চিকিৎসক–স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সম্মানী দেওয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী

চিকিৎসক–স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সম্মানী দেওয়া হবে: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

যেসব সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যক্ষভাবে করোনা ভাইরাস রোগীদের নিয়ে কাজ করছেন, তাঁদের বিশেষ সম্মানী দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, গোটা দেশবাসী চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশে আছে। তাই করোনার ক্রান্তিকালে মনোবল হারাবেন না।  

বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে আজ সোমবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা সম্পদের সীমাবদ্ধতা এবং মৃত্যুঝুঁকি উপেক্ষা করে একেবারে সামনের কাতারে থেকে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের পেশাটাই এ রকম চ্যালেঞ্জের। এই ক্রান্তিকালে মনোবল হারাবেন না। গোটা দেশবাসী আপনাদের পাশে রয়েছে।

ভাষণের শুরুতে সরকারপ্রধান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা দেশ ও বিদেশে থাকা সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

দেশবাসীর পক্ষ থেকে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, যেসব সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী প্রত্যক্ষভাবে করোনাভাইরাস রোগীদের নিয়ে কাজ করছেন, ইতিমধ্যেই তাঁদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের বিশেষ সম্মানী দেওয়া হবে। এ জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য বিমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি সদস্য এবং প্রত্যক্ষভাবে নিয়োজিত প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য কর্মচারীর জন্য বীমার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দায়িত্ব পালনকালে যদি কেউ আক্রান্ত হন, তাহলে পদমর্যদা অনুযায়ী প্রত্যেকের জন্য থাকছে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবীমা এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ ৫ গুণ বৃদ্ধি পাবে। স্বাস্থ্যবীমা ও জীবনবীমা বাবদ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৫০ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুরক্ষা সরঞ্জামের কোনো ঘাটতি নেই। নিজেকে সুরক্ষিত রেখে স্বাস্থ্যকর্মীরা সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাবেন, এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা। একই সঙ্গে সাধারণ রোগীরা যাতে কোনোভাবেই চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত না হন, সেদিকে নজর রাখতে হবে।

করোনা ভাইরাসের কারণে পয়লা বৈশাখে বাইরের কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে গভীর আঁধার আমাদের বিশ্বকে গ্রাস করেছে, সে আঁধার ভেদ করে বেরিয়ে আসতে হবে নতুন দিনের সূর্যালোকে। কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায় তাই বলতে চাই: ‘মেঘ দেখ কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে, হারা শশীর হারা হাসি, অন্ধকারেই ফিরে আসে। ’

পয়লা বৈশাখের আনন্দময় আয়োজনের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এদিন রাজধানীতে রমনা পার্ক, চারুকলা চত্বর, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ নগরীর নানা স্থান মানুষের ভিড়ে মুখর থাকে। গ্রামীণ মেলা, হালখাতাসহ নানা অনুষ্ঠানে গোটা দেশ মেতে ওঠে। এবার সবাইকে অনুরোধ করব, কাঁচা আম, জাম, পেয়ারা, তরমুজসহ নানা মৌসুমি ফল সংগ্রহ করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে বসেই নববর্ষের আনন্দ উপভোগ করুন। আপনারা বিনা কারণে ঘরের বাইরে যাবেন না। অযথা কোথাও ভিড় করবেন না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। ’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভয় মানুষের প্রতিরোধক্ষমতাকে দুর্বল করে দেয়। কেউ আতঙ্ক ছড়াবেন না। সবাইকে সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। সরকার সব সময় আপনার পাশে আছে। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এ সংকটকালে এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর