করোনা প্রতিরোধের উপায় জানালেন ডা. সঞ্জয় ওক ও ডা. শশাঙ্ক জোশি

করোনা প্রতিরোধের উপায় জানালেন ডা. সঞ্জয় ওক ও ডা. শশাঙ্ক জোশি

অনলাইন ডেস্ক

ভারতের মহারাষ্ট্রের কভিড টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান বিখ্যাত সার্জন ডা. সঞ্জয় ওক এবং ভারতীয় কলেজ অব ফিজিশিয়ানের ডিন ডা. শশাঙ্ক জোশি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ, চিকিৎসা, করোনা প্রতিরোধ, হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা কোটি কোটি মানুষের করণীয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাদের সেই আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:

করোনা চিকিৎসায় করণীয় এবং বর্জনীয়

করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত রোগীর যদি উপসর্গ থাকে এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপ হয় তখনই কেবল হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত। করোনায় প্রাথমিক চিকিৎসা হলো প্রতিদিন ১০০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি সেবন, জিঙ্ক ৫০ মিলিগ্রাম, ট্যাবলেট হাইড্রোক্লোরোকুইন বিডি ৪০০ মিলিগ্রাম প্রথম দিনের জন্য, পরের চার দিন ৪০০ মিলিগ্রাম ওডি এবং অ্যাজিথ্রোমাইসিন ট্যাবলেট ৫০০ মিলিগ্রাম ৫ দিন।
যদি হাইড্রোক্লোরোকুইন ও অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার করা না যায় তাহলে ক্যাপসুল ডক্সি ৫ দিন এবং ট্যাবলেট Ivermectin ৩ দিন ব্যবহার করতে হবে।


করোনা রোগীদের একমাত্র চিকিৎসা হলো নাসাল ক্যানুলা (শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তির শরীরের অক্সিজেন কিংবা বাতাস সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য ব্যবহত যন্ত্র) অক্সিজেন। ভেন্টিলেটর করোনা রোগীর খুব একটা উপকারে আসে না, কারণ ভেন্টিলেটরে রাখা  ৮৮ ভাগ করোনা রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ৭ থেকে ১৪ তম দিনের মধ্যেই মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। অসুস্থতার ১০ দিন পর ভাইরাস কার্যকারিতা হারায়।
কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ হতে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

সন্দেহের বশেই করোনা রোগী হিসেবে চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া উচিত নয়। আগে পরীক্ষা করাতে হবে। ইসিজি ও বুকের এক্সরে নরমাল থাকলে করোনা পরীক্ষার ফলাফল না পাওয়া পর্যন্ত অ্যাজিথ্রোমাইসিন ও হাইড্রোক্লোরোকুইন ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্সরে ও HRCT-এর করোনা পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সংক্রমণ নির্ণয়ে অ্যান্টিবডি টেস্ট করা উচিত নয়। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে উপসর্গ থাকলেও তার থেকে অন্যের মধ্যে ভাইরাস ছড়ানোর শঙ্কা নেই। করোনা রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন এমন ব্যক্তিদের উপসর্গ না থাকলেও করোনা প্রতিরোধে চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাড়াতে

আগামী দুই বছর আমাদের করোনা সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হবে। ৫ থেকে ১০ শতাংশ মানুষের অবশ্যই ভাইরাস প্রতিরোধে অ্যান্টিবডি শক্তিশালী করা উচিত। হোম কোয়ারেন্টাইনে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বাড়াতে যা করবেন:
যথাসময়ে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, বাসায় বসে থাকায় শারীরিক পরিশ্রম কম হচ্ছে তাই তুলনামূলক কম খাবার খান, ভালোমানের প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন। প্রতিদিন গ্রহণ করুন ভিটামিন সি ৫০০ গ্রাম বিডি, জিঙ্ক ৫০ গ্রাম, ভিটামিন, দুই ফোঁটা নারিকেল তেল। দিনে  কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো। যোগ ব্যায়াম, প্রাণায়াম, শরীর চর্চা চালিয়ে যেতে হবে। তেল, মসলা যুক্ত খাবার, ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয়, আইসক্রিমসহ এমন খাবার এড়িয়ে চলুন যাতে আপনার কণ্ঠনালীতে সমস্যা হতে পারে। অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। প্রতিবার অ্যালকোহল পানে ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি ৬ গুণ বাড়িয়ে দেয়।  

করোনা থেকে সুরক্ষার উপায়

করোনা থেকে সুরক্ষায় স্যানিটাইজ করতে হবে, মাস্ক পরতে হবে (ঠাণ্ডা, সর্দি থাকলে ঘরেও মাস্ক পরতে হবে)। সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। হাল ছাড়া যাবে না, মনোবল শক্ত রাখতে হবে। ওভারস্মার্ট আচরণ পরিহার করতে হবে।  

সূত্র- বাংলাদেশ প্রতিদিন

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর