প্রেমিকার কারণে বৃটিশ শীর্ষ বিজ্ঞানীর পদত্যাগ

প্রেমিকার কারণে বৃটিশ শীর্ষ বিজ্ঞানীর পদত্যাগ

যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি

করোনা ভাইরাস সংক্রমণে দেওয়া লকডাউনের মধ্যে বাসায় প্রেমিকাকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার দায়ে বৃটিশ সরকারের সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ (এসএজিই) থেকে পদত্যাগ করেছেন শীর্ষ একজন বিজ্ঞানী প্রফেসর নিল ফার্গুসন।

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের শীর্ষ স্থানীয় মহামারি বিশেষজ্ঞ নিল ফার্গুসন তার বিদায় বার্তায় লিখেছেন, তিনি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন স্কাই নিউজ।

এতে বলা হয়, দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা রিপোর্ট করেছে যে, নিল ফার্গুসন তার একজন বান্ধবী ও প্রেমিকা অ্যান্তোনিয়া স্ট্যাটসকে নিজের বাড়িতে প্রবেশ করতে দিয়েছেন।

এর মধ্য দিয়ে তিনি সরকারি নিয়ম ভঙ্গ করেছেন।

উল্লেখ্য, এসএজিই-এর একজন প্রভাবশালী সদস্য তিনি। বৃটিশ সরকার কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস মহামারি নিয়ে যেসব গাইড পলিসি দিচ্ছে তাতে সহায়তা করছেন তিনি। ফলে তার পদত্যাগ এসএজিই গ্রুপ এবং মন্ত্রীদের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ মার্চ প্রফেসর ফার্গুসনের জ্বর ও করোনা ভাইরাসের অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়।

নিল ফার্গুসন বলেছেন, আমি মেনে নিচ্ছি একটা ভুল করেছি এবং ভুল কাজ করেছি। তাই আমি এসএজিই থেকে আমাকে সরিয়ে নিয়েছি। এমন ধারণায় আমি এ কাজ করেছি যে, আমার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কাজ করেছে। আমার করোনা ভাইরাস পজিটিভ এসেছিল পরীক্ষায়। এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর প্রায় দুই সপ্তাহ নিজেকে পুরোপুরি আইসোলেট করে রেখেছিলাম। এই ভয়াবহ মহামারিকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নীতি মানতে পারিনি। এ জন্য আমি গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। সরকারের যেসব গাইডলাইন আছে তা স্পষ্ট এবং সেটা আমাদের সবাইকে রক্ষা করার জন্য।

এর আগে লকডাউনের ভেতরেই নিজের দ্বিতীয় বাড়িতে দুবার সফরে যান স্কটল্যান্ডের প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. ক্যাথেরিন ক্যাল্ডারউড। এ অভিযোগে তিনিও পদত্যাগ করেছেন। তার পদত্যাগের এক মাস পরে নিল ফার্গুসন পদত্যাগ করলেন।

উল্লেখ্য, এসএজিই দলে আছেন ৫০ জন সদস্য। তার মধ্যে প্রফেসর ফার্গুসন সবচেয়ে প্রভাবশালীদের অন্যতম হয়ে ওঠেন সরকারকে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে নিয়মিত কিছু ফিচারের ব্রিফিং করে। মধ্য মার্চে তিনি প্রথম সংবাদ শিরোনাম হন। ওই সময় ইম্পেরিয়াল কলেজের একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়। এর শীর্ষ লেখক তিনি।

ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, যদি বৃটেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে না পারে তাহলে আড়াই লাখ মানুষ মারা যেতে পারেন।

এরপর প্রায় ১৫ দিন আগে প্রফেসর ফার্গুসন বলেন, জীবন পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় যাবে না। একটি টীকা না আসা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা উচিত।

এরপর তিনি বলেছেন, যদি লকডাউন তুলে নেওয়া হয় তাহলে এ বছরেই বৃটেনে মারা যেতে পারেন এক লাখের বেশি মানুষ।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর