লকডাউনে সংসার চালানোর দুশ্চিন্তায় ২ শ্রমিকের আত্মহত্যা!

লকডাউনে সংসার চালানোর দুশ্চিন্তায় ২ শ্রমিকের আত্মহত্যা!

অনলাইন ডেস্ক

করোনার বিস্তার রোধে গত মঙ্গলবার থেকে লকডাউন ঘোষণা হয়েছে ভারতে। লকডাউনের পরই কলকাতায় দুটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, লকডাউনের সময় সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন ওই দুই ব্যক্তি। আর এ কারণে তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

আত্মঘাতী ওই দুই যুবক ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেডের (বিএসএনএল) চুক্তিভিত্তিক কর্মী।

বিএসএনএলের ঠিকা বা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সংগঠন কনট্রাক্টরস ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন অব বিএসএনএলের এক নেতা বলেন, ‘অনটন এবং এই লকডাউনের সময় অনিশ্চয়তার জেরেই আত্মহত্যা করেছেন ওই দুই কর্মী। ’

আরও জানা যায়, মঙ্গলবার নৈহাটির গরিফায় বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেন সুজয় ঘোষ (৪৪)। তিনি সন্তোষপুর টেলিফোন এক্সচেঞ্জে কাজ করতেন।

সুজয়ের আত্মীয় অপূর্ব ঘোষ বিএসএনএলের ঠিকাকর্মী। তিনি বলেন, ‘গত ১৩ মাস ধরে সুজয়, আমি– সবাই অন্যদের মতোই রোজ অফিসে যাচ্ছি। পার্থক্য একটাই– অন্যরা মাসের শেষে বেতন পান, আমরা পাই না।

অপূর্ব জানান, সুজয়ের দুই সন্তান, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। স্ত্রী ছাড়াও রয়েছেন বৃদ্ধা মা। পরিবারের একমাত্র উপাজর্নকারী ছিলেন তিনি। একদিকে বেতন পাচ্ছিলেন না। তার ওপর লকডাউন ঘোষণার পর সংসার চলবে কীভাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তার দাবি, এসব কারণেই সুজয় আত্মহত্যা করেছেন।

এ ছাড়া গত বারাসত হৃদয়পুরের বাসিন্দা অনুকূল রায় বুধবার আত্মহত্যা করেছেন (৪২)। অনুকূলও প্রায় এক বছর ধরে বেতন পাচ্ছেন না।

বিএসএনএলের চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের সংগঠনের যৌথ ফোরামের নেতা অমিতাভ ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রায় ৫ হাজার মানুষ বেতন পাচ্ছেন না। তারা কিন্তু প্রায় ২০ বছর ধরে কাজ করছেন। ’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। এই মার্চে একটা সুরাহা হওয়ার আশা ছিল। কিন্তু তার মধ্যেই করোনা আতঙ্ক এবং লকডাউন। তার জেরে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা।

‘যারা দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না, তারা বিভিন্ন পথে সামান্য রোজগার করে পরিবার নিয়ে কোনোমতে সংসার চালাচ্ছিলেন। কিন্তু তার মধ্যেই এই লকডাউন সেই আয়ের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। ’ আর সে কারণেই তারা আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি বিএসএনএল কর্মীদের।

তবে এই দুজনের আত্মহত্যার কারণ কী তা এখনও জানাতে পারেনি কলকাতার পুলিশ।

সূত্র: আনন্দবাজার

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল