ঢাকার বাতাসে হঠাৎ ‘সুখবর’

ঢাকার বাতাসে হঠাৎ ‘সুখবর’

অনলাইন ডেস্ক

বিশ্ব কাঁপছে এখন করোনা আতঙ্কে। অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অদৃশ্য এই ভাইরাসটি ভাবিয়ে তুলেছে বিশ্বের গোটা চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের। দেশে দেশে মৃত্যুর সারি দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিদিন। বাড়ছে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা।

এ থেকে মন্ত্রী-এমপি, রাজা-মহারাজা, উজির-নাজির কিংবা নামিদামি তারকারাও রেহাই পাচ্ছেন না। করোনার এই করাল থাবা থেকে বাংলাদেশও মুক্ত নয়। ইতোমধ্যে দেশে আক্রান্ত ছাড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার। মৃত্যু ছাড়িয়েছে দেড় হাজার।

তবে লকডাউন, সীমিত পরিসরে যানচলাচল, অনেক কলকারখানা ও নির্মাণকাজ বন্ধ থাকার কারণে গত কয়েক মাসে ধারাবাহিকভাবে বিশ্বের বিভিন্ন শহরের বাতাসের মানের উন্নতি হয়েছে। এ তালিকায় আছে এশিয়া তথা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতি ও ব্যস্ততম শহর ঢাকার নামও।  

মঙ্গলবার (২৩ জুন) সকাল ৯টা ৫৮ মিনিটে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সে (একিউআই) জানিয়েছে, জনবহুল এই ঢাকার বাতাসের মান উন্নত হয়েছে। তবে এখনও পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর নয়।  

সেখানে বলা হয়েছে, দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় মঙ্গলবার সকালে সপ্তম খারাপ অবস্থানে আছে ২ কোটি মানুষের ব্যস্ততম এই ঢাকা শহরটি। বাতাসের মানের দিক থেকে ঢাকার স্কোর ৯৭। যা বাতাসের মানকে ‘সহনীয়’ হিসেবে চিহ্নিত করে।

একইদিন দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীষে থাকা তিন শহর আফগানিস্তানের কাবুল, চীনের বেইজিং ও পাকিস্তানের লাহোরে বাতাসে মানের স্কোর দেখানো হয়েছে যথাক্রমে ১৪০, ১৩৭ ও ১২৪।  

সাধারণত ৫১ থেকে  ১০০ স্কোরের মধ্যে বাতাসের মানকে সহনীয় বা গ্রহণযোগ্য বলে নির্দেশ করা হয়।  

প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোনও ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।

একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে সাধারণ নগরবাসী বিশেষ করে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ রোগীরা চরম স্বাস্থ্যঝুঁতে পড়ার আশঙ্কা থাকে।  

পরিবেশবিদরা বলছেন, চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে রাজধানী ঢাকা এখন অনেকাংশে ফাঁকা। নেই যানবাহনের চাপ, শিল্প ও কলকারখানা বন্ধ, নির্মাণ কাজ থেমে গেছে। এ কারণেই ঢাকার বাতাসের মান উন্নত হচ্ছে।  

সাধারণত ধুলোবালি বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ। এছাড়াও অপরিকল্পিত-অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণকাজ, মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযান ও শিল্পকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত ভারি ধাতু ধুলোর সঙ্গে যুক্ত হওয়া। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকার বাতাসে পাওয়া ধুলোয় সিসা, ক্যাডমিয়াম, দস্তা, ক্রোমিয়াম, নিকেল, আর্সেনিক, ম্যাঙ্গানিজ ও কপারের সর্বোচ্চ মাত্রায় উপস্থিতি পাওয়া যায়। এসব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা খুব সহজেই মানুষের ত্বকের সংস্পর্শে আসছে।

কোনও একটি শহরের একিউআই সূচকে ৫০ এর নিয়ে স্কোর থাকলে ওই শহরের বাতাসের মানকে ভালো বলা হয়। স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে বাতাসের মান গ্রহণযোগ বলে ধরে নেয়া হয়। কিন্তু একিউআই স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে শহরের বাতাসকে দূষিত ও অস্বাস্থ্যকর বলে চিহ্নিত করা হয়।  

আর একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। স্কোর  ৩০১ থেকে ৫০০ হলে বাতাসের মান সবচেয়ে খারাপ বলে ধরে নেয়া হয়।  

দেশজুড়ে যখন করোনা ভাইরাসের মহামারি চলছে ঠিক এমন সময়ে ঢাকার বাসাতে মানের উন্নতির খবর রাজধানীবাসীকে একটু হলেও স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ করে দেবে।  

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর