সাফারী পার্কে মারা যাওয়া প্রাণীকে ট্যাক্সিডার্মিতে রূপ

সাফারী পার্কে মারা যাওয়া প্রাণীকে ট্যাক্সিডার্মিতে রূপ

শেখ সফিউদ্দিন জিন্নাহ্, গাজীপুর

দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে রয়েছে হাজারো দেশি বিদেশি প্রাণীর মহামিলন। জীবিত প্রাণী দর্শনার্থীদের বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে থাকলেও মৃত প্রাণীও দর্শনার্থীদের সামনে তুলে ধরতে কাজ শুরু করেছে সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষ।

পার্কে বিভিন্নভাবে মারা যাওয়া প্রাণীকে ট্যাক্সিডার্মি পূর্বক সংরক্ষণ করে তাকে স্থান দেয়া হচ্ছে ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে। যেখান থেকে দর্শনার্থীরা এসব প্রাণির বিষয়ে শিক্ষালাভ করতে পারবেন।

news24bd.tv

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, বর্তমান সময়ে ট্যাক্সিডার্মি হলো শিল্প ও বিজ্ঞানের অনন্য সংমিশ্রণ যা বিলুপ্ত ও বিপন্ন প্রায় প্রাণীকুলের পরিচিতি ও তথ্য জানতে দর্শনার্থীদের সাহায্য করবে।

সাধারণত গবেষণা ও পাঠদানের উদ্দেশ্যে মৃত প্রাণীকে ট্যাক্সিডার্মি করা হয়। মৃতপ্রাণির শরীরকে (প্রধানত চামড়াকে) রাসায়নিক ও ট্যানিংয়ের মাধ্যমে সংরক্ষণের প্রক্রিয়া ও তাকে জীবন্তের ন্যায় দেখানোর উপায়কে ট্যাক্সিডার্মি বলা হয়।

news24bd.tv

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের হাজারো প্রাণীদের মধ্যে বিভিন্নভাবে প্রতিবছর বেশ কিছু প্রাণী মারা যায়।

এসব মারা যাওয়া প্রাণীকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর জন্য একজন ট্যাক্সিডার্মিষ্ট নিয়োগও দেয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত পার্কে ১৫টির অধিক প্রাণীর ট্যাক্সিডার্মি করা হয়েছে। এসব প্রাণির মধ্যে রয়েছে ময়ূর, বিদেশি হাঁস ও নানা প্রজাতির বিলুপ্ত ও বিপন্ন বন্য পাখি।

news24bd.tv

বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাক্সিডার্মিষ্ট পঙ্কজ চন্দ্র পাল জানান, মৃত প্রাণীগুলোর বিশেষ পদ্ধতিতে তার শরীরের বিভিন্ন পচনশীল অংশ সরিয়ে নেয়া হয়। পরে রাসায়নিক দিয়ে শুকিয়ে তাতে তুলা ও তার দিয়ে ঠিক জীবিত প্রাণির মতো অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হয়। একটি প্রাণী ট্যাক্সিডার্মি করতে ৪ থেকে ৫দিন সময় লাগে। নিখুঁতভাবে কাজ করতে অনেকটা শ্রম দিতে হয়।

তিনি আরো জানান, স্তণ্যপায়ী প্রাণী, পাখি, মাছ, সরিসৃপসহ অন্যান্য মেরুদন্ডী প্রাণীর উপর ট্যাক্সিডার্মি প্রয়োগ করা হয়। এছাড়াও বড় আকারের কীট পতঙ্গের উপরও ট্যাক্সিডার্মি প্রয়োগ করা হয়।


আরও পড়ুন: ৬ মাস পর খুলল আগ্রার তাজমহল


বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, অনেকেই শখের বশে পোষা প্রাণীসহ বিভিন্ন প্রাণীকে ট্যাক্সিডার্মি করে শোপিচ হিসেবে ব্যবহার করতে চান। বাংলাদেশ বন বিভাগ বিলুপ্ত ও বিপন্ন বন্যপ্রাণীর ট্যাক্সিডার্মি করে আসছে বেশ কয়েকবছর আগে থেকেই। এরই ধারাবাহিকতায় সাফারী পার্কে মৃত বিভিন্ন প্রাণীর ট্যাক্সিডার্মি করা হচ্ছে।

এসব প্রাণী পার্কের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে স্থান দিয়ে দর্শনার্থীদের প্রাণীর বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হয়। সর্বোপরী এটি একটি শিক্ষামূলক প্রক্রিয়া। সাফারী পার্ক প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম গড়ে তোলা হয়েছে। যেখানে বনবিভাগের বহু দেশি বিদেশি প্রাণীর ট্যাক্সিডার্মি রয়েছে। বর্তমানে পার্কের নিজস্বভাবে ট্যাক্সিডার্মি শুরু হওয়ায় এর পরিধি বৃদ্ধি পাবে।

news24bd.tv সুরুজ আহমেদ

সম্পর্কিত খবর