আজানের জবাবের ফজিলত

আজানের জবাবের ফজিলত

অনলাইন ডেস্ক

ইসলামে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে আজান দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর এই  জবাব যে দিবে সে আল্লাহর কাছে প্রিয়। আজানের জবাব দেওয়াকে মহান আল্লাহ তায়ালা ওয়াজিব বা ফরজ করেননি, এটি মোস্তাহাব। নারী-পুরুষ সকলের জন্যই আজানের জবাব দেয়া মোস্তাহাব।

পাক-নাপাক যে অবস্থায় থাকুন না কেন এই মোস্তাহাব পালন করতে হবে।

আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (রহ.) আবদুল্লাহ ইবন আবদুর রহমান আনসারী মাযিনী (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবূ সায়ীদ খুদরী (রা.) তাকে বললেন, আমি দেখছি তুমি বকরি চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালোবাস। তাই তুমি যখন বকরি চরাতে থাক, বা বন-জঙ্গলে থাক এবং নামাজের জন্য আজান দাও, তখন উচ্চকন্ঠে আজান দাও। কেননা, জিন, ইনসান বা যেকোনো বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শুনবে, সে কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে।

আবূ সায়ীদ (রা.) বলেন, একথা আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) এর কাছে শুনেছি। (বুখারী শরীফ- ইসলামিক ফাউন্ডেশন: ৫৮২)

আজানের জবাব দেওয়ার পদ্ধতি:

(১) আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার 

জবাব: আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার 

(২) আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ 

জবাব: আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ

(৩) আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ

জবাব: আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ

(৪) হাইয়া আলাছ ছালা-হ 

জবাব: লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াত্তা ইল্লা বিল্লাহ

(৫) হাইয়া আলাছ ছালা-হ

জবাব: লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াত্তা ইল্লা বিল্লাহ

(৬) হাইয়া আলাল ফালা-হ 

জবাব: লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াত্তা ইল্লা বিল্লাহ

(৭) হাইয়া আলাল ফালা-হ 

জবাব: লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াত্তা ইল্লা বিল্লাহ

(৮) আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার

জবাব: আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার

(৯) লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ ---লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ

জবাব: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ ---লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হ

(১০) ফজরের আজানের সময় ‘হাইয়া ‘আলাল ফালা-হ’ এর জবাবে  ‘ছাদাক্বতা ওয়া বারারতা’ বলবে।  

আজানের জবাবের দোয়া:

আজানের জওয়াব দান শেষে প্রথমে দরূদ পড়বে। অত:পর আজানের দোয়া পড়বে।  

আজানের দোয়া: ‘আল্লাহুম্মা রব্বা হা-যিহিদ দা’ওয়াতিত তা-ম্মাহ ওয়াস্বলা-তির ক্ব-য়িমাহ, আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাজ্বীলাহ, ওয়াব’আছহু মাক্ব-মাম মাহ:মূদানিল্লাযী ওয়া’আত্তাহ। ইন্নাকা লা তুখলিফুল মিয়াদ।

অত:পর পর বলবে, ‘আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবদুহু ওয়া রাসূলুহু। রযীতু বিল্লা-হি রব্বা ওয়া বিমুহাম্মাদির রসূলা, ওয়া বিল ইসলামি দ্বীনা। ’

আজানের জবাবের ফজিলত:

আবদুল্লাহ ইবন ইউসুফ (র.) আবূ সায়ীদ খুদরী (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন তোমরা আজান শুনতে পাও তখন মুয়াজ্জিন যা বলে তোমরাও তার অনুরুপ বলবে। (সহীহ বুখারী শরীফ- ইসলামিক ফাউন্ডেশন: হাদিস/৫৮৪) 

ইবনুস (সারহ রহ.) আবদুল্লাহ ইবন আমর (রা) হতে বর্ণনা করেন যে, আব্দুল্লাহ ইবনে আমর বলেন, এক ব্যক্তি বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ ! মুয়াজ্জিনরা তো আমাদের ওপর ফজিলত প্রাপ্ত হচ্ছে (আমাদের চেয়ে বেশি সওয়াবের অধিকারী হচ্ছে)। আমরা কিভাবে তাদের সমান সওয়াব পাব? তিনি বলেন, মুয়াজ্জিনরা যেরুপ বলে, তুমিও তদ্রুপ বলবে। অত:পর যখন আজান শেষ করবে, তখন আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলে তুমিও তদ্রুপ সওয়ার প্রাপ্ত হবে। (সহীহ আবু দাউদ- ইসলামিক ফাউন্ডেশন: হাদিস/৫২৪) 

মুহাম্মাদ ইবনুল মুছান্না (রহ.) উমার ইবনুল খাত্তাব (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন মুয়াজ্জিন আজানের সময় আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার বলবে, তখন তোমরাও আল্লাহু আকবার বলবে। অত:পর মুয়াজ্জিন যখন আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে তখন তোমরাও আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে। অত:পর মুয়াজ্জিন যখন আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলবে তখন তোমরাও আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ বলবে। অত:পর মুয়াজ্জিন যখন ‘হাইয়া আলাস সালাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। অত:পর মুয়াজ্জিন যখন ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ বলবে তখন তোমরা বলবে  লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ। অত:পর মুয়াজ্জিন যখন আল্লাহু আকবার বলবে তখন তোমরা আল্লাহু আকবার বলবে, অত:পর মুয়াজ্জিন যখন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে, তখন তোমরাও লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে। তোমরা যদি আন্তারিকভাবে এরুপ বল তবে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে।   (সহীহ আবু দাউদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন: হাদিস/৫২৭)


আরও পড়ুন: সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত পাঠের ফজিলত


নিউজ টোয়েন্টিফোর/নাজিম

এই রকম আরও টপিক