এটি আমলা আর রাজনীতিকদের লড়াইয়ের বহিঃপ্রকাশ নয় তো!

এটি আমলা আর রাজনীতিকদের লড়াইয়ের বহিঃপ্রকাশ নয় তো!

শওগাত আলী সাগর

রিজেন্ট সাহেদের গ্রেপ্তারের খবরের চেয়েও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি আর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মধ্যকার ‘ব্লেইমগেইম’টা আমাকে বেশি ভাবাচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি যখন কোনো অপরাধের দায়ভাগ সরাসরি তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়ের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়-তখন এটি ভাবনার চিন্তার উদ্রেগ করে বৈকি। এটি কি নিতান্তই মন্ত্রণালয় আর অধিদপ্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতা? নাকি তার চেয়ে বেশি কিছু? এটি আমলা আর রাজনীতিকদের মধ্যকার ঠাণ্ডা লড়াইয়ের বহিঃপ্রকাশ নয় তো!

স্বাস্থ্যের ডিজির বক্তব্যের পর এ নিয়ে মিডিয়ায় সাক্ষাতকার দিয়ে কথা বলেছেন, রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনের সময় সেখানে উপস্থিত থাকা দুই সচিব। মিডিয়াকে দেয়া দুই সচিবের বক্তব্যে যতোটা না তাদের উপস্থিতির ব্যাখ্যা আছে, তার চেয়েও বেশি আছে স্বাস্থ্যের ডিজিকে সমর্থন দেয়ার চেষ্টা।

মন্ত্রীকে অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টাও তাদের বক্তব্যে আছে।  

স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘অধিদপ্তরে করোনা সংক্রান্ত বৈঠকের পর মন্ত্রীর অনুরোধেই ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। একই কথা বলেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকের পর মন্ত্রী আমাদের চা খাওয়ালেন।

এরপর বললেন, “আপনারা যেহেতু উপস্থিত আছেন, আপনারাও দাঁড়ান। ' দুই সচিবের বক্তব্যে মন্ত্রীর আগ্রহের ঈঙ্গিত আছে। কিন্তু স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন ভিন্ন কথা।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আর অধিদপ্তরের মধ্যকার ব্লেইমগেইমে গুরুত্বপূর্ণ দুই সচিব মন্ত্রীর দিকে আঙুল তুললেন কেন-এই ভাবনাটা মাথা থেকে সরানো যাচ্ছে না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজনীতির লোক, রাজনীতির লোকদের, রাজনীতিবিদদের খেলো করার কোনো তৎপরতা কোথাও শুরু হয়নি তো! জানি, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ‘সীমাহীন ব্যর্থতা’র কথাও অনেকে বলবেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্যর্থ হয়েছেন, নাকি তাকে ব্যর্থ করে দেয়া হয়েছে-সেই আলোচনার পক্ষের মানুষ আমি। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন জেলার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সচিবদের, তারা কতোটা সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, তার মূল্যায়নের প্রশ্ন বিভিন্ন জায়গায় উচ্চারিত হচ্ছে-এই তথ্যটা বিবেচনায় রেখেই আমি স্বাস্থ্যখাতের নিয়ন্ত্রকদের বিরোধটা দেখার চেষ্টা করছি।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

লেখক: প্রকাশক ও সম্পাদক, নতুন দেশ ডটকম।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর