ডা. ফেরদৌস খন্দকার ‘ফ্রন্টলাইনার ছদ্মবেশে কালসাপ’

ডা. ফেরদৌস খন্দকার ‘ফ্রন্টলাইনার ছদ্মবেশে কালসাপ’

রিশাদ হাসান

বর্তমানে দেশ ও দেশের বাইরে বাংলাদেশিদের কাছে দারুণ এক নাম ডা. ফেরদৌস খন্দকার। আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশি এই চিকিৎসক করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে নিয়ে গেছেন ফ্রন্ট লাইনারের অবস্থানে। ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার সবখানেই ডা. ফেরদৌস খন্দকারের জয় জয়কার।

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের পর থেকেই দেশের মানুষের জন্য কাজ না করায় অনেকের প্রশ্নের সম্মুখীনও হয়েছেন তিনি।

তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে দেশে আসার খবর জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও। তবে কি দেশে এসে মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে যাচ্ছেন তিনি?

একটু পেছনের ফিরে তাকালেই তার উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে। ডা. ফেরদাউস খন্দকার লেখাপড়া করেছেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে। সেখানে লেখাপড়া চলাকালিন সময় সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন ছাত্রদলে।

তার মায়ের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বারে। সম্পর্কে খন্দকার মোস্তাকের ভাগ্নে তিনি। বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত এই চিকিৎসক ১৯৯৮ সালে আসেন আমেরিকায়। নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অনুশীলন শুরু করেন। মূলত একজন সুবিধাবাদী ডাক্তার হিসেবে পরিচিত ফেরদৌস।

তিনি ইউএসএ আওয়ামী লীগের অন্যতম উপদেষ্টা হিসাবে নিযুক্ত হতে ২০১৮ সালের আগস্টে তিনি  ২০ হাজার ডলারে অর্থ লেনদেন করেছিলেন সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে। এক মাস পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের চাপে সিদ্দিকুর রহমান তাকে নিয়োগ থেকে সরিয়ে দেন।

যদিও এর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানেই বিএনপির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত হতে না পেরে ২০১৯ সাল থেকেই বিভিন্ন উপায়ে দেশের আওয়ামী লীগে ভেড়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

সবশেষ রাস্তা হিসেবে ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ তার কাজটি আরও সহজ করে দেয়। ফ্রন্ট লাইনারের বেশে নিজের প্রচার প্রচারণা বাড়াতে থাকেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। মুহূর্তেই যা ভাইরাল হয়েছে দেশের সবার কাছে।

আশ্চর্য বিষয় হলো বিদেশে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন এমন তথ্য বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করেন। কিন্তু সেখানে থাকা প্রবাসীরা করোনার সংক্রমণে যখন দিশেহারা তখন ছুটে আসেননি বাঙ্গালীদের পাশে। উল্টো প্রবাসীরাই তার দুয়ারে গিয়ে ফেরত এসেছেন। যার ফলে প্রবাসীদের মৃত্যু মিছিল বেড়েছে। এমন বেশ কিছু ভুক্তোভোগী এরই মধ্যে তার এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, এর মধ্যে অনেকেই তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুকে ডা. ফেরদাউস সম্পর্কে পোস্ট করেছেন।

শুধু তাই নয়, তার সম্পর্কে আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিকদের ধারণাও খুব সুখকর নয়। তার দেশে আগমন সম্পর্কে আমেরিকা প্রবাসী বিশিস্ট সাংবাদিক দর্পন কবির তাকে ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন, আমেরিকায় কতজন বাংলাদেশিদের সেবা করেছেন? কতজনের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলে।

তবে এরপরেও তার নিরব ভূমিকা পালন এটাই বলছে যে, বিএনপি-জামায়াতের আমলে নিজের মূল পোষাক বদলে দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে ফ্রন্ট লাইনারদের মতো মহান যোদ্ধার ছদ্মবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগে জায়গা পাবার উদ্দেশ্যে আসা তো বটেই; সাথে ভার্চুয়াল মিডিয়ার বিশাল ভক্তদের আবেগকে পুঁজি করে নিজের দল ভারি করার জন্যই তার বাংলাদেশে আগমন।

লেখক: সাংবাদিক

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর