৯ বছরে ৯ বিয়ে, পুলিশের জালে ধরা সোলায়মান

৯ বছরে ৯ বিয়ে, পুলিশের জালে ধরা সোলায়মান

অনলাইন ডেস্ক

সোলায়মান। বয়স ২৯। বাড়ি বরগুনা জেলায়। পেশা গার্মেন্টস শ্রমিক।

১৭ বছর বয়সে জীবিকার সন্ধানে বরগুনা থেকে আসেন চট্টগ্রামে। কাজ নেন নগরীর একটি গার্মেন্টসে। ৮ হাজার টাকা বেতন। পেশায় শ্রমিক হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর মোবাইল ফোনে অল্প বয়সী মেয়েদের সাথে কথা বলে তাদেরকে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে করার এক অভিনব কায়দা রপ্ত করেন শ্রমিক সোলায়মান।
টার্গেট করেন গার্মেন্টসের নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির মেয়েদের।

বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের অফিসার হিসেবে বিভিন্ন মেয়েদের কাছে নিজেকে উপস্থাপন করেন। কখনো পুলিশ অফিসার, কখনো সেনা অফিসার, কখনো আবার নেভি অফিসার হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন। বিভিন্ন অফিসারদের ছবিতে নিজের মুখের অবয়ব মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে কাট পেস্ট করে প্রেমিকাদের কাছে পাঠাতেন। আর এতেই কুপোকাত প্রেমিকা এবং তাদের পরিবার। শুধু তাই নয় বিয়ে করার পরে স্ত্রীর ভাই-বোনদেরকে চাকরি দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ। স্ত্রীদের মাধ্যমে এনজিও থেকে লোন নিয়ে ওই অর্থ নিয়ে পালিয়ে গেছেন অন্যত্র। বেছে নিয়েছেন আরেকজনকে। অষ্টম স্ত্রী রাহেলার কাছ থেকে তার ভাই ও বোনকে চাকরি দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নিয়েছেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা এবং তার নামে এনজিও থেকে ঋণ তুলে হাতিয়ে নিয়েছেন এক লাখ টাকা। নবম স্ত্রীর রহিমার কাছ থেকে যৌতুক নিয়েছেন দুই লাখ টাকা। এভাবে একটি নয় দুটি নয় ২০ বছর থেকে ২৯ বছরের মধ্যে মাত্র ৯ বছরে ৯টি বিয়ে করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুনিপূণ কারিগর সোলায়মান অবশেষে ধরা পড়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (বন্দর) বিভাগ ও পাহাড়তলী থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে।

বিয়ে পাগলা সোলায়মানের বিরুদ্ধে উঠতি বয়সের মেয়েদেরকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিয়ে করা ও অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সংক্রান্ত একটি অভিযোগ মহানগর গোয়েন্দা (বন্দর) বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার এস এম মোস্তাইন হোসেনের হাতে আসলে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু হয়। ইতোমধ্যে রাঙ্গামাটির ১৫ বছর বয়স্কা নবম স্ত্রী রহিমা আক্তারের মা বাদী হয়ে পাহাড়তলী থানায় একটি মামলা করেছেন।

গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আবু বকর সিদ্দিক ও সহকারী পুলিশ কমিশনার গোলাম ছরোয়ারের নেতৃত্বে নগর গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিম ও পাহাড়তলী থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে শুক্রবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টায় পাহাড়তলী থানা এলাকার একটি বাসা থেকে বিয়ে পাগলা সোলায়মানকে গ্রেপ্তর করা হয় এবং উদ্ধার করা হয় ১৫ বছর বয়স্কা নবম স্ত্রী রহিমা আক্তারকে। সুলেমানকে গ্রেফতারের পর অন্যান্য স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা সবাই সুলায়মানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর