বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হল ১১টি বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বানর
বানরের সাথে নিষ্ঠুরতা

বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হল ১১টি বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বানর

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর:

মাদারীপুর পৌরসভার চরমুগুরিয়া এলাকায় ১১টি বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বানরকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকেলে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, মাদারীপুর শহরের এই বানরগুলো শত বছর ধরে চরমুগরিয়া বন্দরের মানুষের পাশাপাশি বসবাস করে আসছে।

মঙ্গলবার বিকালে দুর্বৃত্তরা কয়েকটি বানরকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে বিষ খাইয়ে দেয়। এতে ১০টি বানর মারা গেছে।  

এছাড়াও একটি বানর অর্ধমৃত্য অবস্থায় পড়ে আছে। মৃত্যু ১০টি বানরকে স্থানীয়রা মাটি চাপা দিয়ে রেখে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, স্থানীয় একটি বেকারী কারখানার মালিক বিষ প্রয়োগ করে বানরগুলোকে মেরে ফেলেছে।  

তারা আরো জানান, খাদ্য সংকটের কারনে বানরগুলো বাসা বাড়িতে বিভিন্ন সময় হানা দিতো। তবে এ কারণে কেউ কখনও বানর মারেনি।  

স্থানীয় সূত্র জানায়, আড়িয়াল খাঁ নদীবেষ্টিত মাদারীপুরের চরমুগরিয়া অঞ্চল বনজ ও ফলদ গাছে পূর্ণ ছিল। মুক্তিযুদ্ধের আগে এ বনে ১০ হাজারের মতো বানর ছিল। তখন জঙ্গল ও শত শত গাছ থাকায় বানরগুলোর বিচারণ ছিল চরমুগরিয়ার এলাকাজুড়ে। জেলা বন বিভাগের তথ্য মতে, চরমুগরিয়ায় এখনও আড়াই হাজারের মতো বানর আছে।  

এ ব্যাপারে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রম পরিষদের আহবায়ক মাসুদ পারভেজ বলেন, এটা খুবই অমানবিক। বানরগুলো মাদারীপুরের ঐতিহ্য। শত বছর ধরে এই বানরগুলো মানুষের প্রতিবেশীর মতই বসবাস করে আসছে। কেউ কখন বানর মারেনি। কিছু অমানুষ এই বানরগুলোকে মেরে ফেলেছে। আমরা এর বিচার চাই।  

এ ব্যাপারে জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাপস কুমার গুপ্তকে একাধিক বার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক মো.ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, বানর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করার জন্য বনবিভাগকে বলেছি। আশা করছি রাতের মধ্যেই মামলা রুজু হবে এবং দায়ী ব্যক্তি/ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কারও কাছে এ বিষয়ে সঠিক তথ্য থাকলে আমাকে বা থানায় কিংবা বনবিভাগকে জানাতে পারেন। আমি জেলা প্রশাসক হিসাবে এ ঘৃণ্য ও নিষ্ঠুর  ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করছি এবং দায়ী ব্যক্তি/ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিচ্ছি।

উল্লেখ্য, বানরের জন্য মাদারীপুর সদর উপজেলার কুমার নদের তীরে নয়াচর এলাকায় ১৮ একর জায়গাজুড়ে ইকোপার্ক নির্মাণ করা হলেও বানরগুলো আজও সেখানে নেওয়া সম্ভব হয়নি।