করোনার প্রচার চালিয়ে কলেজছাত্রের লাশ দাফনে বাধা

করোনার প্রচার চালিয়ে কলেজছাত্রের লাশ দাফনে বাধা

নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে নাটোর লালপুরের বুলবুল আহমেদ ( ২২) এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়। তিনি নাটোরের লালপুর উপজেলার নবীনগর গ্রামের আসলাম আলীর ছেলে। মঙ্গলবার বিকেলে শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই তরুণের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ ছিল না জানিয়ে চিকিৎসক বলেছেন, তিনি অ্যাজমার রোগী ছিলেন।

এদিকে লালপুরে লাশ দাফনে এলাকাবাসী আপত্তি তোলেন। অবশ্য পরে তাঁরা শর্ত দেন, স্বজনেরা
নিজ দায়িত্বে দাফন করলে আপত্তি নেই। সে মোতাবেক, আজ বুধবার ভোরে লাশ দাফন করা হয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা সংক্রান্ত জরুরি চিকিৎসক দলের আহ্বায়ক
আজিজুল হক বলেন, ওই তরুণের জ্বর, সর্দি বা কাশির মতো করোনা ভাইরাসের কোনো ছিল না।

তবে
তিনি অ্যাজমার রোগী ছিলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে তিনি ভর্তি হয়েছিলেন। রাত ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই তরুণের কারোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ ছিল না উলে­খ করে আজিজুল হক বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তাঁরা চিকিৎসার জন্য বেশি সময়ও পাওয়া যায়নি।

তবে এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুলবুল আহমেদ পাবনার ঈশ্বরদী সরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। কয়েক দিনের জন্য তিনি ঢাকায় অবস্থান করেন। এরপর ৪ মার্চ বাড়িতে আসেন। এরপরই তাঁর জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। বাড়িতে থেকে তিনি স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করছিলেন। মঙ্গলবার শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাঁকে বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে  চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল থেকে নমুনা সংগ্রহ শেষ হলেই লাশ বাড়িতে নেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু নমুনা সংগ্রহের আগেই স্বজনেরা লাশ নিয়ে রাতে গ্রামে চলে আসেন। তাঁরা লাশ দাফন করতে চাইলে এলাকাবাসী আপত্তি তোলেন। পরে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা লাশের জানাজা ও দাফনে অংশ নেবেন না। তবে স্বজনেরা নিজ দায়িত্বে দাফন করলে তাতে তাঁদের আপত্তি নেই। সে মোতাবেক স্বজনেরা নিজেরাই আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে লাশ দাফন করেন।

লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) আব্দুর রাজ্জাক বলেন,
ওই রোগীকে তাঁদের হাসপাতালে আনা হয়নি। তাঁকে সরাসরি রাজশাহীতে নেওয়া হয়েছিল।

মৃত্যু সনদ দেখেছেন উলে­খ করে তিনি বলেন, তাতে যে সমস্যায় মৃত্যুর কথা উলে­খ আছে, তা করোনা ভাইরাসের কয়েকটি লক্ষণের মধ্যে একটা। বিষয়টি রাতেই সিভিল সার্জনকে জানানো হয়েছে।

নাটোরের সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান বলেন, তাঁরা বিষয়টির খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রয়োজন হলে ওই তরুণের বাড়ির অন্যদের কোয়ারেন্টিনে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর