বিশ্বের কিছু দেশ লকডাউন তুলে নিতে চাইছে!

বিশ্বের কিছু দেশ লকডাউন তুলে নিতে চাইছে!

শওগাত আলী সাগর

শহরের অলিতে গলিতে ছুটে বেড়ানো অন্টারিওর প্রিমিয়ার ডাগ ফোর্ড যখন বললেন, there’s a “glimmer of hope.” খানিকটা চমকেই উঠেছিলাম। গত কয়েকদিনে তার চেহারার দিকে তাকানোই যাচ্ছিলো না। সেই ডাগ ফোর্ডই কী না “glimmer of hope.” এর স্বপ্ন দেখাচ্ছেন! কিসের ভিত্তিতে তিনি এমন আশাবাদী হয়ে উঠলেন!

ডাগ ফোর্ডের আশার হাতছানি নিয়ে ভাবতে ভাবতেই বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার ইমেইলটায় চোখ রাখি। নিবন্ধিত সংবাদকর্মী হিসেবে সংস্থার সব ধরনের বিবৃতি, ব্রিফিং এর কপি ইমেইলে চলে আসে।

 

আশ্চর্য! তার আলোচনায়ও লকডাউন তুলে নেয়ার প্রসঙ্গ। তাহলে কি করোনার দাপট কমে আসছে! পৃথিবী কি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে আবার! নাকি এসবই আশার হাতছানি, ডাগ ফোর্ডের “glimmer of hope.”

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মাহপরিচালকের ব্রিফিংটায় চোখ রাখি। হ্যাঁ, তার উদ্বেগটা স্পষ্ট। বিশ্বের কোনো কোনো দেশ লকডাউন তুলে নিতে চাইছে, স্কুল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে চাইছে।

আবার অনেক দেশেই এখন লকডাউন আরোপের সময় মাত্র। তাহলে পরিস্থিতিটা কি হবে? একদিকের কিছু কিছু দেশ লকডাউন তুলে সবকিছু স্বাভাবিক করে দেবে, আর কিছু দেশ লকডাউন আরোপ করে সব কিছু বন্ধ করে রাখবে!

বাস্তবটা আসলে তাই। কিছু দেশ শিগগিরই লকডাউন মুক্ত হতে যাচ্ছে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা অবশ্য তাদের জন্য একটি গাইডলাইন করেছে। মঙ্গলবারের নিয়মিত ব্রিফিং এ সেটি প্রকাশ করা হবে। সংস্থাটি বলে দেবে- কি পরিস্থিতিতে লকডাউন তুলে নেয়া যাবে, লকডাউন তুলে নেয়ার পর কি করতে হবে। আজই তো অবার ভ্যাকসিন তৈরির গবেষনায় নিয়োজিত থাকা বিজ্ঞানীরাও একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে।

তা হলে ডাগফোর্ড যে সকালে বলছিলেন “glimmer of hope.” সেটিই কি সত্য! সন্ধ্যায় সিবিসি, টরন্টো স্টার জানাচ্ছে, নম্বরগুলো নিম্নমুখী হচ্ছে, আমরা যে কার্ভকে ‘ফ্লাটেন করার বলি, সেটি এখন নাগালের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। ইনটেনসিভ কেয়ারে করোনা ভাইরাসের রোগীর সংখ্যাটাও কয়েক দিন ধরে স্থিতিশীল আছে। টরন্টো স্টারের রিপোর্ট বারবার পড়ি। কানাডার অন্যান্য প্রভিন্সের অবস্থা অতোটা খারাপ না। অন্টারিও আর কুইবেককে নিয়ে যতো উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্টাররিওতে কার্ভটা যে ‘ফ্লাটেন’ হচ্ছে সেটা নাকি এখন খালি চোখেই দেখা যাচ্ছে! glimmer of hopeই তো বটে!

আমরা যে একটা আলোর রেখা দেখতে শুরু করেছি সে ব্যাপারে আমি আর কোনো সংশয় রাখি না। সিবিসি, টরন্টো স্টারে বিশেষজ্ঞদের কথাগুলো মনের ভেতর নিয়ে আওড়াতে থাকি, আলোর পুরো রশ্মিটার নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার জন্য খানিকটা ধৈর্য ধরতে হবে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা নতুন যে গাইড লাইনটি প্রকাশ করবে সেটি নিশ্চয়ই সংশ্লিষ্ট দেশগুলো অনুসরণ করবে। আমরা যারা কার্ভটাকে ‘ফ্লাটেন’ করার কাছাকাছি এসে দাঁড়িয়েছি, তারাও নিশ্চয়ই আর কটা দিন ধৈর্যের পরীক্ষাই দেব। কয়েকটা দিনই তো মাত্র। নিজেরা আলোর কাছাকাছি দাঁড়িয়ে নতুন করে লকডাউনে যাওয়া, লকডাউনে থাকা দেশগুলোর জন্য অপেক্ষায় থাকব।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত) 

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল

সম্পর্কিত খবর