নেশার টাকা যোগাতে ডাকাতি, চিনে ফেলায় গাজিপুরে চার খুন

নেশার টাকা যোগাতে ডাকাতি, চিনে ফেলায় গাজিপুরে চার খুন

অনলাইন ডেস্ক

গাজীপুরের শ্রীপুরে চাঞ্চল্যকর চার খুনের সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচ জনকে আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এমন তথ্য জানায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) দিনগত রাত ১টা থেকে বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকাল ৮টা পর্যন্ত গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন-মো. কাজিম উদ্দিন (৫০), মো. হানিফ (৩২), মো. বশির (২৬), মো. হেলাল (৩০) ও মো. এলাহি মিয়া (৩৫)।

এর আগে গত ২৬ এপ্রিল এ ঘটনায় পারভেজ (১৭) নামে কিশোরকে গ্রেপ্তার করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের ( পিবিআই) সদস্যরা।

পারভেজ র‌্যাবের হাতে আটক কাজিম উদ্দীনের ছেলে। ঘটনার সময় কাজলের বড় মেয়েকে বাবা ও ছেলে মিলে ধর্ষণ করেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

এ সময় তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিমের বাড়ি থেকে লুটকৃত মালামাল, আসামিদের পরিধেয় রক্তমাখা বস্ত্র, নগদ ৩০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।  

বুধবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন জানিয়ে সারওয়ার বিন কাশেম বলেন, এরা সবাই মাদকসেবী। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তারা সবাই জুয়াড়ি ও ভিকটিমের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় নিয়মিত জুয়া, মাদকসেবন ও আড্ডা দিতো। এছাড়া ভিকটিমদের তারা নানাভাবে হয়রানি করতো। কাজিমের ছেলে পারভেজ ধর্ষণসহ হত্যা মামলার আসামি।

কয়েকদিন আগে আটকরা জানতে পারেন, কাজল মালয়েশিয়া থেকে হুন্ডির মাধ্যমে প্রায় ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন। এমন একটি ধারণা থেকে ঘটনার ৫ থেকে ৭ দিন আগে কাজিম ও হানিফ একত্রিত হয়ে কাজলের বাড়িতে ডাকাতির পরিকল্পনা করেন। পরে বশির, হেলাল, এলাহী ও অন্যান্যদের ডেকে নিয়ে  পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেন।

সে অনুযায়ী গত ২৩ এপ্রিল রাতে প্রথমে পারভেজ ভেন্টিলেটর দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে। এছাড়া হানিফ মাদারগাছ এবং পাইপ বেয়ে ছাদে উঠে সিঁড়ির ঢাকনা খুলে বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর অন্যদের প্রবেশের জন্য বাড়ির পেছনের ছোট গেট খুলে দেওয়া হয়। কাজিম, হেলাল, বশির, এলাহী এবং আরও কয়েকজন পেছনের গেট দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে বাড়ির প্রতিটি রুমে লুটপাট ও মা-দুই মেয়েকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা জানান, ফাতেমা ও তার মেয়েরা তাদের কয়েকজনকে চিনে ফেলায় সবাইকে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডে আসামিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ও গলাকেটে ভিকটিমদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। কোনো প্রকার স্বাক্ষী যেন না থাকে সেজন্য প্রতিবন্ধী শিশু ফাদিলকেও হত্যা করা হয়।

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল