জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ত্রাণ দুর্নীতির আভিযোগ মন্ত্রনালয়ে

জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ত্রাণ দুর্নীতির আভিযোগ মন্ত্রনালয়ে

অনলাইন ডেস্ক

রাজবাড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির আবদুল জব্বারের বিরুদ্ধে করোনা ত্রাণে দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে একটি  অভিযোগ জমা দিয়েছেন জেলা পরিষদের সদস্যবৃন্দ।

জেলা পরিষদের নির্বাচিত মোট ২০ জন সদস্যর মধ্যে ১৬ জন ওই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন। মন্ত্রনালয়ে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে করোনা ঘোষণার পর স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় প্রথম দফায় গত ২১ মার্চ,দ্বিতীয় দফায় ২ এপ্রিল জেলা পরিষদ বরাবর চিঠি দিয়ে করোনা সম্পর্কে সচেতনা বাড়াতে এলাকায় মাইকিং এবং মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণের নির্দেশ দেয়। তৃতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব ড.জুলিয়া মঈন স্বাক্ষরিত পত্রে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২৭ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়।

 

লিখিত অভিযোগে সদস্যরা জানিয়েছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মন্ত্রনালয় প্রেরিত তিনটি চিঠি গোপন করে , ত্রাণ সামগ্রী ক্রয়ের জন্য কোন কমিটি না করে এবং জেলা পরিষদের কোন সভা আহব্বান না করে প্রাপ্ত ওই ২৭ লাখ টাকা কোথায়, কি ভাবে ব্যয় করেছেন সে বিষয়ে কোন সদস্য অবগত নন। কাউকে জানানো হয়নি।  

এছাড়াও অভিযোগ করা হয়েছে চেয়ারম্যান সদস্যদের পাত্তা না দিয়ে স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিগত দিনেও জেলা পরিষদের সিংভাগ বরাদ্ধ দিয়েছেন তার ছেলের নাট্য প্রতিষ্ঠান, ভায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিএনপি সরকারের সাবেক মন্ত্রী জাহানারা বেগম প্রতিষ্ঠিত আহমেদ আলী কলেজে। এমনকি জেলা পরিষদের বিভিন্ন খাতে বরাদ্ধ দেখিয়ে তার নিজের এনজিও কেকেএস এর কর্মীদের সাহায্যের নামে মূলত তাদের বেতন পরিশোধ করেছেন।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফকির আবদুল জব্বার  বলেন,‘ হ্যাঁ তারা মন্ত্রনালয়ে দরখাস্ত করেছেন, অভিযোগ দিয়েছেন তা আমি জানি। তিনি বলেন,‘জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ দিতে হয়েছে বলে আমি ক্রয় কমিটি করিনি এবং সদস্যদের নিয়ে কোন মিটিংও  করিনি। ত্রাণ ক্রয় করা হয়েছে,পাংশা, কালুখালী ও বালিয়া কান্দিতে যারা জেলা পরিষদ সদস্য তারা কেউ ত্রাণ নিতে আসেনি।  

আগে মিটিং করিনি এটা সত্য তবে আগামী রোববার সভা আহ্বান করেছি। আমি কোন দুর্নীতি করিনি, ছেলে বা ভায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান দিয়েছি এটা সত্য নয়। ’

মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ দায়ের পত্রে স্বাক্ষরদাতা জেলা পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ও জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল হান্নান  বলেন,‘ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কোন সভা আহ্বান ছাড়াই সরকারি টাকায় ত্রাণ ক্রয় করেছেন একা একা, কোন ক্রয় কমিটিও করেননি। তিনি নিজের ইচ্ছেমত জেলা পরিষদের অর্থ খরচ করেন। আমাদের কিছু অবগত করেন না। একই  ধরনের কথা বলেন জেলা পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রাজবাড়ি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাশেদুল হক,‘তিনি বলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ব্যাক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ত্রান ক্রয়ের কোন কমিটি করেননি। এটা জেলা পরিষদ আইনের বরখেলাপ, এটা স্পষ্টতই দুর্নীতি। সে কারণে আমরা বিচারের জন্য মন্ত্রনালয়ে দরখাস্ত করেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সচিব হেলালুদ্দিন আহম্মদ বলেন,‘ আমরা এখন সুষ্ঠভাবে ত্রাণ বিতরণ নিয়ে ব্যস্ত,অভিযোগ এলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় কাউকে ছাড় দেয়নি।  

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল