সমগ্র কাশ্মীরকে অন্তর্ভুক্ত করে দেশের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র প্রকাশ করেছে পাকিস্তান। ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত দেশটির সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে ইমরান খান সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ডন অনলাইন এই সংবাদটি প্রকাশ করেছেন।
শুধু সমগ্র কাশ্মীর নয়, গুজরাটের জুনাগড়কেও নতুন মানচিত্রে অন্তর্ভূক্ত করেছে পাকিস্তান।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন মানচিত্রের অনুমোদন শেষে ইমরান খান বলেন, ‘আজ পাকিস্তানের ইতিহাসে সবচেয়ে ঐতিহাসিক দিন। এই প্রথমবার ভারত অধিকৃত কাশ্মীরকে পাকিস্তানের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ’তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানের সব রাজনৈতিক দলের এতে সমর্থন রয়েছে। গত বছরের ৫ আগস্ট নেওয়া ভারত সরকারের অবৈধ দখলদারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এই মানচিত্র একটি প্রতিবাদ।
ইমরান খান এ সময় জানান, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবনার অধীনেই কেবল কাশ্মীর নিয়ে বিরোধের অবসান হতে পারে। জাতিসংঘ প্রস্তাবনায় কাশ্মীরি জনতাকে তারা কোন রাষ্ট্রে যোগ দিতে চায় সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। তিনি কাশ্মীর নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতির কথাও তুলে ধরেন।
ইমরান খান বলেন, ‘কাশ্মীরের জনতাকে দেওয়া বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি। আমরা স্পষ্ট করে বিশ্ব সম্প্রদায়কে বলতে চাই যে এটিই (কাশ্মীরি জনতা কোন রাষ্ট্রে যোগ দিতে চায় সে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা) একমাত্র সমাধান। সরকার এই বিষয়ে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। ’
নতুন মানচিত্র উন্মোচন করার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আর বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিকভাবে আমাদের এই লড়াই করব। কেননা আমরা সামরিক সমাধানে বিশ্বাস করি না। আমরা জাতিসংঘকে বারবার মনে করিয়ে দেব যে আপনারা (কাশ্মীরের জনগণের কাছে) যে প্রতিশ্রুতি করেছিলেন তা এখনও পূরণ করেননি। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুরেশি এ সময় জানান, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাভের পর অচিরেই নতুন মানচিত্রটি পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক মানচিত্রে পরিণত হবে। এরপর সেটি অন্তর্ভুক্ত করা হবে স্কুল-কলেজের পাঠ্য বইয়ে। নতুন মানচিত্র প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়ায় কুরেশি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রশংসা করেন।
সমগ্র কাশ্মীর ও গুজরাটের অংশবিশেষ নিজেদের এলাকা হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করে পাকিস্তানের নয়া মানচিত্র প্রকাশ নিয়ে ভারত এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাকিস্তানের এ পদক্ষেপকে মানচিত্রের মাধ্যমে আকাশকুসুম স্বপ্ন দেখা হিসেবে বর্ণনা করেছে বলে জানা গেছে।
নিউজ টোয়েন্টিফোর / সুরুজ আহমেদ