‘মার্কিনীদের বিতাড়িত করা ছাড়া পথ খোলা নেই’

‘মার্কিনীদের বিতাড়িত করা ছাড়া পথ খোলা নেই’

অনলাইন ডেস্ক

আমেরিকানরা যেখানেই যাবে সেখানেই তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে বলে মনে করছেন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলিরেজা তাংসিরি।

তিনি বলেন, মার্কিনীরা পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা সৃষ্টি এবং যুদ্ধের বিস্তার ঘটাচ্ছে এবং সে কারণে এ অঞ্চল থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করা ছাড়ার আর কোনো পথ খোলা নেই।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাত্র কয়েক মাস আগেও বলেছিলেন, আমেরিকার কাছে পারস্য উপসাগরের আর কোনো গুরুত্ব নেই। তার এ ধরনের বক্তব্য প্রথম থেকেই নানা সন্দেহ ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছিল।

কিন্তু এর কিছুদিন পরই মার্কিন পররাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও একাধিকবার পশ্চিম এশিয়া সফরে এসে এ অঞ্চলে মার্কিন স্বার্থ রক্ষায় তাদের সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তুলে ধরেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছর জুলাইয়ে এনবিসি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাতকারে সৌদি আরবের নিরাপত্তা দেয়ার বিনিময়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়াকে এ অঞ্চলে তাদের সামরিক উপস্থিতির অন্যতম কারণ হিসেব উল্লেখ করে বলেছিলেন, আরব দেশগুলোকে নিরাপত্তা দিয়ে অতীতে ওয়াশিংটন কোনো অর্থ গ্রহণ করত না কিন্তু এখন থেকে তা হবে না এবং সেইসঙ্গে সৌদি আরবকে আমেরিকার কাছ থকে অস্ত্র কিনতে হবে।

পশ্চিম এশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক লাতিফি আল-আবিদি এক নিবন্ধে এ অঞ্চলে মার্কিন সামরিক উপস্থিতির উদ্দেশ্য নিয়ে লিখেছেন, ‘ইরানভীতি সৃষ্টি করে আমেরিকা এ অঞ্চলে তার স্বার্থ হাসিল করছে। তারা ইরানকে বড় হুমকি হিসেবে তুলে ধরে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাছে এ পর্যন্ত কোটি কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র বিক্রি করেছে।

উত্তেজনা সৃষ্টি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অস্ত্র বিক্রির পাশাপাশি দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে আমেরিকা। ট্রাম্পের বিতর্কিত ‘ডিল অব দ্যা সেঞ্চুরি’ পরিকল্পনার উদ্দেশ্য এটাই’।

আমেরিকা সম্প্রতি পারস্য  উপসাগর, হরমুজ প্রণালী ও ওমান সাগরে  তাদের জাহাজ চলাচলের নিরাপত্তার অজুহাতে এ অঞ্চলে নৌজোট গঠনের পদক্ষেপ নিয়েছে। একইসঙ্গে নিজেদের নৌ উপস্থিতিও বাড়িয়েছে আমেরিকা। সম্প্রতি তারা এমন কিছু আচরণ করেছে যা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইরান বহুবার এ অঞ্চলে উত্তেজনা সৃষ্টি ও আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন লঙ্ঘনের জন্য আমেরিকাকে সতর্ক করে দিয়েছে। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সম্প্রতি এক বিবৃতিতে এ অঞ্চলে যেকোনো উত্তেজনা সৃষ্টির চেষ্টার পরিণতির ব্যাপারে আমেরিকাকে সতর্ক করে দিয়েছেন। আইআরজিসি’র প্রধান মেজর জেনারেল হোসেন সালামিও পারস্য উপসাগরে ইরানের কয়েকটি দ্বীপ সফর করে ওই অঞ্চলে নিজেদের সামরিক প্রস্তুতির কথা উল্লেখ করে বলেছেন, আমেরিকাকে আমরা এটা জানিয়ে দিতে চাই যে, জাতীয় স্বার্থ রক্ষা ও সমুদ্রে নিরাপত্তার ব্যাপারে আমরা কাউকে ছাড় দেব না এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদেরকে উপযুক্ত জবাব দেয়া হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ অঞ্চলে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজের তৎপরতা উস্কানিমূলক এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দায় তারা এড়াতে পারবে না। আইআরজিসি'র নৌবাহিনীর প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আলিরেজা তাংসিরি তার বক্তব্যে এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর