অস্ত্র মামলায় পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে

অস্ত্র মামলায় পাপিয়া দম্পতির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ পর্যায়ে

অনলাইন ডেস্ক

যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতির বিরুদ্ধে করা অস্ত্র মামলায় আরও তিনজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ নিয়ে এ মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষ্য দিলেন।

সাক্ষীরা হলেন- জব্দ তালিকার সাক্ষী পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক জামাল ও জনৈক হাবিবুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন।

এরপর তাকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা। আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) দিন ধার্য করেন। তাদের সাক্ষ্যের আগে এ দিন মামলার জব্দ তালিকার সাক্ষী র্যাবের উপ-পরিদর্শক সাইফুল আলমকে জেরা করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী।

 ৮ সেপ্টেম্বর মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের শুনানির নতুন দিন ঠিক করা হয়েছে।

সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বলেন, ‘আজ রোববার এ মামলার তিনজন তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, আগামী শুনানির দিন মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম শেষ হতে পারে। ’ আজ যে তিনজন তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাঁরা হলেন- এসআই সুধাংশু সরকার, ডিবির পরিদর্শক সাইরুল ইসলাম ও র‍্যাব-১–এর এসআই আরিফুজ্জামান।

আরও পড়ুন: 


ছাত্রী হোস্টেলেও ‘পাপের আস্তানা’ গড়েছিলেন পাপিয়া!


গত ২৩ আগস্ট নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। সাক্ষ্য গ্রহণের আগে কারাগার থেকে আসামি শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমানকে আদালতে হাজির করা হয়।

চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি শামীমা নূর পাপিয়া ও তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় বিমানবন্দর থেকে র‌্যাব তাঁদের গ্রেপ্তার করে।

র‍্যাব-১-এর অধিনায়ক শাফিউল্লাহ বুলবুল তখন জানান, পাপিয়ার আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের কোনো মিল নেই। রাজধানীর একটি পাঁচতারা হোটেলে বুকিং দেওয়া বিলাসবহুল প্রেসিডেনসিয়াল স্যুট রুম এবং ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট থেকে বিদেশি একটি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, পিস্তলের ২০টি গুলি, ৫ বোতল দামি বিদেশি মদ ও ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, ৩টি চেক, কিছু বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা ও এটিএম কার্ড উদ্ধার করে র‌্যাব।

আরও পড়ুন:


‘এসকর্ট’ থেকেও সুন্দরীদের সংগ্রহ করতেন পাপিয়া


র‍্যাব আরও জানায়, পাপিয়া ও তাঁর স্বামীর মালিকানায় ইন্দিরা রোডে দুটি ফ্ল্যাট, নরসিংদীতে দুটি ফ্ল্যাট ও ২ কোটি টাকা দামের দুটি প্লট, তেজগাঁওয়ে এফডিসি ফটকের কাছে গাড়ির শোরুমে ১ কোটি টাকার বিনিয়োগ এবং নরসিংদী জেলায় ‘কেএমসি কার ওয়াশ অ্যান্ড অটো সলিউশন’ নামক প্রতিষ্ঠানে ৪০ লাখ টাকা বিনিয়োগ আছে। এ ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি, অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করা হয়। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অবৈধ পাঁচ কোটি টাকার খোঁজ পেয়ে পাপিয়া ও তাঁর সহযোগীদের মানি লন্ডারিং আইনে আরেকটি মামলা করে। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে। ধরা পড়ার পর পাপিয়াকে নরসিংদী যুব মহিলা লীগের কমিটি থেকে বহিষ্কার করা হয়। গ্রেপ্তার পাপিয়া ও তাঁর সহযোগীরা কারাগারে আছেন।

৫ কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৭৬১ টাকা অবৈধ আয়ের তথ্য পেয়ে সিআইডি ১১ মার্চ পাপিয়াসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে। মামলায় পাঁচতারা হোটেলে দেওয়া ৩ কোটি ২৩ লাখ ২৪ হাজার ৭৬১ টাকার বিল, ২০ লাখ টাকার বিনিয়োগ, ইন্দিরা রোডের ফ্ল্যাট এবং পাপিয়ার কাছ থেকে পাওয়া ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকার উল্লেখ করা হয়েছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)