পুলিশের সহযোগিতায় হারানো মেয়েকে ফিরে পেলেন মা

পুলিশের সহযোগিতায় হারানো মেয়েকে ফিরে পেলেন মা

শফিকুল ইসলাম শামীম, রাজবাড়ী:

তিশা আক্তার নিঝুম। তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া-লেখা করে। মায়ের হাত ধরে ঢাকায় যাওয়ার পথে দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট এলাকায় হারিয়ে গেলেন। মা জান্নাত বেগম মেয়েকে হারিয়ে পাগলের মত উম্মাদ হয়ে গিয়েছিলেন।

মা দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ কন্টোল রুমে গিয়ে পুলিশের আশ্রয় নেন। পুলিশের সহযোগিতায় এক ঘণ্টার মধ্যে হারানো মেয়ে তিশা আক্তার নিঝুমকে ফিরে পেলেন মা।  

বৃহস্পতিবার সোয়া ১২টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে নামেন মা ও মেয়ে। গাড়ি থেকে নেমে লঞ্চ ঘাটের উদ্দ্যেশে পায়ে হেঁটে যেতে শুরু করেন তারা।

কিন্ত মাঝ রাস্তায় মাক্স ক্রয়ের জন্য একটি দোকানে দাঁড়িয়ে পড়েন। মেয়ে নিঝুম হাঁটতে থাকে। ৫মিনিটের ব্যবধানে মেয়ে তিশা চোখের আরাল হয়ে যায়। শুধু চোখের আরাল নয়। তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।  

এমন অবস্থা মা জান্নাত বেগম হাউ মাউ করে কাঁন্না শুরু করলেন। দোকানে দোকানে গিয়ে মেয়েকে খুঁজতে থাকেন। না, কোথাও খোঁজে পাচ্ছেন না। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে হতাশ হয়ে পরেন তিনি। নিরুপায় হয়ে এলোমেলো ঘুরতে থাকেন।
 
এমন সময় স্থানীয় লোকজন পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিলেন। মা জান্নাত বেগম আশা নিয়ে ছুটে যান পুলিশের কাছে। দৌলতদিয়া ট্রাফিক পুলিশ কন্টোল রুমে তখন বসে ছিলেন রাজবাড়ী এডিশনাল এসপি সালাউদ্দিন আহমদ। কাঁন্নারত অবস্থায় তাকে দেখে পুলিশ অফিসার তাকে বসতে দিয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলেন। তিনি পুলিশের কাছে সব কিছু খুলে বললেন। তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিলেন রাজবাড়ী এডিশনাল এসপি সালাউদ্দিন আহমদ। দৌলতদিয়া কর্মরত সকল আইন শৃংখলাবাহিনীর সদস্যদের ম্যাসেস দিলেন তিনি। সবাই মেয়েটিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে গেলেন।  

দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় ৮টি সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রন করে। সিসি ক্যামেরা সকল ফুটেজ দেখতে থাকেন এডিশনাল এসপি সালাউদ্দিন আহমদ। সিসি ক্যামেরার সহযোগিতায় মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে শিশু মেয়েটি খুঁজে পেলেন পুলিশ। ফিরে দিলেন মায়ের হাতে। পরবর্তীতে মা মেয়েকে পুলিশের সহযোগিতায় নবীনগর পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। খুঁজে পাওয়া মেয়েটি কে কিছু শুকনো খাবার দেন রাজবাড়ী এডিশনাল এসপি সালাউদ্দিন আহমদ।   

ফিরে পাওয়া মেয়ে তিশার মা জান্নাত বেগম জানান, সেঝ মেয়ের বাড়ি আলমডাঙ্গা বেড়াতে গিয়ে ছিলাম। সেখান থেকে নবীনগর বাইপাইল যাওয়ার উদ্দ্যেশে এসেছি। কিন্ত ঘাটে এসে আমার ভুলে মেয়েকে হারিয়ে ফেলি। কিন্ত রাজবাড়ী এডিশনাল এসপি সালাউদ্দিন আহমদ এর সহযোগিতায় মেয়েকে ফিরে পেয়েছি।  

রাজবাড়ী এডিশনাল এসপি সালাউদ্দিন আহমদ জানান, পুলিশের এটা দায়িত্ব। আমরা শুধু আন্তরিকতা দিয়ে পুলিশের দায়িত্ব পালন করেছি। তিনি আরও বলেন, কাজের মধ্যে আন্তরিকতা থাকলে যে কোন কাজে সফলতা পাওয়া যায়।  

উল্লেখ্য খুঁজে পাওয়া মেয়ের নাম তিশা আক্তার নিঝুম। বাবা মৃত্যু সাবদুল হোসেন। বাড়ী চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার সতেরো রশিয়া এলাকায়। জম্মের পর বাবাকে হারিয়ে মায়ের সাথে নবীনগর বাইপাইল এলাকায় বোনের বাড়িতে বসবাস করে।  

 

নিউজ টোয়েন্টিফোর/কামরুল