আইসিসিবি'র হাসপাতাল চালাতে রোববার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবে এইচইডি
করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা

আইসিসিবি'র হাসপাতাল চালাতে রোববার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেবে এইচইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা (কভিড-১৯) আক্রান্তের চিকিৎসায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) নির্মিত দেশের বৃহত্তম হাসপাতালটি চালু করতে আগামী রোববার (১০ মে) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে চায় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর (এইচইডি)। লকডাউনের কারণে বিদেশ থেকে ওয়াশিং প্লান্ট আনতে না পারায় তাদের এ বাড়তি সময় লাগছে বলে আজ মঙ্গলবার জানিয়েছেন অধিদফতরের প্রকৌশলীরা। যদিও মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া তারিখ অনুযায়ী গতকালই (৪ মে) উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল হাসপাতালটি।

উল্লেখ্য, কভিড-১৯ বিপর্যয় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং সরকারের যত দিন ব্যবহারের প্রয়োজন শেষ না হবে তত দিন বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আইসিসিবিকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে।

গত মাসেই বসুন্ধরার কাছ থেকে আইসিসিবি'র সকল স্থাপনা বুঝে নিয়ে ১৫ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপ দিতে ১২ এপ্রিল কাজ শুরু করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান মোল্লা আজ সাংবাদিকদের বলেন, রোগীর বিছানাপত্রসহ প্রায় সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের কাছ থেকে আমরা সব ধরণের সহযোগিতা পেয়েছি। এখানে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল একটা ওয়াশিং প্লান্ট।

কারণ, ভাইরাস আক্রান্ত রোগীর কাপড়-চোপড়, বিছানার চাদর হাতে ধোয়ার নিয়ম নেই। এজন্য একটা ওয়াশিং প্লান্ট বিদেশ থেকে আনার কথা ছিল।  

বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এটা আনতে দেরি হচ্ছিল। এজন্য আমরা সাতক্ষীরা থেকে একটা ওয়াশিং প্লান্ট এনেছি। এটা বৃহস্পতিবারের মধ্যে ইনস্টল করে ফেলব। আমাদের কাজ প্রায় শেষ। আশা করছি আগামী রবিবার মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেব যে, এটা ব্যাবহারের জন্য প্রস্তুত। এছাড়া এতবড় স্থাপনা করা হয়েছে, এখানে সবসময় কিছু না কিছু কাজ থাকবে। বিদ্যুতের সমস্যা হতে পারে, এসির সমস্যা হতে পারে। এজন্য চিকিৎসা চলা থাকাকালীন আমরা প্লাম্বার, ইলেক্ট্রিশিয়ান সব ধরণের লোক এখানে রাখব।  

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আইসিসিবি'র প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, আমরা আইসিসিবি'র সব স্থাপনা তাদেরকে আগেই বুঝিয়ে দিয়েছি। আমাদেরকে ৪ মে উদ্বোধনের তারিখ দেওয়া হয়েছিল। আমরা সেই হিসেবে প্রস্তুত ছিলাম। এখন নতুন তারিখের অপেক্ষায় আছি।

তথ্যানুযায়ী, হাসপাতালে মোট আইসোলেশন বেড হবে ২ হাজার ১৩টি। ট্রেড সেন্টারে ছয় ক্লাস্টারে ১ হাজার ৪৮৮টি বেড বসবে। এছাড়া তিনটি কনভেনশন হলে থাকবে আরও ৫২৫টি বেড। এর বাইরে ৪ নম্বর হলে হবে ৭১ বেডের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।

উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দিতে সরকারকে আইসিসিবিতে ৫ হাজার শয্যার একটি সমন্বিত অস্থায়ী হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিলে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল পরিদর্শন করে হাসপাতাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। নানা হিসাব-নিকাশ, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সেখানে ২ হাজার ১৩ শয্যার হাসপাতাল ও ৭১ শয্যার আইসিইউ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। আইসিসিবির সুবিশাল চারটি কনভেনশন হল ও একটি এক্সপো ট্রেড সেন্টারে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে সরকারের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর