পাহাড়ে মাল্টার সবুজ হাসি

পাহাড়ে মাল্টার সবুজ হাসি

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে এবছরও মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। গেলো বছরের তুলনায় ফলন এসেছে প্রায় দ্বিগুণ। পাহাড়ে উৎপাদিত এ মাল্টার রঙ সবুজ। দেখতে অনেকটা মিষ্টি লেবুর মতো।

কাঁচা আর পাকার মধ্যে বোঝা যায় না তেমন কোনো পার্থক্য।

এখন পাহাড়ের সব মাল্টা বাগানে এসেছে ফলন। গাছে গাছে ঝুলছে কাঁচা-পাকা মিষ্টি মাল্টা। দেখতে বেশ আকর্ষণীয়।

তবে খেতে মজাদার। পার্বত্যাঞ্চলে এ মাল্টা চাষ করে সাবলম্বী হয়েছেন এমন কৃষকের গল্প অনেক।

কৃষকরা বলছেন, পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া উপযুক্ত থাকায় এবার মাল্টা চাষে সফল হয়েছে তারা। কম খরচ, ব্যাপক ফলন। লাভও অধিক। কৃষকদের অর্থনৈতিক মানোন্নয়ন বিরাট ভূমিকা রাখছে পাহাড়ে উৎপাদিত এ সবুজ মাল্টা। এসব মাল্টা আবার পার্বত্যাঞ্চলের বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে দেশে-বিদেশে।

news24bd.tv

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলায় এবার মাল্টা আবাদ হয়েছে ২১০ হেক্টর জমিতে। আর উৎপাদন হয়েছে এক হাজার ৮২০ মেট্টিক টন। যা গেল বছরের তুলনায় দ্বিগুণ। পাহাড়ি এ মাল্টা এরই মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাই আবাদ হয়েছে রাঙামাটি সদর, বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, বরকল, জুরাছড়ি, কাপ্তাই ও নানিয়ারচর উপজেরায়। পাহাড়ি জুম্ম চাষীরা এখন মাল্টা চাষের বেশ আগ্রহী। পাহাড়ি মাটি উর্বর ও সঠিক পরিচর্যার কারণে সহজে বেড়ে উঠছে মাল্টা গাছ। তাছাড়া ফলনও হচ্ছে বাম্পার।

এ ব্যাপারে কথা হয় স্থানীয় মাল্টা চাষী বসুদেব চাকমার সাথে। তিনি বলেন, রাঙামাটি মগবান ইউনিয়নের ঝগড়াবিল এলাকায় তিন একর জমিতে সাড়ে ৫০০ সবুজ মাল্টা গাছ লাগান তিনি। এখন তার সব গাছে কাঁচা-পাকা সবুজ মাল্টায় ভরপুর। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরে বাজারজাত করা যাবে তার বাগানের এসব সবুজ মাল্টা। গেল তিন বছরের কষ্টের ফল বিক্রি করে সাবলম্বী হওয়ার আশা তার।

news24bd.tv

স্থানীয় কৃষি বিভাগ বলছে, পাহাড়ে উৎপাদিত এ মাল্টার নাম বারি মাল্টা-১। অন্যান্য মাল্টার রঙ দেখতে হলুদ হলেও পাহাড়ে উৎপাদিত মাল্টা দেখতে সবুজ। তবে খুব রসাল আর মিষ্টি। এসব মাল্টার চাহিদা অনেক। তাই সহজে বাজারজাত করা যায়। তাই পাহাড়ি জমিতে মাল্টা চাষ বাড়াতে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে মাল্টার চারা বিতরণ করে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক পবন কুমার চাকমা জানান, এখানকার মাটি ও আবহাওয়া যে কোনো চাষাবাদের জন্য উপযোগী। তাই সহজে কৃষকরা সফলতা পায়। তেমনি মাল্টা বাগান করে অনেক কৃষক এখন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল।

তিনি বলেন, পাহাড়ে জুম চাষের পরিবর্তে অনেক কৃষক এখন মাল্টা চাষ করছে। পাহাড়ে উৎপাদিত দেশীয় মাল্টার সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে স্থানীয় কৃষকরা।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)