করোনায় সংক্রমিত হবেন কিনা, হলে কী করবেন, চাকরি থাকবে তো, ব্যবসা চলবে কিনা, করোনা কালে প্রতিনিয়তই মাথায় ঘুর পাক খাচ্ছে এসব চিন্তা। সাথে রাতের ঘুমও নষ্ট হচ্ছে। এতো চিন্তা করে সমাধান মিলবে না জানার পরও কিছুতেই কমছে না উদ্বেগ। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছে, ব্যায়াম বা মেডিটেশন করার জন্য।
তারা বলছেন, বেশি বেশি চিন্তা করলে অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।উদ্বেগের বিপদ এটাই যে, মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেন, তার যা হবে, সব খারাপই হবে। তাই পরামর্শ হচ্ছে খারাপের মাঝেও ভালো কিছু খুজে বের করেন। ভাল থাকার চেষ্টা করেন।
উদ্বেগে ভূমিকা রয়েছে খাবারেরও
ডিজঅর্ডারের পর্যায়ে পৌঁছে গেলে অনেক কিছু লাগে৷ সাইকো থেরাপি, বিশেষ করে কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি, ওষুধ৷ জীবনযাপনে পরিবর্তন আনতে হয়। শিখতে হয় রিল্যাক্স করা ও পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার নিয়ম৷
শুরুতে সতর্ক হলে যদিও সহজেই সমস্যা সমাধান সম্ভব। সচেতন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কথা বলে ও যোগা-মেডিটেশন-ব্যায়াম ইত্যাদি করতে পারলে মন হালকা হয়। উদ্বেগ কমাতে কিছু খাবারেরও ভূমিকা আছে৷
ডায়েট করতে কোন দিকে নজর রাখবেন
ভিটামিন ই- এর অভাব হলে উদ্বেগ ও মন খারাপ বাড়তে পারে। তাই ভিটামিন ই-এর অভাব মেটাতে নিয়মিত বাদাম খেতে পারেন।
গবেষণায় দেখা গেছে যাঁরা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড কম খান, তাঁদের মুড ডিজঅর্ডার বেশি হয়। কাজেই সপ্তাহে অন্তত দু-বার তৈলাক্ত মাছ খান৷ খান সয়াবিন, আখরোট, তিষির বীজ, শিয়া বীজ। কড লিভার অয়েলও খেতে পারেন৷
জার্নাল অফ আফেকটিভ ডিসঅর্ডারে প্রকাশিত প্রবন্ধে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন ভিটামিন ডি-এর অভাব হলে অবসাদের আশঙ্কা বাড়ে। কাজেই দিনে ২০-৩০ মিনিট গায়ে রোদ লাগানো জরুরি। তার পাশাপাশি খান তৈলাক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, মাশরুম, কড লিভার অয়েল। প্রয়োজনে সাপলিমেন্ট খেতে হতে পারে৷
ট্রিপ্টোফানের উপস্থিতিতে শরীরে সেরেটোনিন নামে মন ভাল করার হরমোন বেশি বেরোয়। ব্রেনের কার্যকারিতা বাড়িয়ে উদ্বেগ, অনিদ্রা কমাতে সে সিদ্ধহস্ত। কাজেই ডিম, চিকেন, চিজ, মাছ, চিনা বাদাম, কুমড়ো বীজ, তিল, দুধ, কলা ইত্যাদি খান মাত্রা রেখে। কলার পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রিল্যাক্স করতে সহায়তা করে।
দিনে ৪০ গ্রাম ডার্ক চকলেট খেলে ফ্ল্যাভেনয়েড, ট্রিপ্টোফান, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদির প্রভাবে মন ভাল থাকে। তবে তাতে কোকোয়ার পরিমাণ যেন ৭০ শতাংশের বেশি থাকে।
হলুদের কারকিউমিন প্রদাহের প্রবণতা কমায়। ফলে মনও শান্ত হয়। উপরি পাওনা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়া, যা এই মুহূর্তে খুবই দরকার।
চ্যামোলিন চা মন হালকা করে। এর জীবাণুনাশক গুণ আছে। আছে প্রদাহ কম রাখার ক্ষমতা। কাজেই করোনা ঠেকাতেও এর ভূমিকা আছে। এর স্বাদ-গন্ধ ভাল না লাগলে গ্রিন টি-ও খেতে পারেন। কাজ একই হবে।
ঘরোয়া টক দই বা দোকানের ইয়োগার্টে আছে উপকারি জীবাণু, ল্যাক্টোব্যাসিলাস ও বাইফিডোব্যাকটেরিয়া। এরা পেট যেমন ভাল রাখে, ব্রেনের সুস্থতার মূলেও এদের হাত আছে। প্রদাহ কমায় বলে মনও ভাল থাকে।
সূত্র: আনন্দবাজার
নিউজ টোয়েন্টিফোর / সুরুজ আহমেদ