মিনিয়াপলিস সিটির গান্ধী মহল রেস্টুরেন্ট জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা সকলেই অবহিত হয়েছেন গণমাধ্যমে রেস্টুরেন্টটির বাংলাদেশি মালিক রাহেল ইসলামের হৃদয়স্পর্শী বক্তব্য থেকে। তিনি রেস্টুরেন্ট পুড়ে ছাই হলেও আক্ষেপ কিংবা দুঃখ প্রকাশ না করে আন্দোলনের সাফল্য কামনা করেছেন। একই পরিস্থিতির অবতারণা হয়েছে ফিলাডেলফিয়া সিটিতেও।
রোববার এবং সোমবার দিন ও রাতে এই সিটির কয়েকশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের পর সমস্ত মালামাল লুট করা হয়েছে।
এরমধ্যে এক বাংলাদেশির দুটি স্বর্ণের দোকানসহ মোট ৩৫ দোকান লুটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ফিলাডেলফিয়ার ৪০৮৯, লেনক্যাস্টার এভিনিউর এবং ১১৩ ওয়েস্ট সেলটন এভিনিউতে অবস্থিত ‘মমি জুয়েলার্স এ্যান্ড পারফিউম ইনক’ নামক প্রতিষ্ঠানদুটির মালিক কামরুল ইসলাম জানান, রোববার রাতে কারফিউ চলাকালে তালাবদ্ধ দোকান ভেঙ্গে সবকিছু লুটে নেওয়া হয়েছে। দুই দোকানে কমপক্ষে ৬ লাখ ডলারের মালামাল ছিল বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন। দীর্ঘ ২৪ বছরের পুরনো দোকান দুটি ছিল তার পরিবারের একমাত্র অবলম্বন।
শুধু তাই নয়, নোয়াখালীর সেনবাগে টেকনিক্যাল ইন্সটিটিউট স্থাপন করেছেন এখানকার উপার্জিত অর্থেই।
সবকিছুই হুমকির মুখে পড়ল। মঙ্গলবার সকালে তিনি এ সংবাদদাতাকে জানান, সোমবার দিবাগত রাতে কারফিউ চলাকালে পুনরায় তার স্টোরসহ আশপাশের বহু স্টোর ভেঙ্গে লুটতরাজ হয়েছে।
গভীর রাতে এ সংবাদ পেয়ে অকুস্থলে যাবার চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু শতশত গাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকায় এবং লুটেরা কর্তৃক আক্রান্ত হবার শঙ্কায় তিনি সেদিকে পা বাড়াননি।
কামরুল জানালেন, আমি বিস্ময়ে হতবাক যে, কার্ফিউ চলছে, অথচ পুলিশ কিংবা ন্যাশনাল গার্ডের একটি গাড়ি অথবা টহল পুলিশ দেখিনি। গাড়িতে লুটতরাজকারিরা ঘোরাফেরা করছিল।
সেখানকার আপার ডারবি টাউনশিপের কাউন্সিলম্যান শেখ সিদ্দিক এ সংবাদদাতাকে জানান, কারফিউ চলাকালে সিটির বড় বড় কয়েকটি চেইনস্টোরসহ কয়েকশত দোকান পাটে ভাঙচুর ও লুটতরাজ হয়েছে। আমরা সবগুলো পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিপূরণ আদায়ের কৌশল উদ্ভাবনের জন্যে শীঘ্রই সিটি অব ফিলাডেলফিয়া এবং আপার ডারবি টাউনশিপের যৌথ সভা হবে।
শেখ সিদ্দিক জানান, সিটিতে কারফিউ অনির্দিষ্টকালের জন্যে বহাল থাকবে। থমথমে ভাব বিরাজ করছে। করোনা তাণ্ডবে বন্দি মানুষেরা আন্দোলনের আড়ালে লুটতরাজে লিপ্ত দুর্বৃত্তদের আচরণে ব্যথিত এবং ক্ষুব্ধ।
এদিকে, সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির মিডটাউনে মেসি এবং নাইকি স্টোর লুট করা হয়। মেডিসন এভিনিউতে বেশ কটি মূল্যবান পণ্য-সামগ্রির স্টোর লুটের ঘটনা ঘটেছে। নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কস, ব্রুকলীনেও ঘটেছে সোমবার রাতে। আগেরদিনও ম্যানহাটান ও ব্রুকলীনে বড় বড় কয়েকটি স্টোর লুট করা হয়েছে।
নিউইয়র্কের বাফেলোতেও লুটতরাজ হয়েছে ব্যাপকভাবে। ওয়াশিংটন মেট্র এলাকা, লাসভেগাসে গুলিবর্ষণের মধ্যদিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির পর দোকানপাটে অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর এবং লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে। লুটের আতঙ্কে অনেক সিটির ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার পাশাপাশি সশস্ত্র প্রহরা বসানো হয়েছে মালিকের পক্ষ থেকে।
করোনায় লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্তরা লুটেরা আতঙ্কে আরো বেশি লোকসানের সম্মুখীন বলে জানা গেছে।
ছবির ক্যাপশন-১ লুটিং(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)