ঠাকুরগাঁওয়ে ক্ষুধার জ্বালা আর ঋণের বোঝায় আত্মহত্যা

ঠাকুরগাঁওয়ে ক্ষুধার জ্বালা আর ঋণের বোঝায় আত্মহত্যা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় ক্ষুধা জ্বালায় ও ঋণের বোঝায় জর্জরিত হোটেল শ্রমিক পশরি উদ্দীন ওরফে কেনকেনু (৪৫) আত্মহত্যা করেছেন। রায়পুর ইউনিয়নে বুধবার ভোরে এই ঘটনা ঘটে। পশরি উদ্দীন ওরফে কেনকেনু ওই এলাকার দারাব উদ্দীন পানোয়ারের ছেলে।

পশরির স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে বাবুল জানান, ভীষণ লাজুক স্বভাবের মানুষ ছিলেন পশরি।

নেকমরদে থাকাকালে তোর কিছু টাকা ধার দেনা হয়। স্থানীয় বাজারে এক হোটেলে কাজ করতেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজ না থাকায় খাবার যোগাড় করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ক্ষুধার জ্বালা ও ঋণের কারণে শেষমেষ আত্মহত্যা করেন তিনি।

এক প্রতিবেশী জানান, মঙ্গলবার সকালে আভাবের তাড়নায় আমার কাছে ১০ টাকা চেয়ে নেন পশরি। বুধবার সকালে জানতে পারি সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল তার সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল কাজকর্ম না থাকায় ক্ষুধার জ্বালা ও অর্থের অভাবের তাড়নায় সে বেশ নাজুক।

স্থানীয় এক মিল ব্যবসায়ী জানান, করোনা ভাইরাসে কর্মহীন হওয়া পশরি ঋণে জর্জরিত হয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

এ বিষয়ে ৯নং রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম জানান, পশরি একজন হোটেল শ্রমিক। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় দৈনিক হাজিরা হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শারীরিক ও মানসিকভাবে সে অসুস্থ ছিল। খবর পেয়ে  প্রশাসনকে অবগত করলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। বুধবার রাতে লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়।

সচেতন মহল মনে করছেন, দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো কোভিড-১৯ মহামারীতে কর্মহীন ও বেকার হয়ে পড়েছে। বসে থেকে থেকে ঋণ করে ঋণের বোঝা আরও বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিজেদের মানসিক অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারাটাও দুরুহ হয়ে পড়েছে কর্মহীন অসহায় মানুষদের জন্য।

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল