ইউএনওর ওপর হামলার মামলা ডিবিতে, ২ আসামি ৭ দিনের 
রিমান্ডে

ইউএনওর ওপর হামলার মামলা ডিবিতে, ২ আসামি ৭ দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলা ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত তিন আসামির দুই জন নরিবুল ও সান্টুর ৭ দিনের করে রিমান্ডের আদেশ মঞ্জুর করেছেন আদালত।

দিনাজপুরের কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক ইসরাইল হোসেন জানান, শনিবার বিকেলে আটক দুই আসামি নবিরুল ইসলাম ও সান্টু কুমারকে আদালতের বিচারকের কাছে সোপর্দ করা হয়। মামলাটি প্রথম থেকে ঘোড়াঘাট থানার পরিদর্শক মোমিনুল ইসলাম তদন্ত করছিলেন।

পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসনের নির্দেশে মামলাটি থানা থেকে গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। দিনাজপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমাম জাফর মামলাটির তদন্তভার পেয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি ইমাম জাফর দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ডিবির ওসি ইমাম জাফর জানান, মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আমরা আসামিদের অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিচারকের নিকট ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন  করেছিলাম। বিচারক দুই আসামির প্রত্যেকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। মামলাটি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এছাড়াও মামলার প্রধান আসামি আসাদুল ইসলামকে এখনও আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হলে তারও বিরুদ্ধে রিমান্ড চাইবো আমরা।

শনিবার দুপুরে মামলাটি ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের কাছ থেকে নিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এর আগে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ঘোড়াঘাট থানার পরিদর্শক তদন্ত মমিনুল ইসলাম, আর এখন তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির ওসি ইমাম জাফর।

হামলার এ ঘটনায় আটককৃত প্রধান আসামি আসাদুল হককে শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রংপুর র‌্যাব-১৩ এর একটি টিম রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা আসাদুলকে নিয়ে এসে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।  

মামলাটির তদন্ত সংস্থা এখন ডিবি হওয়ায় থানা থেকে তাকে দিনাজপুর ডিবি কার্যালয়ে হস্তান্তর করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, রবিবার (৬ সেপ্টেম্বর) তাকে আদালতে উপস্থিত করে রিমান্ডের আবেদন করতে পারেন গেয়েন্দা পুলিশের তদন্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর।  

এদিকে, দুর্বৃত্তদের এই হামলা পরিকল্পিত আক্রমণ এবং হত্যাকাণ্ডের চেষ্টা বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং মন্ত্রীপরিষদ সচিব ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থা পরিদর্শন করতে এসে জানান-অবস্থার উন্নতি হয়েছে; আগের তুলনায় ভালো ।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমের সরকারি বাসভবনে ঢুকে হাতুড়ি পেটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় শনিবার বিকাল ৫ টায় আসামিদের আদালতে তোলা হয়। তবে, প্রধান আসামী আসাদুল অসুস্থ থাকায় তাকে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

এ মামলায় পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত ৭ দিনের জন্য তা মঞ্জুর করেন। এর আগে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামীদের দ্রুত শাস্তি দাবি জানায় বাংলাদেশ এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন।

এদিকে, জীবাণুর সংক্রমণ না ঘটলে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ইউএনও ওয়াহিদা খানম দ্রুত ভালো হয়ে উঠবেন বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।

ওয়াহিদার শারীরিক অবস্থা জানতে হাসপাতালে আসেন মন্ত্রীপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ভালো।

চুরির উদ্দেশ্যে হামলা বলে আসামিদের স্বীকারোক্তির পরও মামলার মূল রহস্য উদঘাটনে অধিকতর তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।


আরও পড়ুন:

 শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী নৌরুটে ড্রেজিং কার্যক্রমে অনিয়মের অভিযোগ


 

 নিউজ টোয়েন্টিফোর/নাজিম