সর্দি-জ্বরে ব্যবসায়ীর মৃত্যু, ১৫ বাড়ি লকডাউন

সর্দি-জ্বরে ব্যবসায়ীর মৃত্যু, ১৫ বাড়ি লকডাউন

অনলাইন ডেস্ক

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় সর্দি, জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্টে মাসুদ রানা (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর আশপাশের অন্তত ১৫ বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।

শুক্রবার রাতে উপজেলার ময়দানহাট্টা ইউনিয়নের দাড়িদহ গ্রামের ভাড়া বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। স্ত্রী মাজেদা বেগম হাসপাতালে ফোন করে ও প্রতিবেশিদের ডেকে সহযোগিতা পাননি বলে জানা গেছে।

ফলে বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার পর স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে মৃতের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘরে মরদেহ রেখে স্ত্রী ও ৮ বছরের শিশু কন্যা বসে আছেন।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে লোকজন এসে নমুনা সংগ্রহ করেছেন।

আশপাশে ১৫টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। বিধিমোতাবেক মরদেহ দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

মাসুদ রানা বগুড়ার কাহালু উপজেলার মুরইল দক্ষিণপাড়ার কোরবান আলীর ছেলে। তিনি গাজীপুরের কাশিম বাজারে ক্ষুদ্র ব্যবসা করতেন। তার স্ত্রী মাজেদা বেগম বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএস শিবগঞ্জের ময়দানহাট্টা ইউনিয়নের দাড়িদহ শাখার অফিস সহকারি। তিনি একমাত্র মেয়ে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মাসুমা তাবাসসুম মুনকে (৮) নিয়ে দাড়িদহ গ্রামের জিল্লুর রহমানের বাড়িতে ভাড়া থাকেন বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

মাজেদা বেগম জানান, স্বামী মাসুদ রানা গত ২৪ মার্চ মঙ্গলবার সুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফেরেন। পরদিন থেকে সর্দি, জ্বর ও কাশি শুরু হয়। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে ওষুধ এনে তাকে খাওয়ানো হয়েছে।

২৭ মার্চ শুক্রবার রাতে তার শ্বাসকষ্ট বেশি হয়। এ সময় তিনি প্রতিবেশীদের ডাকলে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে কেউ এগিয়ে আসেনি। টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ ও রফাতউল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল এবং বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্সের জন্য বারবার ফোন করে সাড়া পাননি। সেখান থেকে তাকে না বলা হয়েছে। এ অবস্থায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাসুদ বিনা চিকিৎসায় মারা যান। এরপর থেকে প্রতিবেশীরা তাকে এড়িয়ে চলছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ফোন করে তাকে জানানো হয়েছে, মৃত মাসুদের নাক থেকে সোয়াব সংগ্রহ করা হবে।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টার পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কীভাবে ও কোথায় মরদেহ দাফন হবে তা তিনি জানেন না। মা-মেয়ে ঘরে মরদেহ রেখে অপেক্ষা করছেন।

বগুড়ার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোস্তাফিজুর রহমান তুহিন জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি ঢাকায় আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরার সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। মৃত মাসুদ রানা সর্দি, জ্বর, কাশি, উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ছিলেন। সর্দি থাকায় জানানো হয়েছে, মৃত ব্যক্তি করোনা ভাইরাসে মারা যাননি। তার নাক থেকে সোয়াব সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠাতে বলা হয়। এছাড়া পিপিই পরিহিতদের মাধ্যমে মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

শনিবার বিকাল ৪টার দিকে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির জানান, কিছুক্ষণ আগে মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মৃত মাসুদের বাড়ি কাহালু উপজেলায় হলেও মরদেহ সেখানে নেয়া সম্ভব নয়। তাই পিপিই পরিহিতরা দাড়িদহ গ্রামের গোরস্থানে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এছাড়া ঢাকা থেকে রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত আশপাশের অন্তত ১৫ বাড়ি লকডাউন থাকবে

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর