শ্রীদেবীর মাথায় গভীর ক্ষতচিহ্ন!

শ্রীদেবী।-ফাইল ছবি

শ্রীদেবীর মাথায় গভীর ক্ষতচিহ্ন!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

বলিউডের নারী সুপারস্টার শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। যত সময় যাচ্ছে তত বেরিয়ে আসনে নতুন নতুন তথ্য। শ্রীদেবীর মাথায় নাকি পাওয়া গেছে গভীর ক্ষতচিহ্ন। আর এ নিয়ে নতুন করে সন্দেহ দানা বেঁধেছে।

খবর কলকাতা২৪।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে। শ্রীদেবী কোনোদিন মদ খেতেন না বলে জানিয়েছেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। একই মন্তব্য করেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অমর সিংও।

শ্রীদেবীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ও অমর সিং। তাদের দুজনেরই বক্তব্যে সন্দেহের তীর খুনের দিকেই।

এদিকে শ্রীদেবীর মাথায় ক্ষতচিহ্ন কোথা থেকে এলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিনেত্রীর মাথার পেছনে গভীর ক্ষত রয়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু কীভাবে হলো এই ক্ষত? পড়ে গিয়ে নাকি এর পেছনে লুকিয়ে রয়েছে অন্য ঘটনা? এমনই হাজার হাজার প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে অনেকের মনে।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টে কিন্তু পানিতে ডুবে মৃত্যুর কথাই লেখা হয়েছে। ময়নাতদন্তে মৃত শ্রীদেবীর পেটে অ্যালকোহল পাওয়া গেছে। প্রশ্ন এখানেই।

এদিকে শ্রীদেবীকে হত্যার পেছনে দাউদ ইব্রাহিমের হাত রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা ও প্রবীণ সাংবাদিক এস বালাকৃষ্ণণ গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, শ্রীদেবী মদ্যপান করতেন না। খেলেও মাঝেমধ্যে, তাও সেটা বিয়ার। শ্রীদেবীকে খুন করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এতে দাউদ ইব্রাহিমের হাত রয়েছে।

নিজের বক্তব্যের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে বিজেপির ওই নেতা বলেন, দুবাই পুলিশের তদন্তকারী দল হোটেলের ঘরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন না কেন?

শেষ খবর পাওয়া অবধি শ্রীদেবীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে তার স্বামী বনি কাপুরকে আজ মঙ্গলবারও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল।

এদিকে গত তিন দিন ধরে শ্রীদেবীর মৃত্যুর খবর একটু একটু করে প্রায় পুরোটাই উল্টে গেছে। প্রথমে জানা গিয়েছিল, ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে অভিনেত্রী শ্রীদেবীর। দুদিন পর সোমবার জানা যায়, হার্ট অ্যাটাক নয়, পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তার।

দুবাইয়ের সংবাদপত্র খালিজ টাইমস তাদের ওয়েবসাইটে শ্রীদেবীর ডেথ সার্টিফিকেটের ফটোকপির ছবি আপলোড করেছে। সেটা সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রাক্তন এক পুলিশকর্তা এই ফটোকপি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। ওই সার্টিফিকেটে ‘ড্রাউনিং’ বানান ভুল রয়েছে। ইংরেজি ও লেখার পরিবর্তে এ লেখা হয়েছে। তার মতে, এত বড় ভুল কোনও দপ্তর করবে বলে মনে হয় না। ডেথ সার্টিফিকেট এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তো মৃতের দেহের সঙ্গেই তার পরিবারের হাতে দেয় পুলিশ। এ ক্ষেত্রে দেহ হস্তান্তর হয়নি। কাজেই ওই সব নথি বাইরে আসারও কথা নয়।

প্রাক্তন পুলিশকর্তা প্রসূন মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘খবরে যা পড়ছি, তাতে দুবাই পুলিশ রীতিমতো তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনায় কোথাও অসঙ্গতি রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। ’’

ভারতের কয়েকজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার প্রশ্ন- দুর্ঘটনার সময় বনি কাপুর ঠিক কোথায় ছিলেন? এক একসময় এক একরকম জানা যাচ্ছে। কখনও শোনা যাচ্ছে, তিনি স্ত্রীকে ডিনারে নিয়ে যাবেন বলে ঘরে অপেক্ষা করছিলেন। অনেকক্ষণ ধরে স্ত্রী বেরোচ্ছেন না বলে তিনি নাকি দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন। তারপর তা ভেঙে গিয়ে ভেতরে ঢুকে দেখেন, বাথটাবে স্ত্রী শুয়ে আছেন, অচৈতন্য অবস্থায়। আবার কখনও বলা হচ্ছে, হোটেলের এক রুমসার্ভিস কর্মী পানি দিতে গিয়ে শ্রীদেবীর সাড়া না পেয়ে দরজা ধাক্কাধাক্কি করেন। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষ দরজা ভেঙে শ্রীদেবীর দেহ বাথটাব থেকে উদ্ধার করেন।

প্রশ্ন উঠছে, বনি কাপুরের ভূমিকা নিয়েও। দেশে ফিরে ফের কেন আবার দুবাই উড়ে গেলেন তিনি? স্ত্রীকে না জানিয়ে তিনি নাকি ‘সারপ্রাইজ’ দিতে চেয়েছিলেন। প্রাক্তন পুলিশ কর্তাদের প্রশ্ন, শ্রীদেবী কেন একা থেকে গেলেন দুবাইতে? কেন ওই দুদিন তাকে এক বারের জন্যও বাইরে দেখা গেল না? উত্তরগুলো তাদের কাছেও কেমন ধোঁয়াশামাখা।

শ্রীদেবীর রক্তে অ্যালকোহলের নমুনা মিলেছে। ধরা যাক, তিনি ওই সন্ধ্যায় মদ্যপান করেছিলেন। নিশ্চয়ই ওই দিনই জীবনে প্রথম বার মদ্যপান করেছিলেন এমনটা নয়। অচৈতন্য হয়ে যাওয়ার মতো পান করেছিলেন কি? যদি তাই করে থাকেন, তাহলে কেন সেটা করলেন? সে ক্ষেত্রে ওই অবস্থায় বাথরুমে গেলেন কীভাবে? আর বনি-ই বা তাকে ছাড়লেন কেন? জবাব মেলাতে পারছেন না প্রাক্তন পুলিশ কর্তাদের একাংশ।

সম্পর্কিত খবর