বুলগেরিয়ার রেডোব পর্বতের সহস্রাব্দ প্রাচীন নগরীতে

বুলগেরিয়ার রেডোব পর্বতের সহস্রাব্দ প্রাচীন নগরীতে

নাজমুন নাহার

পেছনে চমকপ্রদ রেডোপ পর্বতমালা। তার কোল ঘেঁষেই রয়েছে বিশ্বের অন্যতম অক্ষত প্রাচীন থিয়েটার, যেটি এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। ললিতকলার এই শিল্পে মিশে আছে কত না পুরনো সভ্যতার স্পর্শ। বুলগেরিয়ার এই নগরীতে পা পড়েছিল আমার।

বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীনতম শহরগুলোর একটি বুলগেরিয়ার এই প্লাভডিভ নগরী। যে নগরীতে খুঁজে পাওয়া যায় প্রাচীন প্রাণের স্পন্দন। হারিয়ে যাওয়া মানবসভ্যতার স্মৃতিস্তম্ভগুলো মিশে ছিলো এই শহরের কোনায় কোনায়।

news24bd.tv

প্রাচীন থ্রেসিয়ানরা কয়েক হাজার বছর আগে নিয়ন্ত্রণ করেছিলো এই নগরী।

তারপর রোমানরা এই বুলগেরিয়ান শহরে যে স্মৃতিস্তম্ভগুলোর ইতিহাসের সাক্ষী করে রেখেছিল আজও পরিব্রাজকের দৃষ্টি কাড়ে তার সবকিছু।

আরও পড়ুন: 


রং সোডা এবং ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি


শহরের অপূর্ব দৃশ্য আর এই নগরীর ডাউনটাউনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আসা বহু মানুষের আনাগোনা দেখতে দেখতে হাজার হাজার বছরের পুরানো ইতিহাসকে খুব আপন করে দেখেছিলাম। মহাকালের বিবর্তনে আমাদের এই জীবনও ধীরে ধীরে ইতিহাস হয়ে যাবে। এক ইতিহাসের মাঝে আমাদের বসবাস করতে হয়, আমরা যখন ইতিহাস হয়ে যাব তখন আমাদের ইতিহাসের মাঝে বসবাস করবে আগামী প্রজন্ম।

news24bd.tv

কালের বিবর্তনে জীবনের বিবর্তন পরিবর্তন এসেছে। ইতিহাস থেকে আমরা কত কি জানতে পারি। প্রাচীনকালের লোকেরা খাবার এবং আশ্রয়ের সন্ধানে এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণ করতো। আবার কখনো কঠোর জলবায়ু থেকে নিরাপদে থাকার জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ভ্রমণ করতো।

কৃষ্ণ সাগরের উপকূলে বুলগেরিয়ায় ৬ষ্ঠ সহস্রাব্দ খ্রিস্টাব্দে নিওলিথিক সভ্যতার নগরী প্লোভদিভে এভাবেই প্রাচীনতম মানববসতির বন্ধন গড়ে উঠেছিলো।

এভাবে সভ্যতার বন্ধন দেখতে দেখতে পৃথিবী আমাকে চমক দিয়েছিলো বারবার। পথের মাঝে মাঝে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম কত অজানা সভ্যতার নিদর্শন।

আরও পড়ুন: ‘নকল ও মানহীন গল্প’র কারণে চলচ্চিত্রের দুরাবস্থা

কখনো কখনো কোনো নগরীর সন্ধ্যাকালীন পর্বতের মোহমায়াময় দৃশ্য, কিংবা পর্বতের কোলে বেড়ে ওঠা পুরনো সভ্যতার প্রণয়ের অস্তিত্বে আমি খুঁজে পেয়েছিলাম একটুখানি সুখ। যে সুখের চমক এখনো আমার ন্যূনতম ক্লান্তিকে পরশ পাথরের মতো স্পর্শ করে দূর করে দেয়।

news24bd.tv

আমি জাগরনে, কিংবা রাতের স্বপ্নে দেখি আমার পেছনে ব্যাকপ্যাক, আর আমি পা ফেলছি মিটিমিটি হাসতে হাসতে অচেনা কোনো নগরীর রাস্তায়। আর সেই  নগরী সুরের মূর্ছনা আমাকে টেনে নিয়ে যায় বিহ্বল করে। আমি এখনো গভীরভাবে ভালোবাসতে পারি আমার দেখা এবং অদেখার পৃথিবীকে।  

লেখক: বাংলাদেশের পতাকাবাহী প্রথম বিশ্বজয়ী, ১৪০ দেশ ভ্রমণকারী ।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর