হিরো আলম ও সেফুদাকে ক্ষমা করে দিলাম: অনন্ত জলিল

হিরো আলম ও সেফুদাকে ক্ষমা করে দিলাম: অনন্ত জলিল

অনলাইন ডেস্ক

প্রযোজক ও চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল বেশ কিছুদিন আগে ঘোষণা দিয়েছিলেন হিরো আলমকে নিয়ে একটি সিনেমা বানাবেন। সিনেমাটির জন্য হিরো আলমকে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকাও সাইনিং মানি হিসেবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ছবিটির কাজ শুরুর আগেই নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন অনন্ত জলিল। ছবিটি থেকে হিরো আলমকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়।

হিরো আলমকে সিনেমা থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আজ রোববার (১৯ জুলাই) অনন্ত জলিল নিজের ফেসবুক থেকে এক ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। সেখানে হিরো আলমকে কেন সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হলো তার ব্যাখ্যা করেন তিনি। এছাড়া বিতর্কিত প্রবাসী সেফাতুল্লাহ ওরফে সেফুদাকে নিয়েও কথা বলেছেন এই নায়ক।  

হিরো আলম প্রসঙ্গে অনন্ত জলিল বলেন, আমি সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখলাম হিরো আলম ও জায়েদ খানের কথোপকথন।

জায়েদ বলেছিলেন, ওই ছেলেটা মিউজিক ভিডিও করে সে আমাদের শিল্পী সমিতির সদস্য না। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে হিরো আলমও প্রতিবাদ জানায়। বিষয়টি দেখে, পরের দিনই জায়েদ খানকে ফোন করে অনেক রাগারাগি করি। আমি বলি, হিরো আলমকে তুমি এভাবে বলতে পারো না। হিরো আলম সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক পরিচিত।  
তিনি বলেন, কয়দিন পর আমার মিডিয়া ম্যানেজার আরাবিকে বলি, হিরো আলমকে ফোন কর আমি ওর সঙ্গে কথা বলব। আরাবি হিরো আলমের সঙ্গে আমার কনফারেন্স করে দেয়। আমি তাকে বলি, তোমাকে নিয়ে বেশ প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে আমি তোমাকে নিয়ে টকশো করব। সেখানে তোমার জন্য একটা সারপ্রাইজ থাকবে। কি সারপ্রাইজ ছিল সেটা আপনারা সবাই দেখেছেন।

সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া প্রসঙ্গে ভিডিও বার্তায় অনন্ত জলিল বলেন, আমি কেন হিরো আলমকে ছবি থেকে বাদ দিলাম। আপনার দেখেছেন, আমি হিরো আলম ও জায়েদ খানের সঙ্গে মিটমাট করে দিই। তাদেরকে আমি সোনারগাঁতে নিয়ে লাঞ্চ করাই। তারা আমাকে কমিটমেন্ট করে, এই বিষয়ে আমরা আর কথা বলব না। যেহেতু আপনি এটা মীমাংসা করে দিচ্ছেন।

অনন্ত জলিল বলেন, আজকে থেকে ২-৩ দিন আগে, সোশ্যাল মিডিয়াতে দেখি, হিরো আলম সেইম টপিক নিয়ে কথা বলছে। আমি এই বিষয়টি মেনে নিতে পারিনি। হিরো আলমের বোঝা উচিৎ ছিল যে, অনন্ত জলিল কে? অনন্ত জলিলের সমাজে কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমি আমার ব্যক্তি স্বার্থে তাদেরকে মিট করে দেইনি। তারা কেউই আমার আত্মীয় না। সবাই ভালোভাবে, এক সঙ্গে কাজ করবে এটাই কাম্য।

এই অভিনেতা আরো বলেন, বিষয়টি মিট করার পরও হিরো আলম এই বিষয়ে একটি ভিডিও বার্তা শেয়ার করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভিডিওর ক্যাপশনে সে লিখেছে, ‘অনন্ত জলিল আমাকে ইউজ করেছে’। হিরো আলম তুমি কি বুঝো ইউজ কাকে বলে? তোমার পাশে যদি কোনো এডুকেটেড পারসন থাকত তাহলে তোমাকে অক্ষরে অক্ষরে বুঝিয়ে দিতে পারত ইউজ করা কাকে বলে। তোমাকে যদি দিনের পর দিন ব্যক্তি স্বার্থে কাজে লাগিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয় এটাকে ইউজ করা বলে। যদিও হিরো আলমকে আমার কোনো কাজেই লাগবে না।

হিরো আলমকে নিয়ে অনন্ত জলিল বলেন, তোমাকে আমার অফিসে এনে আমার পাশে বসিয়ে লাঞ্চ করিয়েছি। আমার মেক-আপ আর্টিস্ট মনিরকে দিয়ে তোমার মেক-আপ করিয়েছি। মেক-আপ করার সময় আমি ২-৩ বার মনিরকে বলেছি, ওর মেক-আপ যেন ভালো লাগে, স্ক্রিন যেন ব্রাইট হয়। অনেক ভালো করে মেক-আপ করতে হবে। প্রত্যেকটা ইন্টারন্যাশনাল ব্র্যান্ডের পণ্য দিয়ে মেক-আপ করেছে। আমার পাশে বসিয়ে টক-শো করেছি। এই টক-শোতে তোমাকে যে সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা ছিল সেটা দিয়েছি। মুভি সাইন করেছি। সাইনিং মানিও দিয়েছি। এটাকে কি ইউজ করা বলে? তোমাকে সাইন করেছি এবং বাদ দিয়েছি এটাই বড় কথা। তার চেয়েও বড় কথা আমি তোমাকে ছবিতে নেয়ার জন্য চেহারায় গ্ল্যামার আনার জন্য তোমার ফেসে সিজি করেছি। তুমি তোমার আগের লুকের সঙ্গে এই গ্ল্যামার মেলাতে পারবে? তুমিও আমাকে ফোন করে বলেছ, ভাইয়া সবাই আমাকে ফোন করে বলছে আমাকে ভালো লাগছে।  

তিনি আরো বলেন, সোস্যাল মিডিয়াতে যখন তোমার একটা অসামাজিক ভিডিও দেখি তখন আমার ম্যানেজার আরাবিকে বলি, হিরো আলকে বলে দাও সে এখন বড় পর্দায় কাজ করতে যাচ্ছে। তার পেছনো এখন অনেকব শত্রু লাগবে। আগের মতো কথা বলা, চলা, আগে যদি কিছু করে থাকে সেগুলো থেকে ওকে সাবধানে চলতে বলো। এই কয়েকদিনের পরিচয়ে তোমাকে সুপরামর্শ দিয়েছি। তোমার ভিতরে যদি শিক্ষার আলো থাকতো তাহলে তুমি আমার কথাগুলো বুঝতে পারতে। তুমি ভিডিওতে যে কথাগুলো বলেছ সেগুলো সঠিক? না, সঠিক না? ভবিষৎতে শিক্ষিত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে ভিডিও দিবা, এতে তোমার উপকার হবে।  

এই ভিডিওতে সেফাতুল্লাহ ওরফে সেফুদাকে নিয়ে অনন্ত জলিল বলেন, এবার আসি তোমার বড় এক শুভাকাঙ্খী সেফুদাকে নিয়ে। তোমাকে ছবি থেকে বাদ দেয়া নিয়ে সে অনেকগুলো আপত্তিকর কথা বলেছে। কিন্তু যখন তোমাকে আমার ছবিতে নিয়েছি তখনতো প্রশংসা করে একটা ভিডিও বার্তা দিলো না? সেফুদাতো অনেক বড় লোক, কই তোমাকে নিয়ে তো একটা ছবিতে লগ্নি করলো না। একটি ভিডিওতে দেখলাম অন্য সবার মতো আমাকে নিয়েও আপত্তিকর কথা বলেছে। বাংলাদেশের সবাই জানে অনন্ত জলিল একজন দানবীর। আমি একজন সিআইপি। সেফু সাহেব আপনিতো সিআইপি অর্থ জানেন। আপনি আল্লাহর নিকট তওবা করেন, হে আল্লাহ আমি মানুষের সম্পর্কে না জেনে যে কথা বলেছি তার জন্য ক্ষমা করে দেন। আমিও আপনি এবং হিরো আলমকে ক্ষমা করে দিলাম।

নিউজ টোয়েন্টিফোর / সুরুজ আহমেদ