টিকা নিয়ে আলোচনা করতেই শ্রিংলার সফর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

টিকা নিয়ে আলোচনা করতেই শ্রিংলার সফর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশ কিভাবে পেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করতেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশে এসেছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।

বুধবার (১৯ আগস্ট) সকালে ১১টার দিকে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উদ্বোধন শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সফরের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা। বাংলাদেশ কিভাবে টিকা পেতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করতেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বাংলাদেশে এসেছেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বেশ কয়েকটি টিকা আলোচনায় থাকলেও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের টিকা ব্যাপারে অনেকের আগ্রহ রয়েছে। অক্সফোর্ডের এই টিকা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ভারতের পররাষ্ট্র সচিব মঙ্গলবার অনেকটা আকষ্মিকভাবে বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। এই সফর ‘হঠাৎ’ নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি জানিয়েছিলেন, বুধবার পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে টিকা নিয়ে আলোচনা হবে।

সিলেটে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ভারত আমাদের নিকট প্রতিবেশি। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তারাও রক্ত দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়, তাদেরও অনেক বড় বিজয়। তিনি বলেন, আগামী বছর আমরা স্বাধীনতার ৫০ বছরপূর্তি উৎসব করব। এই উৎসবে অনেকগুলো অনুষ্ঠান দুই দেশ মিলে করবে। এজন্য আলাপ-আলোচনা চলছে বলে জানান তিনি।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে আলোচ্য বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, প্রতিবেশি দেশ হিসেবে ভারতের সঙ্গে আমাদের অনেক কিছু আলোচনার আছে। কোভিডের কারণে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কড়াকড়ি করায় দুইদেশের অনেকগুলো পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছিল। পরে ট্রাকের পরিবর্তে ট্রেন ও জাহাজ দিয়ে পণ্য পরিবহন করা হয়েছে। ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকায় এসব সমস্যা সহজে দূর করা সম্ভব হয়েছে।

আবারও বিশ্বব্যাপী বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বাধ্য না হলে প্রবাসীদের দেশে না ফেরার আহবান জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, করোনার কারণে বিদেশে অনেক প্রবাসী সমস্যায় রয়েছেন। তবে আপদকালীন সময় চলে যাবে। তখন প্রবাসীদের অবস্থা এত খারাপ থাকবে না।  

তিনি বলেন, ভিসার মেয়াদ নিয়ে তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। বিনা খরচে ভিসা অটোমেটিক রিনিউ হবে।

দেশে আটকে পড়া প্রবাসীদের ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, করোনা সংকট কিছুটা কেটে যাওয়ায় প্রবাসীরা ফিরতে শুরু করেছেন। তবে কয়েকটি দেশ নতুন নতুন আইন জারি করে কিছুটা সমস্যা করছে। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার নতুন আইন করেছেন, শুধু ভিসার মেয়াদ থাকলেই প্রবাসীরা ফিরে যেতে পারবেন না। এজন্য কফিলের গ্রীণ সিগনালের প্রয়োজন হবে।

এই আইনের জন্য কিছু প্রবাসীকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ভিসার মেয়াদ থাকার পরও তারা সেদেশে ফিরে যেতে পারছেন না। এই সমস্যা সমাধান বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

করোনাকালীন পরিস্থিতির জন্য প্রায় পাঁচ মাস পর মঙ্গলবার রাতে বিমানে ঢাকা থেকে সিলেটে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন সকালে সকালে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধনের পাশাপাশি আরও কয়েকটি কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। দুপুরে নগরীর হযরত মানিকপীর (রহ.) মাজার গুরস্থানে তিনি সদ্যপ্রয়াত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের কবর জিয়ারত করেন। বিকেলে একাধিক কর্মসূচিতে যোগ দেবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নগরীর বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের অগ্রগতি সরজমিনে পরিদর্শন করেন। এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার মশিউর রহমান, জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান প্রমুখ।

নিউজ টোয়েন্টিফোর/নাজিম