লালমনিরহাটে আবারো তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ২০ সেন্টটিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
শনিবার সকালে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৮০ মিটার। যা স্বাভাবিকের চেয়ে বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে।
চলতি বন্যায় তিস্তা নদীর এটাই সর্বোচ্চ পানি প্রবাহের রেকর্ড।এদিকে ধরলা নদীর পানি শিমূলবাড়ি পয়েন্টে এক রাতেই ৬৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে। শনিবার সকালে ৩০ দশমিক ৯৮ মিটার পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয়। যেখানে পানি বিপদসীমার ৩১ দশমিক ০৯ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্ধুর্ণা, গড্ডিমারী, ডাউয়াবাড়ি এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের ৫০ হাজারের অধিক মানুষ আবারও পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে এসব এলাকার চরাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানি উঠে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে বহু কাঁচা-পাকা সড়ক।
স্থানীয়রা জানান, গত ২৪ ঘণ্টার ভারি বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে গত সপ্তাহে তিস্তার ও ধরলার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। যা ক্রমে কমে গিয়ে বন্যার উন্নতি ঘটে। কিন্তু এক সাপ্তাহে না যেতেই ফের উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে তিস্তার পানি বেড়ে বিপদসীমার ৩৮ সেন্টিমিটার থেকে বর্তমানে ২০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ধরলা নদীর পানি বিপদসীমা ছুঁইছুঁই করছে।
এছাড়া তিস্তা-ধরলার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সৃষ্ট বন্যায় চরাঞ্চলের সবজি, বাদামসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা। অনেক মৎস খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। ফসলের ক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে ফসলহানীর শঙ্কায় চিন্তিত কৃষকরা। তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের পানিবন্দি পরিবারগুলো শিশু-বৃদ্ধ ও গবাদি পশুপাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।
নিউজ টোয়েন্টিফোর / সুরুজ আহমেদ