পিরোজপুরের ভাসমান সবজি

পিরোজপুরের ভাসমান সবজি

ইমন চৌধুরী, পিরোজপুর

বাংলাদেশে সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বেশি জমিতে ভাসমান পদ্ধতিতে বিভিন্ন সবজি ও চারা উৎপাদন হয় পিরোজপুরের নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায়। আর এ পদ্ধতির চাষাবাদ শত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে। তবে দিন দিন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা আগের মতো লাভ করতে পারছেন না। এমনকি মিলছে না সম্ভাবনাময় এই কৃষিক্ষেত্রে কোনো সহযোগিতা।

ফলে অনেকটাই হতাশ এ এলাকার চাষীরা আর এই কৃষি শিল্পর উন্নতি করতে চাষীদেও প্রশিক্ষণের কথা বলছে জেলা কৃষি বিভাগ।

news24bd.tv

শত বছরের বেশি সময় ধরে পিরোজপুরের নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলায় ভাসমান পদ্ধতিতে উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন জাতের সবজি ও চারা। এই এলাকায় উৎপাদিত সবজি দেশের সিংহভাগ চাহিদা পূরণ করছে। আর এর মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে বিলাঞ্চলের কয়েক হাজার চাষীদের।

তবে দিন দিন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা আগের মতো আর লাভ করতে পারছেন। এমনকি ঐতিহ্যবাহী ও সম্ভাবনাময় চাষাবাদের এ ক্ষেত্রে তারা পাচ্ছে না কোনো সরকারি সহযোগিতাও।

news24bd.tv

ভৌগোলিকভাবেই পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দেউলবাড়ী-দোবড়া, কলারদোয়ানিয়া ও মালিখালী এবং নেছারাবাদ উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ এলাকা সারা বছর ৫-৮ ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ফলে সেখানে কোনো প্রকার চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না।

আরও পড়ুন: নবম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ

বেশকিছু স্থানীয়রা জানায়, এসব বিলাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপনা ও জলজ উদ্ভিদ জন্মে। আর এই কচুরিপনা দিয়ে বিশেষ পদ্ধতিতে চাষীরা তৈরি করেন ভাসমান বেড যা স্থানীয়ভাবে ধাপ নামে পরিচিত। এগুলো স্বাভাবিকভাবেই পানির উপর ভেসে থাকে। তই পানির স্তর বৃদ্ধি পেলেও, কৃষকদের কোনো ক্ষতি হয় না। এই ধাপের উপর অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ দিয়ে তারা উৎপাদন করেন সকল প্রকার সবজি ও চারা। তবে প্রতিনিয়ত এর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে উচ্চ মূল্য দিয়ে কৃষি উপকরণগুলো কিনতে হচ্ছে। পাশাপাশি জমি লিজ নেওয়ার জন্য মোটা অংকের টাকা দিতে হচ্ছে চাষীদের। আর এতে দিন দিন উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষীরা আগের মতো আর লাভ করতে পারছেন না।

news24bd.tv

নাজিরপুর কলারদোয়ানিয়া কৃষি উন্নয়ন ক্লাবের সংগঠক মো. আক্তারুজ্জামান জানান, ভাসমান সবজি চাষ বর্তমানে অনেকটা ব্যয়বহুল এবং এ চাষাবাদে মিলছে না কোনো সরকারি সহযোগিতা। ফলে বিভিন্ন ব্যক্তি ও এনজিও’র কাছ থেকে চড়া সুদে লোন নিয়ে কৃষকরা এই চাষাবাদ টিকিয়ে রাখছেন।

আরও পড়ুন: সীমান্তে মিলল যুবকের পাঁচ টুকরো করা লাশ

এদিকে স্থানীয় কৃষকদের, চাষিদের স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়ার।

আর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক চিন্ময় রায় বলেন, চাষীদের আয় বৃদ্ধি ও ভাসমান চাষ পদ্ধতির উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা করছে সরকার। ভালো প্রশিক্ষণ পেলে চাষীরা আরো লাভবান হবে।

news24bd.tv

এ পেশার সাথে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে জড়িত কমপক্ষে ১৫ হাজার চাষী। তাই এ পেশায় সংশ্লিষ্টদের রক্ষায় প্রয়োজনী সরকারি সহায়তা পাওয়া প্রত্যাশা স্থানীয় চাষীদের।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর