রংপুরে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দি, বাড়ছে করোনা ঝুঁকি

রংপুরে ধারণক্ষমতার দ্বিগুণ বন্দি, বাড়ছে করোনা ঝুঁকি

রেজাউল করিম মানিক,রংপুর

দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী নভেল করোনা ভাইরাস। দেশে প্রতিদিনই এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। গতকাল পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা ৪২৪-তে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে

মারা গেছেন ২৭ জন।

মরণঘাতী এ ভাইরাস থেকে বাঁচার অন্যতম একটি উপায় জনসমাগম এড়িয়ে
আলাদা থাকা।

কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টিই মানা সম্ভব হচ্ছে না রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে। কেননা বর্তমানে ধারণক্ষমতার প্রায় দ্বিগুণ বন্দি রয়েছেন সেখানে। এ অবস্থায় যেকোনো সময় কারাগারের বন্দিদের মধ্যে নভেল করোনা ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

যদিও কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, আগাম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় এখন পর্যন্ত কারাগারে কোনো
করোনা রোগী শনাক্ত করা যায়নি। তবে প্রতিদিন নতুন বন্দি কারাগারে আসায় নভেল করোনা ভাইরাস
ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন তারাও।

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কারাগারের আসামির (নারী ও পুরুষ) ধারণক্ষমতা
৮৩১ জন। গত বৃহস্পতিবার সেখানে রাখা হয়েছিল ১ হাজার ৪৭৫ জনকে। এর মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৩৯৫ জন্য ও নারী ৮০ জন ছিলেন। একই সঙ্গে প্রায় ছয়টি শিশু তাদের মায়ের (আসামি) সঙ্গে ছিল।

২০১৬ সালে এ কারাগারের ধারণক্ষমতা ছিল ১ হাজার ২৭৯ জন। কিন্তু কয়েকটি ভবন পরিত্যক্ত হয়ে যাওয়ায় তা কমে ৮৩১-তে দাঁড়িয়েছে। দিন দিন আসামির সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও বাড়ানো হয়নি ধারণক্ষমতা।

এদিকে নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার মানবিক দিক বিবেচনায় শর্তশাপেক্ষে মুক্ত করে
দেওয়ার ঘোষণায় বন্দির স্বজনদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ দেখা দিয়েছে। এ খবরে অনেকেই কারাগারে
খোঁজখবর রাখা শুরু করেছেন।

রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু নূর মো. রেজা বলেন, সরকারি ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে কতজন বন্দি ও
কবে তারা ছাড়া পাবেন এ ধরনের কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে কারা অধিদপ্তর থেকে আমাদের
কাছে বন্দিদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ৪ মার্চ দেড় শতাধিক বন্দির নাম পাঠানো হয়েছে। এখন কতজন ছাড়া পাবেন, সে বিষয়ে আইন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না। কেননা তাতে
বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। বন্দিদের স্বজনরা এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কারাগারের পক্ষ থেকে বন্দিদের ডেকে বলা হয়েছে, আমরা আপনাদের তালিকা পাঠিয়েছি। কে কে ছাড়া পাবেন সিদ্ধান্ত হলে জানতে পারবেন।

তিনি আরো বলেন, বন্দি মুক্তির বিষয়ে বেশকিছু শর্ত যেমন হত্যা, মাদক ও ধর্ষণ মামলার আসামি বিশেষ বিবেচনার আওতায় আসবে না।

অতিরিক্ত বন্দি থাকার বিষয়ে জেলার আবু নূর মো. রেজা বলেন, কারাগারের বন্দিদের নিয়ে আমরা চিন্তিত
নই। আগাম প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ায় বর্তমানে কারাগারের বন্দিরা করোনামুক্ত। কিন্তু নভেল করোনা ভাইরাস পরীক্ষা না করে প্রতিদিন নতুন নতুন আসামি কারাগারে আসায় সংক্রমণের বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর