রংপুর রেডজোন চিহ্নিত, নেই লকডাউনের পদক্ষেপ

রংপুর রেডজোন চিহ্নিত, নেই লকডাউনের পদক্ষেপ

রেজাউল করিম মানিক, রংপুর

সম্প্রতি করোনা মহামারিতে রংপুর এখন করোনার হটস্পটে পরিণত হয়েছে। জেলায় প্রতিদিনেই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩১ জন কোভিট-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ও পাঁচজন পুলিশ সদস্য রয়েছে।

তিনি জানান, আক্রান্তদের সবাইকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত মারা গেছে ১৬ জন।

রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যাক্ষ ও পিসিআর ল্যাব প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরন্নবী লাইজু আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রেডজোন চিহ্নিত করা হলেও কোনো এলাকায়ই লকডাউনের কোনো পদক্ষেপই নেই।


রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কামরুজ্জামান জানিয়েছেনম কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ১ হাজার ১৪ জনের মধ্যে নগরীর সাড়ে আটশজন। আক্রান্তের মধ্যে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক নার্স স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা কর্মচারী। ইতোমধ্যে নগরীর ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হওয়ায় ব্যংকটি লকডাউন করা হয়েছে।

অপরদিকে নগরীর জাহাজ কোম্পানি মোড়ে অবস্থিত মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা কর্মচারীর নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ বলে প্রতিবেদন আসায় ব্যাংকটি ৯ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তিনি জানান, এখনও রংপুর নগরীর ১১ লাখ মানুষের জন্য নমুনা পরীক্ষার কোন বুথ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

অপরদিকে প্রতিদিন মাত্র ২০ জন নতুন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে অনেকেই নমুনা পরীক্ষার বাইরে রয়েছে।

এ ব্যাপারে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও পিসিআর ল্যাব প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরন্নবী লাইজু জানিয়েছেন, রংপুর মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা যায়। এ ল্যাবে রংপুর জেলা সিটি করপোরেশন ছাড়াও পার্শ্ববর্তী লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা জেলার করোনা পরীক্ষা করতে হচ্ছে। প্রতিদিনই অসংখ্য নমুনা এলেও তা পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না। তারপরেও দিন রাত কাজ করে নমুনা পরীক্ষা অব্যাহত রাখা হয়েছে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত রংপুরে মাত্র ৭ হাজার ৭৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে তাতেই আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে। হোম আইসোলেশনে আছেন ২৮৯ জন প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে আছে ১২২ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছে ৬৪৫ জন।

এদিকে রংপুর নগরী করোনার হটস্পটে পরিণত হলেও এখনও সিটি করপোরেশন এলাকায় রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত ওয়ার্ডগুলো লকডাউন করা হয়নি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন দফায় দফায় সভা করেও লকডাউন করার পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করোনা প্রতিরোধ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ ফকরুল ইসলাম বেঞ্চুর।

এদিকে করোনা সংক্রমণ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়লেও সামাজিক দূরত্ব মানার নামে চলছে প্রহসন মার্কেট ও নগরীতে অবাধে গাদাগাদি করে চলাচল করছে এবং মার্কেটিং করছে মানুষ। এ ব্যাপারে প্রশাসনের ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণে কোনো কাজ হচ্ছে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ওয়ার্ডভিত্তিক রেডজোন হিসেবে চিহ্নিত ওয়ার্ডগুলোতে জরুরিভিত্তিতে লকডাউন করা প্রয়োজন তা না হলে করোনা সংক্রমণ আরও
বাড়তে পারে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর