রাঙামাটিতে চাঁদাবাজদের হুমকিতে হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ

রাঙামাটিতে চাঁদাবাজদের হুমকিতে হ্রদে মাছ শিকার বন্ধ

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

সম্প্রতি চাঁদার দাবিতে রাঙামাটি মৎস্য জীবীদের হুমকি দিয়েছে আঞ্চলিক সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। সে হুমকির ভয়ে আপাতত বন্ধ রয়েছে রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে মারাত্মক বিপাকে পড়েছে মৎস্যজীবীরা। তাই অনেকটা স্থবিরতা বিরাজ করছে ফিসারি ঘাট এলাকায়।

রাঙামাটি কাপ্তাই মৎস্য ব্যবসায় সমিতির নেতা মো. জসিম উদ্দিন জানান, স্থানীয় অঞ্চলিক সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ মৎস্য ব্যবসায়ীদের কাছে ৮ লাখ টাকার চাঁদা দাবি করে। যা দেওয়া সময় বেঁধে দেয় গত ২৬ আগস্ট পর্যন্ত। কিন্তু মৎস্য জীবীরা সঠিক সময়ে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের চাঁদা আদায় করতে পারেনি। যার কারণে তারা মোবাইলে ফোন করে জেলেদের কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করে।

একই সাথে হুমকিও দেয়।

শুধু তাই নয়, রাঙামাটিতে যে চারটি উপজাতিদের আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে প্রত্যেকে ২০ লাখ টাকা করে চাঁদার দাবি করেছে।

তিনি আরও বলেন, রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ ঘিরে প্রায় ২০ হাজার মৎস্য জীবী রয়েছে। যারা শুধু তারা কাপ্তাই হ্রদের মাছের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু দরিদ্র জনগোষ্ঠীদেরও ছাড় দেয় না সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তাদেরও চাঁদা দিয়ে চালাতে হয় জীবন আর
জীবিকা। একই অভিযোগ মৎস্য শ্রমিকদেরও।

মৎস্য শ্রমীক মো. আলাউদ্দিন, নাদির মিয়া, তোফাজ্জল, জয়নাল আবেদীন জানান, এখনো একমাস হয়নি রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণ শুরু হয়েছে। জমে উঠেনি ব্যবসাও। তার মধ্যে যদি সশস্ত্র সন্ত্রাসী চাঁদা দিতে হয় তাহলে কীভাবে গরিবের পেট চলবে। সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের ভয়ে জেলেরা আর মাছ ধরতে যাচ্ছে না। তাই মাছও আহরণ হচ্ছে না। তাই বেকার বসে আছে হাজারো শ্রমিক।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্র ব্যবস্থাপক লে. কর্ণেল মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, মৎস্যজীবীরা অভিযোগ করেছে আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি গ্রুপ বিরাট অংকের টাকা চাঁদা হিসেবে দাবি করেছে। কিন্তু এতো টাকা মৎস্য জীবীরা কোথা থেকে দেবে।

চাঁদা দিতে না পারায় সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হুমকি দিয়েছে। একই সাথে হ্রদে জেলেদের মাছ ধরতে নামতে মানা করেছে। তবে সেনাবাহিনীর সহায়তায় খুব দ্রুত রাঙামাটি কাপ্তাই হ্রদে আবারও মাছ ধরা শুরু হবে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর