কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা নিষিদ্ধ

কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা নিষিদ্ধ

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলধারা ও বাংলাদেশের প্রধান মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্র কাপ্তাই হ্রদে মাছধরা ও পোনামাছ নিধন বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই  হ্রদে সব ধরনের মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। এর আগে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র ব্যবস্থাপক লে. কর্ণেল মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ দেশের কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের একটি অন্যতম স্থান।

এই হ্রদে প্রতি বছর প্রাকৃতিক প্রজনন করা মাছের মধ্যে শতকরা ৩১ ভাগ কাতলা, ১২ ভাগ রুই, শতকরা ৭ ভাগ মৃগেল ও ৫১ ভাগ কালিবাউশ। যা দেশের সামগ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই চলতি বছর বন্ধ মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে ৩৫ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে। তার মধ্যে মে মাসের শুরুতে ১৫ মেট্রিক টন এবং সেপ্টেম্বর মাসে বাকি ২০ মেট্রিক টন মাছের পোনা কাপ্তাই হ্রদে অবমুক্ত করা হবে।

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক এ এক এম মামুনুর রশিদ জানান, রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে মাছের সুষ্ঠু ও প্রাকৃতিক প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি এবং উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাছধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। ১ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদ এলাকায় সকল প্রকার মৎস্য আহরণ, সংরক্ষণ বাজারজাতকরণ, শুকানো ও পরিবহণ সম্পন্ন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কেউ যদি এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়নও বিপণন কেন্দ্রের সকল কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, রাঙামাটি কতোয়ালী থানার কর্মকর্তা। এছাড়া মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ের মধ্যে সকল বরফকল বন্ধ থাকবে।

নির্ধারিত অভায়শ্রম রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের বাংলো ঘাট, রাজবন বিহার ঘাট, লংগদু উপজেলা ইউএনও অফিস ঘাট এবং নানিয়ারচর ছয় কুড়ি বিল সব সময়ের জন্য মৎস আহরণ আগের মতোই বন্ধ থাকবে। এছাড়া কাপ্তাই হ্রদের উপর নির্ভরশীল জেলে পরিবারদের ৩ মাসের জন্য খাদ্য শষ্য প্রদানের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর