ঘূর্ণিঝড় ‘ভাবী’র ভয়ে শঙ্কিত দক্ষিণ কোরিয়া

ঘূর্ণিঝড় ‘ভাবী’র ভয়ে শঙ্কিত দক্ষিণ কোরিয়া

অনলাইন ডেস্ক

এই বছরের অষ্টম ঘূর্ণিঝড় ‘ভাবী’ আগামীকাল বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার উপকূলে আঘাত হানার পূর্বাভাস রয়েছে। দেশটির জেজুদ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিম উপকূলে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার আবহাওয়া অধিদপ্তর কেএমএ।

আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য মতে, বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার রাতে টাইফুনটি জেজু ও জেওলা প্রদেশের পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে ঘণ্টায় ১৪৪-২১৬ কিলোমিটার বেগে পৌঁছাবে। কোরিয়ার দক্ষিণ ও পশ্চিম অঞ্চলে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮৪ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হতে পারে।

আগামী বৃহস্পতিবার সকালে দেগু সিটির প্রায় ৮০ কিলোমিটার পশ্চিম উত্তর পশ্চিমে এবং রাজধানী সিউলের আশপাশের শহরগুলোর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি আগামীকাল বুধবার বিকেলে রিসোর্ট উপদ্বীপের সবচেয়ে কাছাকাছি স্থানান্তরিত হওয়ার এবং বৃহস্পতিবার উত্তর ওরিয়াস্হ হোয়ানহে নামক প্রদেশে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ‘ভাবী’ পৌঁছানোর আগেই মঙ্গলবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত উপদ্বীপটিতে সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে কেএমএ।

এর আগে, গত শনিবার জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপ থেকে প্রায় ২১০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিমে তাইওয়ানের কাছে তাইপেই জলের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি বিকশিত হয়েছে।

উত্তর ভিয়েতনামের একটি পর্বতের নাম অনুসারে এই ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছে ‘ভাবী’।

কেএমএ জানিয়েছে, গত সোমবার বিকেল ৩ টার দিকে ১২ কিলোমিটার বেগে যাত্রা শুরু করে ভাবী। যার ঘণ্টায় কেন্দ্রের চাপ ছিল ৭৯৫ এইচপি। আর সর্বাধিক বাতাসের চাপ ঘণ্টায় ১১৫ কিলোমিটার রেকর্ড করা হয়েছিল।

জানা যায়, দক্ষিণ জেওলা প্রদেশের গেজেও দ্বীপের প্রায় একশ জন বাসিন্দা একটি যাত্রীবাহী নৌকায় করে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির কোস্টগার্ড কর্মীরা তাদের সুরক্ষা কার্যক্রম আরও শক্তিশালী করেছে। টাইফুনটি জেজু দ্বীপ এবং উপদ্বীপগুলোর কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে এর পথ এবং আকার পরিবর্তন করতে পারে। কেএমএ ঝড়ের উত্থানে এবং ঝড়ের পথে নিম্ন সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতিনিয়ত তীব্র বাতাসের সুরক্ষা সতর্কতা জারি করেছে।

এদিকে কোরিয়া সরকার এবং দুর্যোগ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভাবী থেকে দেশকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

দেশটিতে এবছরের চলমান গ্রীষ্মে প্রবল বৃষ্টিপাত, ভারী বর্ষণ ও বন্যার কারণে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। দেশব্যাপী ভবন, খামার জমি এবং বিভিন্ন অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।

সমস্ত রকম ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করার আহবান জানান দক্ষিণ কোরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এইচ ই আবিদা ইসলাম।

আবহাওয়া দপ্তরের উজিনকিউ বলেছেন, টাইফুনটি গতি বৃদ্ধি করে শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে এবং গতবারের ঘূর্ণিঝড় লিংলিং এর চেয়েও ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এতে রাস্তার বিভিন্ন স্হাপনাসহ মানুষ ও ঘর-বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর