পদ্মা সেতুতে বসছে ২৯তম স্প্যান
বাকি মাত্র ১২টি

পদ্মা সেতুতে বসছে ২৯তম স্প্যান

অনলাইন ডেস্ক

পদ্মা সেতুর ২৯তম স্প্যান (৪-এ) পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। আজ সেমাবার সখাল পৌনে ১১টার সময় দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের সহায়তায় স্প্যানটি মাওয়া প্রান্তের ১৯ ও ২০ নম্বর পিলালের ওপর বসানো হয়। এতে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর ৪৩৫০ মিটার বা ৪.৩৫ কিলোমিটার। আর মত্র ১২টি স্প্যান বসানো হলেই পুরোপুরি দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতু।

আগামী আগস্টের মধ্যে সবক'টি স্প্যান বসানো হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করে পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, করোনা আর ঝোড়ো আবহাওয়ার মধ্যেও থেমে নেই পদ্মা সেতুর কাজ। এই রোদ, এই ঝড়-বৃষ্টি, এরই মধ্যে এগিয়ে চলছে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ। আজ ২৯তম স্প্যানটিও সফলভাবে বসানো হয়েছে।  

রোববার সকাল ৮টার দিকে স্প্যানটিকে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়ার কাছে কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেনে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ১৯ ও ২০ নম্বর পিলারের নিকট।

আজ সকাল থেকে স্প্যানটিকে পিলারের ওপর বসানোর কাজ শুরু হয়। তবে অ্যাঙ্করিংয়ে কিছু সমস্যা হওয়ায় স্প্যানটি বসাতে একটু সময় লাগে।

এদিকে সংশোধিত সিডিউল অনুযায়ী আগামী নবেম্বরের মধ্যে সব স্প্যান খুঁটিতে বসে যাওয়ার কথা আছে। তবে দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা মনে করছেন নির্ধারিত সময়ের আগেই আগস্টের মধ্যে খুঁটির ওপর সব স্প্যান বসে যাবে। দ্বিতল সেতুর ওপরে থাকবে সড়কপথ আর নিচে থাকবে রেলপথ। যা এখন ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে।

মোট ২৯টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। ৪১টি স্প্যান তার মধ্যে মাওয়া এসেছে ৩৯টি। যার মধ্যে ২৯টি স্থাপন করা হয়েছে এবং ১০টি মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ওয়েল্ডিং, অ্যাসেম্বলি ও পেইন্টিং এর কাজ চলছে। বাকি ২টি স্প্যান যা মিলে ২৩০টি নোড/কর্ড অংশ, এরই মধ্যে ১৯৩টি চীন হতে মোংলা বন্দরে পৌঁছেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মাওয়া পৌঁছে যাবে আশা করা যায়। অবশিষ্ট সর্বশেষ ৩৭টি নোড/কর্ড অংশ চীনে তৈরিশেষে শিনহোয়াংডাও বন্দরে লোডিং হচ্ছে এবং তা কাল ৫ মে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেবে এবং জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে মাওয়ায় পৌঁছার কথা রয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের জানান, করোনার কারণে পুরো প্রকল্পটিই আইসোলেটেট রাখা হয়েছে। তাই এখানকার দেশি-বিদেশি কর্মীরা অনেকটাই নিরাপদ। তাই এখানে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের কাউকেই এখানে এখন প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভেতরে করোনার স্বাস্থ্যবিধি সবই মেনে চলা হচ্ছে।

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সেতুটি দ্বিতল হবে, যার ওপর দিয়ে সড়কপথ ও নিচের অংশে থাকবে রেলপথ। সেতুর এক খুঁটি থেকে আরেক খুঁটির দূরত্ব প্রায় ১৫০ মিটার। একেকটি খুঁটি ৫০ হাজার টন লোড নিতে সক্ষম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূলসেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের সিনো হাইড্রো করপোরেশন।