মাদারীপুরে দম্পতিকে থানায় আটকে রাতভর নির্যাতন

মাদারীপুরে দম্পতিকে থানায় আটকে রাতভর নির্যাতন

মাদারীপুর প্রতিনিধি 

মাদারীপুরের ডাসার থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) অভিজিতের বিরুদ্ধে নববিবাহিত দম্পতিকে থানায় আটকে রেখে টাকার জন্য নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।  

স্থানীয় ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার মনির খানের ছেলে রিপন খানের সঙ্গে মুন্সিগঞ্জের সাহাবদ্দিন আহমেদের মেয়ে শশী আক্তার সম্প্রতি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। গতকাল সকালে ডাসার থানার পশ্চিম বনগ্রামের আত্মীয় হনুফা সন্নামতের বাড়িতে বেড়াতে আসে নবদম্পতি। পরে ডাসার থানার এএসআই অভিজিত বুধবার বেলা ১২টার দিকে রিপন ও শশী দম্পতিকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এসময় রিপন ও শশীর কাছে এক লক্ষ টাকা দাবী করে এএসআই অভিজিত। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় শারীরিক নির্যাতন চালায় পুলিশের ওই কর্মকর্তা।  

এদিকে, একদিন অতিবাহিত হলেও আটকের বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। কোন আসামি আটকের পরপরই জেলা পুলিশকে অবহিত করার নিয়ম থাকলেও তাও মানা হয়নি।

বিধান মোতাবেকর আটকের ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে চালান দেয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এতে করে আইনের চমর লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবী মানবাধিকার কর্মীদের। আজ দুপুরে বিষয় স্থানীয়দের মাঝে জানাজানি হলে শশী আক্তারকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে টাকা না পাওয়ার কারণে রিপনকে ছাড়া হয়নি।

রিপনের বাবা মনির খান বলেন, ‘আমার ছেলে প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরেই বিয়ে করেছে। প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েরা বিয়ে করা তো অপরাধ নয়। মেয়ের বাবাও তো আমার ছেলের নামে কোন মামলা করেনি। ডাসার থানা পুলিশ এখন আমার ছেলেকে ছেড়ে দিতে এক লক্ষ টাকা দাবী করেছে। আমরা গরীব মানুষ এতো টাকা কোথায় পাবো? অপরাধ করলে পুলিশ কোর্ট চালান দিয়ে দিবে তা না করে থানায় আটকে রাখা হয়েছে। ’

আইনজীবি এবং মানবাধীকার কর্মী অ্যাডভোকেট আবুল হাসান সোহেল বলেন, ‘কাউকে কোন অপরাধে আটক করলে আটকের ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে চালান দেয়ার বিধান রয়েছে। এছাড়া বিনা অপরাধে কাউকে আটকে রাখা একধরনের শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ’

এ ব্যপারে এসআই অভিজিত টাকা দাবীর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি নির্যাতন করিনি। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে তাহলে আমার বিচার হবে। ডাসার থানার ওসি এমদাদুল হক বলেন, ‘মেয়েকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ছেলের অভিবাবকরা আসলে তাকেও ছেড়ে দেয়া হবে। ’ টাকা দাবী এবং শারিরিক নির্যাতনের বিষয়টি তিনিও অস্বীকার করেন। ’

মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) উত্তম প্রসাদ পাঠক বলেন, ‘আটকের বিষয়টি থানা থেকে আমাদের অবহিত করা হয়নি। তবে আটকের পরেই আমাদের অবহিত করার নিয়ম রয়েছে এবং কোন অপরাধের সংশ্লিষ্টতা পেলে আটকের ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোর্টে চালান দেয়ার বিধান রয়েছে। দু’একজন অসৎ কর্মকর্তার কারণে পুরো পুলিশ তাদের অপরাধের দায়ভার গ্রহণ করবেনা। ’

সম্পর্কিত খবর