লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ, ক্ষুব্ধ কমিউনিটি ও ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা

লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ, ক্ষুব্ধ কমিউনিটি ও ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য

বিলেতে বসবাসকারী সিলেট অঞ্চলের প্রবাসীরা আর সরাসরি ফ্লাইটে দেশে যেতে পারবেন না। বন্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট।  

গত ১৬ জুলাই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্তটি তাৎক্ষণিভাবে কার্যকর হচ্ছে বলে বিমানের ইউকে ম্যানেজমেন্ট সূত্রে জানা গেছে।

ফলে ২৬ জুলাই, রবিবার লন্ডনের হিথরো থেকে যাওয়া প্রথম ফ্লাইট থেকে সরকারের এই সিদ্ধন্ত কার্যকর হচ্ছে এবং ওইদিন থেকে বিমান আর সরাসরি সিলেট যাবে না। বিমান বাংলাদেশের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ব্রিটিশ-বাংলাদেশি কমিউনিটি ও ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা।  

লন্ডন টু সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধের বিষয়টি প্রথম ২৪ জুলাই রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে প্রকাশ করেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল এবং হিলসাইড ট্রাভেলসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হেলাল খান।  

তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেন, “বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ) একটি নোটিশ দিয়ে আমাদের জানিয়েছে যে, এখন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যারা লন্ডন থেকে সিলেট যাবেন তারা ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বোর্ডিং পাস নিয়ে সিলেটে যাবেন।

কেউ কি ভাবতে পারেন কতটুকু জুলুম-নিপীড়নমূলক মানসিকতা থেকে বিমানের ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এ কাজটি করছেন? 

নিঃসন্দেহে এটি একটি চরম সিলেট বিদ্ধেষী আচরণ! একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নয়, সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের পূর্ব পুরুষদের রক্ত ঘামে গড়া দেশের মানুষের সাথে এই অমানবিকতার শেষ হোক। আসুন এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই এক সাথে। ”

লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক নবাব উদ্দিন বলেন, লন্ডন টু সিলেট সরাসরি ফ্লাইটের ব্যাপারে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু যখন চিকিৎসা করতে লন্ডন আসেন তখনকার হাইকমিশনারকে দিয়ে লন্ডন প্রবাসীদের আশ্বাস দেন। এরপর গত চার দশকে যারাই ক্ষমতার এসেছেন তারাই এ বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও এ বিষয়ে বার বার সচেষ্ট থাকার পরও এমন সিদ্ধান্ত কমিউনিটির জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।

বিষয়টি সম্পর্কে বিমানের ইউকেস্থ ম্যানেজার হারুন খানের সাথে যোগাযোগ করে লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট বন্ধের কারণ জানতে চাইলে তিন জানান, গত ১৬ জুলাই সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়েছে। কি কারণে এটা হয়েছে সেটা তিনি জানেন না। তবে এটা সরকারের সিদ্ধান্ত।  

তিনি আরো বলেন, এখন থেকে যারা লন্ডন থেকে সিলেট ও চট্টগ্রাম যাবেন তাদেরকে ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ এর কারণে বন্ধ রয়েছে লন্ডন টু সিলেট ফ্লাইট। করোনাকালেও লন্ডন থেকে কিছু ফ্লাইট সরাসরি ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গমন করছে। যাত্রীদের এতদিন শুধুমাত্র লন্ডন থেকে বোর্ডিং পাস নিলেই হত। কিন্তু যদি লন্ডন টু সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায় তবে সিলেটের যাত্রীদের ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বোর্ডিং পাস নিয়ে ডমেস্ট্রিক ফ্লাইটে সিলেটে যেতে হবে।

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল