বড় শত্রু" এবং এই মহামারির পেছনে আমেরিকাকে দায়ী করছেন তিনি।

ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

"আমি জানি না যে এই অভিযোগ কতটা বাস্তব, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিকে কারা সরল মনে বিশ্বাস করবে যে তোমাদের থেকে ওষুধ নেয়া নিরাপদ? হয়তো আপনাদের ওষুধের মাধ্যমেই ভাইরাসটি আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে। "

কোনও প্রমাণ না দিয়েই তিনি অভিযোগ করেন যে ভাইরাসটি "এই ভাইরাসটি ইরানীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। এবং এজন্য তারা বিভিন্ন উপায়ে ইরানীদের জিনগত তথ্য সংগ্রহ করেছে। "

ইরানের ওপর পরমাণু নিষেধাজ্ঞা না তুলে সহায়তা দেয়ার প্রস্তাবকে আমেরিকা ভণ্ডামি বলে অভিযোগ তুলেছেন অন্যান্য ইরানী কর্মকর্তারা।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে ইরান বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আক্রান্ত রেকর্ড করা হয়েছে এই ইরানে। যা ২১,৬০০ জনেরও বেশি।

সরকারি হিসেবে মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৮৫ জনে।

তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে ইরানে সংক্রমণ ও মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

কোয়ারেন্টিনে গেলেন জার্মানির চ্যান্সেলর
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ এবং দু'জনের বেশি লোকের সমাবেশকে নিষিদ্ধ করেছে জার্মানি। পুরো পরিস্থিতি দেখভালের দায়িত্বে কাজ করছে পুলিশ।

এর আওতায় বিউটি পার্লার, সেলন, এবং ম্যাসেজ স্টুডিওগুলি বন্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অতি জরুরি নয় এমন পণ্যের দোকান ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ।

রেস্তোরাঁগুলোকে কেবল টেকওয়ে বা খাবার নিয়ে যাওয়া পরিষেবার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ রেস্তোরাঁয় আর বসে খাওয়ার সুযোগ নেই।

দেশটির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, "সংক্রমণের হার কমিয়ে আনার 'সবচেয়ে কার্যকর উপায়' হল আমাদের 'নিজস্ব আচরণ'"।

নাগরিকদের নিজের পরিবারের বাইরে বাকি সবার সাথে কমপক্ষে ৫ ফুট দূরত্বে থাকার আহ্বান জানান তিনি।

এদিকে মিসেস মার্কেলের অফিস জানিয়ে যে তিনি নিজেকে কোয়ারেন্টিন করে রাখছেন।

এর কারণ ৬৫ বছর বয়সী মার্কেল ভাইরাস আক্রান্ত একজন ডাক্তারের সংস্পর্শে এসেছিলেন।

সামনের কয়েকদিন নিয়মিত তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং তিনি বাড়ি থেকে কাজ করবেন বলে তার মুখপাত্র জানিয়েছেন।

অস্ট্রেলিয়ায় নিষেধাজ্ঞা
অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় খুব প্রয়োজনীয় নয় এমন পরিষেবাগুলো বন্ধ করে দিচ্ছে।

সোমবার মধ্যরাত থেকে দেশটি পানশালা, ক্লাব, জিমনেশিয়াম, সিনেমা হল ও উপাসনালয়গুলো বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছে।

তবে রেস্তোরাঁ ও ক্যাফেগুলোকে কেবল টেকওয়ে সেবা দেয়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ ক্রেতারা কেবল খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারবেন। বসে খাওয়ার কোন সুযোগ নেই।

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন জাতীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে এসব নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন।

নতুন বিধিনিষেধের কারণে এখন অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

তবে সুপারমার্কেট, পেট্রোল স্টেশন, ফার্মেসী এবং হোম ডেলিভারি পরিষেবা আগের মতোই চলবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে তিনি স্কুলগুলি খোলা রাখতে চান তবে শিশুদের বাবা-মা চাইলে সন্তানদের বাড়িতে রাখতে পারবেন।

সাম্প্রতিক দিনগুলোয় অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে বাড়তে ১৩১৫ জনে পৌঁছায়।

কোভিড -১৯ থেকে অস্ট্রেলিয়া জুড়ে এখনও পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

অস্ট্রেলিয়া দক্ষিণ, পশ্চিম ও উত্তরের সীমান্ত মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেয়া হবে।

নতুন নিয়মের অধীনে, বিদেশ আগতদের ১৪ দিনের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।

এদিকে, তাসমানিয়া, ইতিমধ্যে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

নিউজিল্যান্ডে যেসব সেবা বন্ধ
নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে যে এই সপ্তাহে অতি প্রয়োজনীয় নয় এমন পরিষেবাগুলো তারা বন্ধ করতে শুরু করবে।

এর আওতায় দেশটির পানশালা, রেস্তোরাঁ, ক্যাফেসহ স্বল্প প্রয়োজনীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান - বন্ধ করা হবে। স্কুলগুলি পুরোপুরি বন্ধ থাকবে।

গণপরিবহন শুধুমাত্র তাদেরকে ব্যবহার করতে দেয়া হবে যারা সাধারণ মানুষকে প্রয়োজনীয় সেবা দিচ্ছেন।

দেশের সব মানুষকে বাড়ির ভেতরে থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

কমপক্ষে চার সপ্তাহের জন্যে এই নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার কথা জানানো হয়েছে।

সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপে সিঙ্গাপুর
এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলির মতো যারা সংক্রমণের প্রাথমিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে সিঙ্গাপুর অন্যতম। তবে দেশটি এখন সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় অতিক্রম করছে।

কারণ বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ বিভিন্ন দেশ থেকে সিঙ্গাপুরে আসতে শুরু করেছে।

গত কয়েক দিন ধরে বিদেশ থেকে আসা স্থানীয় বাসিন্দাদের সংখ্যা স্থানীয় সংক্রমণের সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে শুরু করেছে। স্থানীয় সংক্রমণের সংখ্যা গত রোববার পর্যন্ত ছিল ২০৮ জন, এবং বিদেশ থেকে ফেরা স্থানীয় বাসিন্দাদের মাধ্যমে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৭ জনে।

এ অবস্থায় দেশটির সরকার এখন পর্যটক এবং এমনকি কাজের পাসধারী কর্মীদেরও দেশে ফিরে আসতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

টোকিও অলিম্পিক স্থগিত হবে?
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, অলিম্পিক গেমসের "সম্পূর্ণ ফর্ম" ধরে রাখা সম্ভব না হলে এবারের আসর স্থগিত করা হতে পারে।

তিনি বলেছেন, "গেমস স্থগিতের করা ছাড়া হয়তো তার দেশের আর কোন উপায় নেই", তবে এই আসর বাতিল করার কথা তারা ভাবছেন না।

গত সপ্তাহের শুরুতে তিনি যা বলেছিলেন তার সঙ্গে তার এবারের মন্তব্যের মধ্যে এটি নাটকীয় পরিবর্তন দেখা গেছে।

তখন তিনি আত্মবিশ্বাসের সাথে ঘোষণা দিয়েছিলেন যে জাপান "সংক্রমণের বিস্তারকে কাটিয়ে উঠবে এবং সমস্যা ছাড়াই অলিম্পিকের আয়োজন করবে"।

এই জুলাইয়ে জাপানের রাজধানী টোকিওতে অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

কানাডা অলিম্পিকে অংশ নেবে না
কানাডা ঘোষণা করেছে যে ২০২০ সালের অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক গেমসে তারা তাদের কোন দল পাঠাবে না।

করোনাভাইরাস ঝুঁকির কারণে তারা নিজেদের ক্রীড়াবিদ না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডিয়ান অলিম্পিক কমিটি, আইওসির প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা টোকিও গেমস এক বছরের জন্য স্থগিত করে।

কানাডা বলছে যে, "বিশ্ব একটি স্বাস্থ্য সংকটের মধ্যে রয়েছে, যা খেলাধুলার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ"।

যুক্তরাজ্যে ১৫ লাখ চিঠি
করোনাভাইরাসের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে ইংল্যান্ডের ১৫ লাখ মানুষকে চিঠি পাঠিয়ে বলা হচ্ছে তারা যেন বাড়িতে থাকেন।

তাদেরকে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে বা মোবাইলে ম্যাসেজ পাঠানো হয়েছে সেখানে তাদের দৃঢ়ভাবে ১২ সপ্তাহের জন্য বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, প্রত্যেক নাগরিককে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভেবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী সামাজিক দূরত্ব নির্দেশিকা অনুসরণ করতে বলেছেন।

এদিকে যুক্তরাজ্যের ধর্মীয় জমায়েত বিধিনিষেধ আরও করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮১ জনে। আক্রান্তের সংখ্যা ৫,৬৮৩ জনে পৌঁছেছে।

নিউ ইয়র্কে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা
পুরো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে নিউ ইয়র্ক। সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

মূলত চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহের যে অভাব রয়েছে সেটা আরও প্রকট হবে বলে নগরীর মেয়র আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

রোববার বিল দি ব্লাজিও বলেন, "আমরা ভয়াবহ সংকটপূর্ণ পরিস্থিতি থেকে মাত্র ১০ দিন দূরে রয়েছি। যদি আমরা পর্যাপ্ত ভেন্টিলেটর না পাই তবে আরও মানুষ মারা যাবে। "

নিউইয়র্ক রাজ্যটি যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। এবং দেশটিতে আক্রান্তের প্রায় অর্ধেকের বাস এই রাজ্যটিতে।

যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩১,০৫৭ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ৩৯০ জন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, দেশব্যাপী চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠানো হচ্ছে। তবে এই সরবরাহ যথেষ্ট নয় বলে সমালোচনা করেছেন মি. ব্লাজিও।

ফিলিস্তিনে সংক্রমণ:
বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবর দিচ্ছে, গাজা ভূখণ্ডে করোনাভাইরাসের প্রথম দুজন রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এই ঘটনার পর পশ্চিম তীরে দু সপ্তাহের জন্য লকডাউন শুরু করেছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।

সিরিয়ায় সংক্রমণ:
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়াতে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে, বলছে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিটির ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

কলম্বিয়ার একটি কারাগারে করোনা আতঙ্কে ২৩ জনের মৃত্যু
করোনাভাইরাস নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে বোগোটা শহরে দেশটির সবচেয়ে বড় কারাগারে সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কলম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী মার্গারিটা ক্যাবেলো বলেছেন, লা মডেলো কারাগারে দাঙ্গার ঘটনায় ৮৩ জন আহত হয়েছেন।

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের সময়ে কারাগারে বন্দিদের উপচে পড়া ভিড় এবং দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার বিরুদ্ধে রোববার সারাদেশের কারাগারে থাকা বন্দিরা প্রতিবাদ করেন।

বিচারমন্ত্রী বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন।

মিসেস ক্যাবেলো জানান, ৩২ জন বন্দী এবং সাত প্রহরী হাসপাতালে রয়েছেন। তাদের মধ্যে দু'জন প্রহরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

তবে কারাগারের ভেতরে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের দাবি অস্বীকার করে তিনি বলেন: " এখানে পয়ঃনিস্কাশনের কোন সমস্যা নেই। পরিকল্পনারা করে এই দাঙ্গা বাধানো হয়েছে। "

"এখানে কারও মধ্যে সংক্রমণ নেই, কোন বন্দী বা হেফাজতকারী বা প্রশাসনিক কর্মচারীর করোনাভাইরাস নেই। "

কলোম্বিয়ার বিচার বিভাগের পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশটির ১৩২টি কারাগারে ৮১,০০০ বন্দি ধারণক্ষমতা থাকলেও সেখানে থাকেন এক লাখ একুশ হাজারেরও বেশি বন্দী।

এখনও অবধি কলম্বিয়ায় করোনাভাইরাসের ২৩১ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং দু'জনের মৃত্যু হয়েছে।

আর্জেন্টিনায় জাতীয় লকডাউন ঘোষণা
মার্চ মাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত খাবার ও ওষুধ কেনা ছাড়া দেশের সব নাগরিককে বাড়িতে থাকার ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে আর্জেন্টিনা।

লাতিন আমেরিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ইউরোপের অনুপাতে পৌঁছায়নি।

সেখানকার সরকার কঠোর অবস্থানে যাওয়ার কারণে এমনটা সম্ভব হয়েছে বলে বিবিসির ক্যাটি ওয়াটসন বলেছেন।

ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সবশেষ পরিস্থিতি
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ইউরোপীয় দেশ ইতালিতে রোববার নতুন করে ৬৫১ জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশিত হয়েছে। এতে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫,৪৭৬ জনে।

নতুন করে মৃত্যুর সংখ্যা শনিবারের চাইতে কম হলেও এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ

দেশটিতে করোনার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেশটির মানুষ প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে নিজেদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা বাড়লেও, শতাংশের হিসেবে তা অনেকটাই নেমে এসেছে।

যেমন গত দুই সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩৫৭৮ জন থেকে বেড়ে ৫৯১৩৮ জন হয়েছে। এই বৃদ্ধির হার প্রাদুর্ভাব শুরুর সময়ের তুলনায় সর্বনিম্ন।

এর আগে রাষ্ট্রপতি সের্জিও মাত্তারেলা বলেছেন যে, তিনি আশা করেন ইতালি থেকে বিশ্বের অন্যান্য দেশ শিক্ষা নিতে পারে।

এদিকে, স্পেনে একদিনে ৩৯৪ জনের করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে, যা দেশটিতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ চিত্র।

এতে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭২০ জনে।

দেশটির সরকার জরুরী অবস্থা ১ই এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে দিতে চাইছেন।

তবে এই প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে অনুমোদিত না হলে বাস্তবায়ন করা যাবে না। গত ১৪ই মার্চ থেকে স্পেনের মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছিল।

রোববার দেশটির সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা আগামী ৩০ দিনের জন্য বিমান ও সমুদ্র বন্দরে বেশিরভাগ বিদেশি নাগরিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ করবে।

এদিকে ফ্রান্সে নতুন করে ১১২ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭৪ জনে।

নেদারল্যান্ডস এবং গ্রিসেও মৃত্যুর সংখ্যা ও মামলার সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা গেছে।

আফ্রিকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়েছে
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এই ছুটির দিনে ১০০০ জন ছাড়িয়ে গেছে।

মহাদেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ঘোষণা করেছে যে, আফ্রিকায় বর্তমানে ১১৯৮ জনের কোভিড -১৯ এ আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

দুবাই থেকে নিজ দেশ উগান্ডায় ফিরে আসা এক যাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গতকাল করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। দেশটিতে এটাই প্রথম কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর।

এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইয়োয়েরি মুসেভেনি রোববার মধ্যরাত থেকে সমস্ত ফ্লাইট নিষিদ্ধসহ জনসমাগম নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দিয়েছিলেন।

প্রতিবেশী দেশ রুয়ান্ডায়, সরকার ঘোষণা করেছে যে তারা তাদের লকডাউনের মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়িয়ে দিতে পারে। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার থেকে তারা এই লকডাউন আরোপ করেছিল।

রুয়ান্ডায় এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ ১৭ জনের আক্রান্তের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে, এটি পূর্ব আফ্রিকায় সর্বোচ্চ।

ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোতে কোভিড -১৯ এ প্রথম কারও মৃত্যুর ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে।

পেশায় চিকিৎসক ওই ব্যক্তি ফ্রান্স থেকে ফিরেছিলেন। পরে তার মধ্যে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে।

তবে দেশটিতে ভাইরাস সংক্রমণের পরে ১০৮ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন বলে ঘোষণা এসেছে।

রোববার মরক্কোর লোকজনকে ঘরে থাকতে নির্দেশ দেওয়ার জন্য রাস্তায় সামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে দেশটির সরকার। কাজ করছে পুলিশও।

শুক্রবার থেকে দেশটিতে জনস্বাস্থ্যের জরুরি অবস্থা কার্যকর আছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর