চাল সহ গ্রেপ্তার চেয়ারম্যানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দল থেকে অব্যাহতি

পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ ফিরোজ কবীর

চাল সহ গ্রেপ্তার চেয়ারম্যানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দল থেকে অব্যাহতি

অনলাইন ডেস্ক

ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিংয়ের (ভিজিএফ) ২২৯ বস্তা সরকারি চালসহ গ্রেপ্তার পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা কোরবান আলীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন পাবনা-২ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বাতেন।

এ অভিযোগে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নির্দেশে আব্দুল বাতেনকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টিকে ষড়যন্ত্র বলছেন তিনি।

জানা গেছে, মঙ্গলবার কোরবান আলী সরদারের পক্ষে জামিনের জন্যে নিজ নেতাকর্মীদের নিয়ে পাবনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসেন আহমেদ ফিরোজ কবীর এমপি।

এ সময় তিনি বলেন, ঢালারচর একটি সন্ত্রাস ও চরমপন্থী অধ্যুষিত এলাকা। নিরপত্তার স্বার্থে চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার চালের বস্তা ইউনিয়ন পরিষদে না রেখে নিজ গুদামে মজুদ করেন। বরাবরই তিনি এখান থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। তার আত্মসাতের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।

এটা সবাই জানে। কোনো একটি মহল তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।

তবে, র‌্যাব-১২ পাবনা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার উদ্ধারকৃত চাল কালোবাজারে বিক্রির চেষ্টা করছিলেন বলে জানানো হয়েছে।


র‌্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কমান্ডার আমিনুল কবীর তরফদার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার র‌্যাব জানতে পারে বেড়া উপজেলার ঢালারচর ইউপি চেয়ারম্যান কোরবান আলী সরদার ভিজিএফ’র চাল কালোবাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে না রেখে গভীর রাতে রূপপুর ইউনিয়নের বাঁধেরহাট বাজারে নিজ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের গুদাম ঘরে মজুদ করেন। সোমবার রাত ১০টার দিকে র‌্যাব হাতেনাতে এই চাল উদ্ধার করে এবং চেয়ারম্যানকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তাকে আটক করে। রাতে আমিনপুর থানায় মামলা দায়েরের পর মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ত্রাণের চাল কোনোভাবেই ব্যক্তিগত গুদামে রাখার সুযোগ নেই। কোরবান আলী সরদার ইউনিয়নের সীমানার বাইরে বেআইনিভাবে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী কার্যালয় স্থাপন করে কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। সেখানে ত্রাণের চাল মজুদ করার বিষয়েও তিনি প্রশাসনকে অবহিত করেননি।

এদিকে, ত্রাণের চাল চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ায় সভাপতি কোরবান আলী সরদারকে আজীবনের জন্য আওয়ামী লীগের সকল পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ ছাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় কেন্দ্রের নির্দেশে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বাতেনকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।

পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও পাবনা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল রহিম লাল এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি বলেন, করোনা দুর্যোগের এই সময়ে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কোনোমতেই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ত্রাণের চাল আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর