করোনা: প্লাস্টিক বর্জ্য বাড়ছে, স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা

করোনা: প্লাস্টিক বর্জ্য বাড়ছে, স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক

করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশে একবার ব্যবহার করা প্লাস্টিক বর্জ্যের পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা।

এনভায়রনমেন্ট এন্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো) নামের সংস্থাটি বলছে, ২৬শে মার্চ থেকে ২৫শে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে ১৪ হাজার ৫০০ টন স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ প্লাস্টিক বর্জ্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসব পণ্যের বেশিরভাগই হচ্ছে সার্জিক্যাল মাস্ক, পলিথিনের হ্যান্ড গ্লাভস, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, পলিথিন ব্যাগ এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার বোতল। খবর বিবিসির

এসব বর্জ্যের বড় অংশ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে, ৩ হাজার ৭৬ টন।

এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সার্জিক্যাল মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস সব কিছু বর্জ্যের সঙ্গে একত্রে মিশে যাচ্ছে। ফলে সেটা যেমন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হচ্ছে, সেই সঙ্গে যারা এসব বর্জ্য সংগ্রহ করছেন তাদের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছে। কিন্তু এই বিষয়ে কোন নজরদারি, নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তাদের কোনোরকম স্বাস্থ্য সতর্কতার ব্যাপার নেই।

‌‌‘একদিকে একবার ব্যবহৃার্য প্লাস্টিক বর্জ্য বেড়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি পরিছন্নতা কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। ’

ঢাকা নগরীতে কয়েক হাজার পরিছন্নতা কর্মী কাজ করেন। এসডো বলছে, এই পরিছন্নতা কর্মীরা আক্রান্ত হয়ে পড়লে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বড় একটি সংকট তৈরি হবে।

‘পরিবেশের কথা চিন্তা করলে, আমরা এসব বর্জ্য যেখানে সেখানে ফেলছি। একসময় সেটা আমাদের খাদ্য চক্রে মিশে যাচ্ছে। কারণ ক্ষতিকর রাসায়নিক গাছপালা শুষে নেয়, পরবর্তীতে যা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণী খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করে। ফলে এখনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এই পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবে। ’ বলছেন নির্বাহী পরিচালক সিদ্দিকা সুলতানা।

বেসরকারি এই সংস্থাটি বলছে, এসব বর্জ্যের ফলে অ্যাজমা, ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগে আগাম মৃত্যু, শ্বাসকষ্ট, মাথাব্যথা, ঝাপসা লাগা, চর্মরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের সমস্যা, ব্লাডপ্রেশার, শিশুদের স্বল্পবুদ্ধি হওয়ার মতো সমস্যার তৈরি হতে পারে।

এসডো তাদের গবেষণায় দেখতে পেয়েছে, এসব বর্জ্যের প্রায় ১২ দশমিক ৭ শতাংশ সার্জিক্যাল ফেসমাস্ক, ২৪ দশমিক ২ শতাংশ পলিথিনের তৈরি সাধারণ হ্যান্ড গ্লাভস, ২২ দশমিক ৬ শতাংশ সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস এবং ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য বহনের একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিনের বাজারের ব্যাগ।

এই পরিস্থিতি বদলাতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে এই বেসরকারি সংস্থাটি। তার মধ্যে রয়েছে:

১। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এমনভাবে করতে হবে যাতে সেটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হয়
২। মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ, পরিবহন বা ফেলার ক্ষেত্রে এমনভাবে করতে হবে যাতে দূষণ বা সংক্রমণ 
     না হয়
৩। পরিছন্নতা কর্মীদের নিরাপত্তায় সবরকমের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিশ্চিত করতে হবে
৪। জনসাধারণকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে সচেতন করতে হবে
৫। আইসোলেশনে থাকা ব্যক্তিদের ব্যবহার করা জিনিসপত্র দুইটা প্লাস্টিক ব্যাগের মধ্যে ভরে ফেলতে হবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর